ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নিবন্ধন ২৮ জানুয়ারি শুরু

প্রকাশিত: ২১:৫৭, ১৬ জানুয়ারি ২০২২

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নিবন্ধন ২৮ জানুয়ারি শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আগামী ২৮ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া। শনিবার দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানান ঘোষণা দিয়েছেন, অনলাইনে এ আবেদন করতে হবে। মালয়েশিয়ার সরকার বিদেশী কর্মী নিয়োগে অনলাইন আবেদনের এ তারিখ ঘোষণার সময় জানিয়েছে, প্রথম দফা শুধু প্ল্যানটেশন খাতে আবেদন করতে হবে। এছাড়া বৃক্ষরোপণ খাতসহ অন্যান্য খাতে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বিদেশী কর্মী নিয়োগে নিয়োগকর্তারা একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। এ বিষয়ে গত ১০ জানুয়ারি সারাভানান নিয়োগকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, যারা বিদেশী কর্মী নিয়োগ করতে চান- তারা প্রকৃত প্রয়োজনের ভিত্তিতে আবেদন জমা দিতে পারবেন। নিয়োগকর্তাদের আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে এবং প্রতারকদের প্রতারণা এড়াতে মধ্যস্থতাকারী বা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে কোন অর্থ লেনদেন বন্ধ করতে হবে। মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে অনলাইন আবেদনের তারিখ ঘোষণার ক্ষেত্রে মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানানের ১৫ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত এক নোটিসে বলা হয়েছে, দেশটিতে বৃক্ষরোপণ খাতে শ্রমিক ঘাটতি কমাতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৩২ হাজার বিদেশী শ্রমিক আনার জন্য সরকার বিশেষ অনুমোদন দিয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে বৃক্ষরোপণ খাত ছাড়া অন্য সব সেক্টরে বিদেশী কর্মী নিয়োগের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে অনুমোদিত খাতগুলো হলো- কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি এবং খনন, নির্মাণ এবং গৃহকর্মী। এদিকে, মানবসম্পদমন্ত্রী, নিয়োগকর্তাদের সরকার থেকে নির্ধারিত বিদেশী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) মেনে চলার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। এসওপি চারটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। যথা- প্রি-রিলিজ, আগমনের পর, আগমনের পরে (সঙ্গনিরোধ) এবং পোস্ট-কোয়ারেন্টাইন। সব বিদেশী কর্মীকে সাত দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে, যার মধ্যে তাদের কোভিড-১৯ এর জন্য দুবার স্ক্রিন করা হবে এবং নিয়োগকর্তাদের খরচ বহন করতে হবে। এছাড়া বর্তমানে সব কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র, পাশাপাশি কোয়ারেন্টাইনের নির্ধারিত হোটেলগুলো ক্লাং উপত্যকায় ছিল এবং তারা একবারে ১০ হাজার লোককে সেবা দিতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের সুবিধা দিতে আগ্রহীদের স্বাগত জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। উল্লেখ্য, দীর্ঘ তিন বছর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ থাকার পর গত ১০ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার একটি বৈঠকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এতে সব ধরনের কাজেই বাংলাদেশী শ্রমিকের নিয়োগে সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৃক্ষরোপণ, কৃষি, যন্ত্রাংশ উৎপাদন ও সারাই, খনিতে খনন, ভবন নির্মাণে দক্ষদের পাশাপাশি গৃহকর্মীও নেবে মালয়েশিয়া। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে পাঁচ বছর আলোচনার পর ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে চুক্ত করে মালয়ে। তবে বহুল আলোজিটুপ্লাস নামের চুক্ত একদন পরেই স্থকরে মালয়েশিয়া। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে ২০১৭ সালের শুরুতে মালয়েকর্মী পাঠানো শুরু হয়। দুই বছরে প্রায় পৌনে দুই লাখ কর্মী যায় দেশতে। মাত্র ১০টি রিক্রুএজেন্স কর্মী পাঠানোর কাজ পাওয়ায় দেশ বিদেশে বড় কেলেঙ্কারির জন্ম দেয়। দুদেশের ক্ষমতাবানদের সিন্ডিকেটে হাজার হাজার কোটি টাকার সিন্ডিকেট বাণিজ্য হয়। তখন বলা হয়েছিল জিটুপ্লাসে পাঁচ হাজার কোটাকার বেদুর্নীহয়েছে। এ অযোগে মাহাথর মুহাম্মদ ক্ষমতায় ফিরে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেন। এরপর অনেকবার আলোচনা এবং কয়েক দফা ঘোষণা দিয়েও খুলেমালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। সবশেষে গত মাসে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় আবারও শ্রমিক পাঠানোর বন্ধ দুয়াার খুলে যায়।
×