ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মাধবপুরে বৈকন্ঠপুর চা বাগান ৩৮ দিন ধরে বন্ধ ॥ শ্রমিক পরিবারে খাদ্য সংকট

প্রকাশিত: ১৭:৪৭, ১৫ জানুয়ারি ২০২২

মাধবপুরে বৈকন্ঠপুর চা বাগান ৩৮ দিন ধরে বন্ধ ॥ শ্রমিক পরিবারে খাদ্য সংকট

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাধবপুর ॥ মাধবপুরে ৩৮ দিন ধরে বন্ধ থাকা বৈকন্ঠপুর চা বাগানে কর্মহীন চা শ্রমিক পরিবারের মধ্যে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বাগানের অনুমতি ছাড়া দিলীপ কেউট নামে এক শ্রমিকের ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধে বাগান ব্যবস্থাপককে প্রকাশ্যে মারপিটের ঘটনায় বাগান কর্তৃপক্ষ বাগান বন্ধ ঘোষনা করেন। এ ঘোষনায় চা বাগানের চাপাতা উত্তোলন সহ কল কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। বেকার হয়ে পড়ে ৪শ অধিক নিয়মিত শ্রমিক । সমস্যা সমাধানের জন্য মাধবপুর উপজেলা প্রশাসন, শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিরা একাধিক বার বৈঠক করেও কোন সমাধানে পৌছতে পারেনি। বৈকন্ঠপুর চা বাগানের শ্রমিক নেতা ও ইউপি সদস্য বাবুল চৌহান জানান, চা বাগানে কাজ করে একজন শ্রমিক ১শ১৮টাকা হাজিরা আধা সের আটা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। নিয়মিত শ্রমিকদের বাগানের কাজ ছাড়া অন্য কোথাও কাজের ব্যবস্থা নেই। অনেক গরিব পরিবার দীর্ঘ ৩৮ দিন ধরে বাগানে কাজ হারিয়ে রেশন তলব না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। চা শ্রমিকদের বাগানের কাজ ছাড়া বিকল্প আয়ের কোন উৎস ও সঞ্চয় নেই। বিশেষ করে অসুস্থ নারী ও শিশুরা পড়েছে খুব কষ্টের মধ্যে । বাগান বন্ধ থাকায় বাগান পরিচালিত হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে । যে সব শ্রমিক ব্যবস্থাপকের সাথে অন্যায় আচরন করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এভাবে বাগান বন্ধ হয়ে থাকলে চা বাগানে প্রায় ৩ হাজার লোক চরম দারিদ্রতার মধ্যে পড়তে হবে। তাই আমরা চাই আলোচনার মাধ্যমে বাগান খুলে দেওয়া হোক। চা বাগানের ব্যবস্থাপক সামসুল ইসলাম বলেন, বাগান খোলার বিষয়ে বাগান কর্তৃপক্ষ আন্তরিক রয়েছে। বৈকন্ঠপুর চা বাগান মূলত একটি রুগ্ন বাগান। গত ৪ বছরে এ বাগানে ১০ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে বাগান কর্তৃপক্ষ। এ বাগানে ১কেজি চা উৎপাদন করতে খরচ পড়ে ১৬০ টাকার উপরে । কিন্তু ১ কেজি চাপাতার নিলাম বাজার দর ১শ২০টাকা। প্রতি বছর কোটি টাকা লোকসানের পরও চা শ্রমিকের রেশন তলব,চিকিৎসা, আবাসন ও বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিয়মিত রয়েছে। ব্যবস্থাপকের গায়ে হাত তুলায় কর্তৃপক্ষ এ বাগানে কর্ম পরিবেশ এখন নিরাপদ নয়। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মঈনুল ইসলাম বলেন, বাগানের এ সমস্যা সমাধানের জন্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, বাগান কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আগামীকাল রবিবার সকালে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে বৈঠক ডাকা হয়েছে। আশা করি আগামী কালের মধ্যে বাগানের সমস্যা সমাধান হবে। তাছাড়া শ্রমিক পরিবারে খাদ্য সংকট থাকলে তালিকা করে তাদের খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হবে।
×