ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটের গোটাপাড়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ॥ নারীসহ আহত ১৬

প্রকাশিত: ১৩:১৫, ১৫ জানুয়ারি ২০২২

বাগেরহাটের গোটাপাড়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ॥ নারীসহ আহত ১৬

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটের গোটাপাড়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, নারী-সহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলছে। এপর্যন্ত কমপক্ষে ৫ টি ব্যবসা প্রতিষ্টান ও ৮/১০ টি মটর সাইকেল ও গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ সুপার এবং জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ পৃথকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবুও শনিবার সকাল(১৫ জানুয়ারী) পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তারের এ দ্বন্ধে মুক্ষাইট, দেপাড়া, কোয়েখা, কোড়ামারা, ডিংশিপাড়া-সহ গোটা এলাকায় তীব্র আতংক বিরাজ করছে। এখানে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। মুক্ষাইট এবং কোড়ামারা এলাকায় গোটাপাড়া ইউপি সদস্য আসলাম কাজী টুটুল এবং গোটাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সমশের আলীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ১১ জনকে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এসময় ইউপি সদস্য আসলাম কাজী টুটুলের দোকান ও উভয় পক্ষের অন্তত ৮-১০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহতরা হলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হাওলাদার (৫৮), মুক্ষাইট এলাকার ইউপি সদস্য আসলাম কাজী টুটুলের বাবা গোটাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মোসলেম কাজী (৫৫), আসলাম শেখের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (২৫), সানি মোড়ল (২১), রফিকুল ইসলাম (৫০), মঞ্জুর করিম (৭০) কোড়ামারা এলাকার জাহাঙ্গীর (৩২), মোঃ মুসা খান (৩৫), কহিনুর বেগম (৪০), চিরুলিয়া এলাকার হাফিজুল শেখ (৩৫), গোটাপাড়া এলাকার রবিউল করিম (৩৮), সাজোখালী এলাকার স্বপন বিশ্বাস (২৩)। অন্য আহতদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ইউপি সদস্য আসলাম কাজী টুটুল বলেন, আমার বাড়ি মুক্ষাইট। বৃহস্পতিবার নেতাকর্মীদের নিয়ে বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রস ও জঙ্গীবাদ বিরোধী গণ মিছিলে বিক্ষোভ অংশগ্রহন করি। হঠাৎ করে গ্রাম থেকে একটি ফোন আসে আমাদের দোকান আক্রমন করা হবে। কয়েকদিন ধরে পরিকল্পনা চলছে আমাদের দোকানে হামলা করবে। ফোন পেয়ে রওনা দিয়ে গ্রামে পৌছানোর আগে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ সমশের আলী, পরাজিত সদস্য প্রার্থী গফফার ও তার লোকজন আমাদের দোকান পাট ভাংচুর করে। সেই সাথে আমার বাবাসহ বেশ কয়েকজনকে বেপরোয়া মারপিট করে তারা। পরবর্তীতে আমরা মুক্ষাইটে পৌছানোর পরে রাতে আবারও তারা আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত হয়। ইউপি সদস্য আসলাম কাজী টুটুলের অভিযোগ অস্বীকার করে গোটাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সমশের আলী বলেন, সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল শেষ করে আমরা শুনতে পারি মুকুলের স্ত্রীর উপর হামলা হয়েছে। মুকুলের স্ত্রী কোহিনুর বেগমকে দেখতে আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে কোড়ামারা এলাকায় যাই। সেখান থেকে ফিরে মুক্ষাইট মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে বসলে, নব্য আওয়ামী লীগ জামায়াত-বিএনপির সাবেক ক্যাডাররা আমাদের উপর হামলা করে। হামলাকারীরা আমার পালসার মোটরসাইকেলসহ ৮-১০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। জীবন বাঁচাতে আমরা দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে প্রবেশ করি। তারপরও হামলাকারীরা সাটারের উপর ইটপাটকেল ছোড়ে। নব্য আওয়ামী লীগ বা জামাত শিবির কারা এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারও নাম উল্লেখ না করে চেয়ারম্যান আরও বলেন, তারা সবাই স্থানীয় মুক্ষাইটের বাসিন্দা এবং বিএনপি-জামাতের লোক। বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, সেলিম ও টগর নামে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। সেখানে পরিস্থিতি এখন শান্ত বলে তিনি দাবী করেন। বিবদমান হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। ফের সংঘর্ষ এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
×