ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাসিক নির্বাচন

নৌকা-হাতির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই কাল

প্রকাশিত: ২২:২৩, ১৫ জানুয়ারি ২০২২

নৌকা-হাতির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই কাল

মোঃ খলিলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে প্রচার শুক্রবার মধ্য রাতেই শেষ হয়েছে। আগামীকাল রবিবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার শেষ দিনের প্রচারে মিছিলের নগরীতে পরিণত হয় নারায়ণগঞ্জ। বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে মিছিল, গণসংযোগ ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। নগরবাসীর অভিমত, সাত মেয়র প্রার্থী থাকলেও দুই হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভীর নৌকা ও স্বতন্ত্র এ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের হাতির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। শেষ দিনের প্রচারে নগরী ছিল বেশ জমজমাট। জুমার নামাজের পর থেকে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষে মিছিলের ঢল নামে। বিশেষ করে নগরীর প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়ক মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার শেষ দিনে প্রচার চালিয়েছেন। বিকেলে ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী শহরের ২নং রেলগেটের বঙ্গবন্ধু সড়কে পথসভা করেন। এতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ও ভোটাররা উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে তৈমুর আলম খন্দকার প্রচারের শেষ দিন শুক্রবার বিকেলে শীতলক্ষ্যার পূর্বপাড়ে বন্দর এলাকায় প্রচার চালান। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডাক্তার আইভী সকালে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে বলেন, আমাকে (আইভীকে) পরাজিত করার জন্য অনেকগুলো পক্ষ এক হয়ে গিয়েছে। সেই পক্ষগুলো ঘরের হতে পারে, বাইরের হতে পারে। তিনি বলেন, আমার বিজয় সুনিশ্চিত। অপরদিকে শুক্রবার সকালে শহরের মিশনপাড়া এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, পুলিশ তার দলের নেতাকর্মী ও সক্রিয় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে। আমার বিজয় সুনিশ্চিত- আইভী ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, আমাকে (আইভীকে) পরাজিত করার জন্য অনেকগুলো পক্ষ এক হয়ে গিয়েছে। সেই পক্ষগুলো ঘরের হতে পারে, বাইরের হতে পারে। সবাই মিলেমিশে চেষ্টা করছে কিভাবে আমাকে (আইভীকে) পরাজিত করা যায়। তিনি বলেন, সহিংসতা যারা করে তারা ঘর বা বাহির বোঝে না। কিভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে ভোটে ঝামেলা করা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। আইভী জোর দিয়ে বলেন, সবাই জানে আমার বিজয় সুনিশ্চিত। শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকায় নিজ বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এক প্রশ্নের জবাবে আইভী বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে হয়তো একটি দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন কারণে আসছে তারা। কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, ওনারা কিন্তু আইভী কিভাবে রাজনীতি করে এবং ভোটাদের কাছে যায় এটি যদি না জানতো তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সময়ে আমাকে নৌকা দিতেন না। উনিও জানেন উনার আইভী মানুষের দ্বারে দ্বারে যায়। জনগণই আমার শক্তির উৎস। এছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। তাই আমি বারবার জনগণের কাছে ফিরে যাই। আইভী বলেন, নেতারা আসতেই পারে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কি করছে সেটি জানার জন্য তারা হয়তো পর্যবেক্ষণ করছেন, কিন্তু আমাকে তারা ফ্রি করে দিয়েছেন। আমি প্রতিদিন আমার ভোটারদের কাছে গিয়েছি। তৈমুর আলম খন্দকারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইভী বলেন, আমার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ। আমার মানুষও নারায়ণগঞ্জের। আমার বাড়ি রূপগঞ্জ না। আমি বহিরাগত লোকজন আনব। আইভী বলেন, ঢাকার পাশে নারায়ণগঞ্জ হওয়ার কারণে কেন্দ্রীয় নেতারা আসছেন। তবে নারায়ণগঞ্জে উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন হয়। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন অন্য যে কোন জেলার চেয়ে একটি পার্থক্য হয়। এটি শুনেও অনেকে আসছেন। আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীর অনেক লোকজনও কিন্তু জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসছে। আমি কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ তুলিনি। আইভী বলেন, প্রতিটি নির্বাচনই চ্যালেঞ্জিং আছে। প্রতিটি নির্বাচনেই একেক রকমের চ্যালেঞ্জিং। এবার চ্যালেঞ্জবিহীন নয়। বরং আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং বিভিন্ন কারণে। এই নির্বাচনই শেষ নির্বাচন কিনা এটা এই মূহূর্তে বলতে পারব না। আগামী ১৬ জানুয়ারি ভোট। ভোটে নির্বাচিত হলে জনগণের কাজ করব। জনগণ যা চাইবে সেই অনুযায়ী কাজ করব। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নগরবাসির প্রত্যাশার শেষ নেই। আপনি যত দেবেন ততই চাহিদা বাড়বে। নতুন নতুন টেকনোলজি আসছে, নতুন নতুন দাবিও করছে মানুষ। নারায়ণগঞ্জ পুরনো একটি শহর, অনেক ঘনবসতিপূর্ণ, ভাসমান লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। তারপর চেষ্টা করেছি এই শহরকে ম্যানেজ করে ইটপাথরে কতুটুকু সবুজায়ন করা যায়, পুকুর জলাশয় সংরক্ষণ করা চেষ্টা করেছি। অনেক খেলার মাঠ, পুকুর সংরক্ষণ ও রাস্তার দুইপাশ সবুজায়ন করাসহ মানুষের বিনোদনের জন্য পার্ক স্থাপন করেছি। আরও বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। আবার নির্বাচিত হতে পারলে এই সব কাজ দ্রুত সম্পুন্ন করা হবে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের সব কাজই চ্যালেঞ্জিং, ধরের একটি ডীপ ড্রেন করে গেলেন, কিছুদিন পরই দেখলাম একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুর ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এখন এই ড্রেন দিয়ে পানি নেমে যেতে পারছে না। ফলে আবার এই জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য নতুন করে আরও গভীর ড্রেন করতে হচ্ছে। পুলিশ আমার দলের নেতাকর্মী ও সক্রিয় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে- তৈমুর ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, পুলিশ তার দলের নেতাকর্মী ও সক্রিয় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ডিসি-এসপি’র সঙ্গে বৈঠকে জনমনে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এই ধরনের কর্মকা-ে নারায়ণগঞ্জের জনগণ শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। শুক্রবার সকালে শহরের মিশনপাড়া এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুস সবুর সেন্টুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তৈমুর আলম খন্দকার অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা ঢাকার মেহমান নানকসহ তার কিছু সঙ্গী নিয়ে জেলাপ্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু তার বক্তব্য ও দেখা করতে যাওয়ার সঙ্গে কোন সমন্বয় নেই। প্রথমত তিনি নির্বাচনের আগে কোনভাবেই প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। তিনি নারায়ণগঞ্জের নাগরিকও না। এটা আমি অন্যায় মনে করি। তিনি জনমনে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছেন। এটা একজন উচ্চ পর্যায়ের সম্মানিত নেতার কাছ থেকে আমরা প্রত্যাশা করি না। এই ধরনের কর্মকা-ে নারায়ণগঞ্জের জনগণ শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ তার দলের নেতাকর্মী ও সক্রিয় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানো হচ্ছে, তাদের মুঠোফোনে নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জের নির্বাচনী সমন্বয়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে গ্রেফতারের সময় তার পুলিশ এজেন্ট দেয়ার কাগজপত্র নথি গায়েব হওয়ার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, আমরা গ্রেফতার এড়িয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার চেষ্টা করে আসছি। তিনি বলেন, নারায়ণগগঞ্জ সিটি নির্বাচনটি গুরুত্ব দিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে নির্বাচনে পর্যবেক্ষণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, গণতন্ত্রকামী মিডিয়াগুলো পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানান। তৈমুর অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জের হোটেলগুলোতে বিভিন্ন জেলার সরকার দলীয় লোকজনদের এনে এখানে রাখা হয়েছে। সার্কিট হাউস, ডাকবাংলোকে নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী সরকার গাড়ি ও সরকারী ডাকবাংলো ব্যবহার করার বিধান নেই। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন। তারপরও এই আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই আমাদের সরকারী দলের উচ্চপর্যায়ের যারা মেহমানরা আমাদের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার উঠে পড়ে লেগে গেছেন। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তৈমুর বলেন, তার ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবন ও ১৮ বছরের সিটি কর্পোরেশনের প্রতি মানুষের ক্ষোভের কারণে ভোটাররা তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তৈমুরের ভোট কেন্দ্র থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা খুলে ফেলার অভিযোগ ॥ স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার অভিযোগ করেছেন যে, সব ভোট কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে সেগুলো খুলে ফেলা হচ্ছে। তিনি সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো না খোলার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি প্রশাসনের নির্দেশে সুষ্ঠু ভোট না করে সরকারদলীয় প্রার্থীকে সুযোগ করে দেয়ার জন্যই সিসি ক্যামেরা খুলে ফেলা হচ্ছে। প্রচারের শেষ দিন শুক্রবার রাত দশটায় নগরীর মাসদাইর নিজ বাসভবনে জরুরী সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন তিনি। তৈমুর আলম বলেন, নির্বাচন কমিশন বলছে ইভিএম মেশিন কোন কারণে নষ্ট বা হ্যাঙ্গ করলে মেরামতের জন্য প্রতি কেন্দ্রে একজন করে টেকনিশিয়ান থাকবে। মেশিন মেরামত করার আগে প্রার্থীদের এজেন্টদের জানিয়ে এবং দেখিয়ে যেন করা হয়। একই সঙ্গে তার নির্বাচনী এজেন্টদের কেন্দ্রে প্রবেশ এবং ভোটগণনা পর্যন্ত ভেতরে থাকতে পারে ও ভোটের রেজাল্ট শীট নিয়ে যেন বের হতে পারে সে জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে তার এজেন্টের নিরাপত্তা দেয়ার দাবি জানান। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নগরবাসীকে আরও একবার নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান- পথসভায় আইভী ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিনে শুক্রবার বিকেল নগরীর দুই রেলগেট আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত পথ সভায় ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ১৮ বছর ধরে তিনি নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের জন্য কাজ করে আসছেন। ২০০৩ সালে যখন আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন করি তখন অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের মানুষ অন্যায় অত্যাচার, খুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নৌকা মাার্ক ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। তিনি বলেন, এই নৌকা হচ্ছে আইভীর নৌকা, শেখ হাসিনার নৌকা, বঙ্গবন্ধুর নৌকা, ’৭১’র নৌকা, মাওলা আলীর নৌকা। এই নৌকার বিজয় হবে। তিনি বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জের ২৭টি ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে দেখেছি মাটি ও মানুষ নৌকার পক্ষে রায় দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক টাকা দিয়েছেন। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীকে আবার নৌকায় ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ চান। তিনি বলেন, আমি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলি। এই কথা চলমান থাকবে। তিনি বলেন, আমার বাবা আলী আহমেদ চুনকা সারাজীবন আপনাদের সেবা করে গেছেন। আমি আমার বাবার পথ অনুসরণ করে আপনাদের সেবা করে যেতে চাই। এই নারায়ণগঞ্জ ত্বকী, চঞ্চল, আশিকসহ যত হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে এর বিচারের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাব। সর্বশেষ তিনি আবেগী কণ্ঠে বলেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জবাসীর সেবা করতে চাই। পরে আইভীর নেতৃত্বে বিশাল একটি র‌্যালি শহর প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কালাম হোসেন, আহমেদ হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আগামীকাল ১৬ জানুয়ারি নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ। কিন্তু এই সুষ্ঠু নির্বাচনে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড কার্যকলাপ করতে চায় তাদের প্রতিহত করা হবে। তিনি বলেন, কোন হুমকি ধমকি মানা হবে না। নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন, আইভী নারায়ণগঞ্জের জনপ্রিয় মেয়র। ১৬ জানুয়ারি লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে নৌকা বিজয়ী হবে। কোন ষড়যন্ত্র এই বিজয় রুখতে পারবে না। স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুরের প্রচার ॥ শুক্রবার বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার শীতলক্ষ্যার পূর্বপাড়ে শেষ দিনে প্রচার চালান। এ সময় নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন। তৈমুরের সমর্থনে বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয়। এ সময় তৈমুর আলমকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ভোটাররা। তৈমুর আলম এ সময় ভোটারদের ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। তৈমুর আলম এ সময় বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন। শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বপাড়ে ১৯ নম্বর থেকে ২৭ নম্বর পর্যন্ত ৯টি ওয়ার্ড রয়েছে। প্রচারের শেষ দিনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের শেষ প্রচার ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শেষ দিনের প্রচারণা চালিয়েছেন নির্বাচনে অংশ নেয়া কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে ১৪৮ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৩৪ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলররা প্রচার, গণসংযোগ, মিছিল, পথসভা করেছে। প্রার্থীদের পক্ষে তাদের সমর্থক ও আত্মীয়-স্বজনরাও প্রচার চালিয়েছেন। এ সময় ২৭টি ওয়ার্ডেই শেষ দিনে কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের মতো করে প্রচারে অংশ নেন। কাউন্সিলরদের প্রচারে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সিটি এলাকা। ২৭টি ওয়ার্ডের জন্য ২৭ জন কাউন্সিলর ভোটে নির্বাচিত হবেন।
×