ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অহিংস প্রচার শেষ ॥ দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীই আশাবাদী

প্রকাশিত: ২২:২১, ১৫ জানুয়ারি ২০২২

অহিংস প্রচার শেষ ॥ দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীই আশাবাদী

শরীফুল ইসলাম ॥ আগামীকাল রবিবার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) নির্বাচন। সকল প্রার্থীই নিজ নিজ কৌশলে অহিংস নির্বাচনী প্রচার শেষ করেছেন। এখন শেষ মুহূর্তের নানা মেরুকরণ নিয়ে চলছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের হিসাব-নিকাশ। রাত পোহালেই ভোটযুদ্ধ। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে ভোটাররাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। কে হচ্ছেন মেয়র আর কারা হচ্ছেন কাউন্সিলর। এ নিয়ে সর্বস্তরে এখন চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীই আশাবাদী। তবে, সুষ্ঠু ভোট নিয়ে মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তৈমুর আলম খন্দকারের মধ্যে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। সুষ্ঠু ভোট নিয়ে হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীরা শেষ মুহূর্তে শঙ্কা প্রকাশ করায় নাসিক নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে ইতোমধ্যেই কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে আনা হয়েছে পুরো নির্বাচনী এলাকা। র্যা ব, বিজিবি, পুলিশের স্পেশাল টিম রবোকপ, সাধারণ পুলিশ, আর্মড পুলিশ, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার টিম মাঠে নেমেছে। শুক্রবার রাত ১২টা থেকে নাসিক নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচলও বন্ধ করা হয়েছে। আর ২৭টি ওয়ার্ডে নির্বাহী ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে ৩০টি মোবাইল কোর্ট কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মাঠে কাজ করছে। এ ছাড়া ভোটের দিন দায়িত্বে থাকবে বিজিবির ২০ প্লাটুন সদস্য। আর প্রতি ওয়ার্ডে রয়েছে র্যা বের একটি করে টিম। পুলিশ থাকছে ৩ হাজার। এর বাইরে থাকছে ২০০ আর্মড পুলিশ। এদিকে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নাসিক নির্বাচনই শেষ বড় কোন নির্বাচন। তাই, এ নির্বাচনকে অগ্নিপরীক্ষা হিসেবে নিয়েছে কমিশন। ইতোমধ্যেই স্বয়ং প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা নারায়ণগঞ্জে গিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেছেন। প্রার্থী ও ভোটারদের জন্য নিয়েছেন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তিনি বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যা যা করা প্রয়োজন সবই করা হয়েছে। তাই নাসিক নির্বাচন একটি মডেল নির্বাচন হিসেবে উদাহরণ হয়ে থাকবে। নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেয়া সময় অনুসারে শুক্রবার রাত ১২টায় নির্বাচনী প্রচার শেষ করেছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। সকাল থেকেই তারা বিরামহীনভাবে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। এ কারণে নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি অলি-গলি ও রাজপথ ছিল প্রার্থী ও ভোটারদের মিলনমেলা। শেষ মুহূর্তের প্রচারকালে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী যেমন বিএনপির একাংশকে কাছে টানার চেষ্টা করছেন তেমনি বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারও আওয়ামী লীগের একাংশের মন জয়ের চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া যাদের কাছে গেলে কিছুটা হলেও ভোট বাড়তে পারে দু’জনই তাদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাই অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তৈমুর আলম খন্দকারের মধ্যে ভোটের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। তবে শেষ মুহূর্তের নানা মেরুকরণে যিনি এগিয়ে থাকবেন তিনিই হবেন নাসিক মেয়র। ভোটে বিজয়ের ব্যাপারে দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীই আশাবাদী। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যদি ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে যান আর কোন সহিংসতা না হয় তাহলে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত। আর বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, ভয়ভীতি উপেক্ষা করে মানুষ কেন্দ্রে এলে ভোট বিপ্লব হবে। ভোটদানে বাধা প্রদান না করলে হাতির বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। তবে, এ দুই প্রার্থীই রবিবারের ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, আমার জয় রোধে একটি মহল চেষ্টা করবে। কারণ, আমাকে হারাতে অনেক পক্ষ এক হয়েছে। তাই, আমি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি। কোন কেন্দ্রে যেন সন্ত্রাসীরা হামলা করতে না পারে, সে ব্যাপারে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে। এ ব্যাপারে তৈমুর আলম বলেছেন, হাতি মার্কার পক্ষে গণজোয়ার দেখে আমার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে পুলিশ লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। আর বাইরে থেকে নারায়ণগঞ্জের সকল হোটেলে সরকারদলীয় লোকজন এনে রাখা হয়েছে। এতে আমরা শঙ্কিত। আন্তর্জাতিক মহলকে এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানাচ্ছি। আর শুধু আশ্বাস নয় নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। শুক্রবার শেষদিনে নাসিক নির্বাচনে অংশ নেয়া মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজ নিজ কর্মী- সমর্থকদের নিয়ে সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত নির্ধারিত এলাকা চষে বেড়িয়েছেন। ভোটারদের সঙ্গে গণসংযোগ করে মূল্যবান ভোট চেয়েছেন। কে কার চেয়ে বেশি কৌশল প্রয়োগ করে নিজের অবস্থান জোরদার করবেন এ নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন প্রার্থীরা। এ কৌশল প্রয়োগ করেই ব্যাংক ভোটের বাইরে থাকা ভোটারদের কাছে টানার শেষ চেষ্টা করেছেন। শেষ মুহূর্তে এসে প্রার্থীরা ছোট-বড় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়িক ও সামাজিক সংগঠন, হকার, শ্রমিক, নারী ভোটার ও নতুন ভোটারদের টার্গেট করে নানামুখী মেরুকরণের চেষ্টা করেছেন। প্রার্থীদের মধ্যে এ মেরুকরণে যাদের পাল্লা ভারি তারাই ভোটের পর শেষ হাসি হাসবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। বিভিন্ন মহলের পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট অনুসারে এখন পর্যন্ত নাসিক নির্বাচনের পরিবেশ প্রশংসনীয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশানের লোকজন নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই, সুষ্ঠু ভোট হওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত পরিবেশ অনুকূলে রয়েছে। নাসিক নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে। এ জন্য শুক্রবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ইভিএমে ভোট দিতে পারে এ জন্যই মক ভোটিংয়ের আয়োজন করা হয় বলে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে মক ভোটিং হয় বলেও তিনি জানান। এই ভোট মহড়ায় সাধারণ ভোটারদের সচেতন করার পাশাপাশি ইভিএম মেশিনে কোন সমস্যা আছে কিনা সেটাও পরীক্ষা করা হয়। নাসিক নির্বাচনকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বসহকারে পর্যবেক্ষণ করছে দেশের সর্বস্তরের মানুষ। তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নির্বাচন নিয়ে বেশ কৌতূহল রয়েছে। রাজধানী ঢাকার অতি নিকটে অবস্থান হওয়ায় জাতীয় রাজনীতিতেও নাসিক নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব পড়ে। মূলত, এ কারণেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনটিকে গুরুত্বসহকারে নেয়। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই সিটির যে কোন নির্বাচনকেই খুবই গুরুত্বসহকারে নেয়। তবে, এবার আওয়ামী লীগ দল থেকে সরাসরি প্রার্থী দিয়ে এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও বিএনপি পরোক্ষভাবে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী সরাসরি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট করলেও বিএনপির সাবেক নেতা তৈমুর আলম খন্দকার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে হাতি প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তবে নির্বাচন করায় তাঁর দলীয় পদ স্থগিত রাখলেও বিএনপি হাইকমান্ডের পরামর্শেই তিনি নির্বাচন করছেন বলে খোদ বিএনপি নেতাকর্মীরাই বলে বেড়াচ্ছেন। আর নির্বাচনী প্রচারে দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা আগ্রহভরেই অংশ নিয়েছেন। এখন বিএনপি ও সমমনা দলগুলো একাট্টা হয়ে রবিবার ভোর থেকে ফলাফল গণনা না হওয়া পর্যন্ত ভোট কেন্দ্র পাহারা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে সূত্র জানায়। পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নাসিক নির্বাচনকে দলের জনপ্রিয়তার প্যারামিটার হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তাই নিজ নিজ দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে আওয়ামী লীগ, বিএনপি নেতাকর্মীরা নিজ নিজ কৌশলে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। এখন রবিবার ভোটারদের কেন্দ্রে আনার জন্য প্রস্তুতি জোরদার করছেন। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে শোডাউন করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামলেও বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে এবং সিনিয়র নেতারা অপ্রকাশ্যে বেশি কাজ করছেন। এটি দলটির একটি কৌশল বলে জানা যায়। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে সবসময় মতের মিল না হওয়া প্রভাবশালী নেতা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান প্রথমদিকে নীরব থাকলেও শেষদিকে আইভীর পক্ষে প্রচারে নামেন। তবে আইভী এ প্রচারকে ইতিবাচক হিসেবে না দেখে নেতিবাচক হিসেবে দেখেছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসারে সংসদ সদস্যরা কারও পক্ষে প্রচারে নামতে পারেন না। তাই আইভী শামীম ওসমানের নির্বাচনী প্রচারে নামার বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখেন। আইভীপন্থী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা চান ভোটের দিন শামীম ওসমান ও তার পরিবারের লোকজন আইভীর পক্ষে সরাসরি অবস্থান না করে নীরবতা পালন করুক। আবার কেউ কেউ বলছেন, ওসমান পরিবার যদি ভোটের দিন তৈমুর আলমের লোকদের সহযোগিতা না করে নীরব থাকে তাহলেই নৌকার বিজয় নিশ্চিত হবে। আর যদি আইভীর পক্ষে না থেকে পরোক্ষভাবেও তৈমুরের পক্ষ নেয় তাহলে বিপরীত চিত্র দেখা যেতে পারে। তবে, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড ওসমান পরিবারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রাখায় শেষ পর্যন্ত তারা আইভীর পক্ষে থাকবেন বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। তা দেখার জন্য ভোটের ফল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। নাসিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীদের দেয়া তথ্যানুসারে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ছাড়াও আইভীর পক্ষে রয়েছেন বেশিরভাগ নারী ও নতুন ভোটার। এ ছাড়া পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে বিগত দুই দশক যারা আইভীর মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন তারাও তার পক্ষে রয়েছেন। তবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন কারণে যারা আইভীর প্রতি বিরাগভাজন হয়েছেন এমন কিছু মানুষ তার বিপক্ষে রয়েছেন। তারপরও ক্লিন ইমেজের প্রার্থী নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান আলী আহমেদ চুনকার মেয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী অতীতের মতো এবারও নাসিক মেয়র নির্বাচিত হবেন বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। অপরদিকে তৈমুর আলম খন্দকারের পক্ষে বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশ প্রকাশ্যে কাজ করলেও ভেতরে ভেতরে সর্বস্তরের নেতাকর্মীই একাট্টা হয়ে কাজ করছেন। এ ছাড়া বিএনপির সমমনা দল জামায়াত ও হেফাজতের নেতাকর্মীরাও তার পক্ষে কাজ করছেন। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় বিএনপি ও সমমনা দলের নেতাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এতে ভাল সাড়াও পেয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। তাই শেষ পর্যন্ত সবকিছু তাদের অনুকূলে থাকলে তৈমুর আলম খন্দকারও চমক দেখাতে পারেন বলে কেউ কেউ মনে করছেন। এবারের নাসিক নির্বাচনে মেয়রদের চেয়ে কাউন্সিলর প্রার্থীরা বেশি তৎপর বলে জানা যায়। প্রতিটি ওয়ার্ডে সরকারী দল আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় ইউপি নির্বাচনের মতো নাসিক নির্বাচনেও ভোটের দিন নিজেদের মধ্যে সংঘাত-সহিংসতায় জড়িয়ে যেতে পারে বলে কোন কোন মহল আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তবে কাউন্সিলর পদে সরাসরি বিএনপি প্রার্থী না দিলেও তলে তলে প্রতিটি ওয়ার্ডেই তাদের পছন্দের প্রার্থী রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ১৬ জানুয়ারি রবিবার অনুষ্ঠেয় নাসিক নির্বাচনে ২৭ ওয়ার্ডের ১৯২ ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে। এবারের নির্বাচনে ভোটার ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। ২০১৬ সালে ভোটার ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। সে অনুযায়ী নতুন ভোটার ৪২ হাজার ৪৩০ জন। আর এবার নারী ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৯ জন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে আইভীর সঙ্গে বিএনপির প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান হয়েছিল প্রায় ৮০ হাজার। আইভী পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬১১ ভোট, আর বিএনপির সাখাওয়াত হোসেন খান পেয়েছিলেন ৯৬ হাজার। এবার নাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন ৬জন। এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন ১৪৫ প্রার্থী। মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন- আগের দুইবারের মেয়র আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী, স্বতন্ত্র থেকে বিএনপির সাবেক নেতা তৈমুর আলম খন্দকার, খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মোঃ রাশেদ ফেরদৌস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মোঃ মাছুম বিল্লাহ ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মোঃ জসীম উদ্দিন। ২০১১ সালে সিটি কর্পোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এবার হচ্ছে নাসিকের তৃতীয় নির্বাচন। এর আগে নাসিক নির্বাচন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর।
×