ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে একটি সড়ক নির্মাণে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট ॥ উপকৃত হচ্ছে ৫ ইউনিয়ন

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ১৪ জানুয়ারি ২০২২

মাদারীপুরে একটি সড়ক নির্মাণে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট ॥ উপকৃত হচ্ছে ৫ ইউনিয়ন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ মাদারীপুরে এলজিইডি কর্তৃক একটি সড়ক নির্মাণের ফলে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। বদলে গেছে ৫ইউনিয়নের দুইলাখ মানুষের জীবনযাত্রার মান। শুরু হয়েছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হওয়ায় দুর হচ্ছে বেকারত্ব। এভাবেই একে একে উন্ন্য়নের মহাসড়কে পৌঁছে যাচ্ছে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল। মাদারীপুর এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে সদর উপজেলার খাগদী থেকে শ্রীনদী এলাকা পর্যন্ত ১৭.২৫ কিলোমিটার সড়ক কহিনুর এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর মাদারীপুর জেলা অফিস। এডিবি’র অর্থায়নে আরসিআইপি প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মিত সড়কটির নির্মাণ ব্যয় হয় ২৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। পূর্বে সড়কটি ১৪ ফিট থাকলেও বর্তমানে বর্ধিত হয়ে ১৮ ফিটে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন শিরখাড়া, বাহাদুরপুর, ধুরাইল, দুধখালী, পেয়ারপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার ছোটবড় যানবাহনে যাতায়াত করেন। এ সব এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহনে ঘটেছে আমুল পরিবর্তন। যা একদিন ছিলো স্বপ্ন। সেই অধরা স্বপ্নই আজ বাস্তব। সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর মিয়া। পেশায় তিনি একজন কৃষক। শিরখাড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী থেকে জেলা সদরের দুরত্ব ২০ কিলোমিটার। গত দুই বছর আগেও শ্রীনদী-চরমুগরিয়া-শ্রীনদী সড়কটিতে খানাখন্দ আর বড় বড় গর্ত থাকায় কৃষিপণ্য আনা নেয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতো। কিন্তু বর্তমান পেক্ষাপট ভিন্ন। সড়কটির পুরো স্থানেই পিচ ঢালাই দেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দেয়া হয়েছে গরিরোধক। এতে কমছে দুর্ঘটনাও। ফলে আবু জাফর মিয়া স্বাচ্ছন্দ্যে কৃষিপণ্য কেনাবেচা করতে পেরে দারুণ খুশি তিনি। এলাকার কৃষক আবু জাফর মিয়া বলেন, “সড়কটির আগের কথা মনে ওঠতে আৎকে উঠি। তবে, বর্তমান চিত্র ভিন্ন হওয়ায় সব ধরণের কাজ খুব সহজেই করা যাচ্ছে। এতে আমরা সবাই খুশি।” একই কথা মাদারীপুর সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুলতানা পারভীনের। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ইজিবাইক কিংবা মাহিন্দ্রযোগে কলেজে আসতে চরম বিড়ম্বনা আর ভোগান্তি হতো তার। বর্ষার দিনে ইজিবাইক উল্টে খাদে পরে বইখাতা ভিজে যেতো। সারাক্ষণ ভয়ে থাকতেন দুর্ঘটনার। সড়কটি চিত্র বদলে যাওয়ায় স্বল্প সময়ে কলেজে যাতায়াত করতে পেরে ফুটেছে মুখে হাসির ঝিলিক। শুধু এরাই নন। তাদের মতো ৫ ইউনিয়নের দুই লক্ষাধিক মানুষের জীবন যাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। জেলা সদর ও উপজেলা সদরে সহজে যাতায়াত করতে পেরে বেকার যুবকদের অনেকের হয়েছে কর্মসংস্থান। জেলা সদর থেকে সড়কটি দিয়ে পুলিশ, প্রশাসন দ্রুত পৌঁছানোর কারণে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডও কমে যাচ্ছে। মাদারীপুর সচতেন নাগরিক কমিটির সভাপতি খান মোহাম্মদ শহীদ বলেন, “মাদারীপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন, মেরামত, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণের ফলে যাতায়াতে আমুল পরিবর্তন এসেছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানের ব্যাপক পরিবর্তনও হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে প্রতিটি গ্রামই হবে শহর।” মাদারীপুর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতার বলেন, “প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে শহরের সব ধরণের সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, জেলার সংসদ সদস্য, এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী ও সচিব স্যারদের দিক নির্দেশনায় মাদারীপুরের ৫টি উপজেলায় গত ১০ বছরে এলজিইডি’র মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এর ফলে গ্রামগঞ্জের মানুষ এরই মধ্যে সুফল পেতে শুরু করেছে। আমরা সরকারের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।”
×