ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এন আই বুলবুল

ভাল গল্পেও সিনেমা হলে দর্শক খরা

প্রকাশিত: ০১:৪৫, ১৩ জানুয়ারি ২০২২

ভাল গল্পেও সিনেমা হলে দর্শক খরা

মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘদিন সিনেমা হল বন্ধ ছিল। অন্যদিকে ভাল সিনেমার অভাবে করোনার আগে থেকেই দেশীয় সিনেমা হলগুলোতে ছিল দর্শক বিমুখ। উৎসব কেন্দ্রিক দুই-একটি সিনেমা ছাড়া গেল কয়েক বছরই সিনেমা হলগুলোতে খুব বেশি দর্শক নেই বলা চলে। যদিও অনেকের মন্তব্য সিনেমা একটা পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। এ ক্রান্তিকাল শিগগিরই পার হয়ে যাবে। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে আসলেই কি তাই? শুধু কি ভাল সিনেমার অভাবেই দর্শক হলে আসছে না? বাস্তবতা বলে দিচ্ছে ভিন্ন কথা। বিগত কয়েক মাসে দেশের প্রেক্ষাগৃহে বেশ কয়েকটি ভাল গল্পের সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। ‘পদ্মাপুরান’, মিশন এক্সট্রিম, ‘লাল মোরগের ঝুটি, ‘মৃধা বনাম মৃধা, রাত জাগা ফুল’ সিনেমাগুলো যারা দেখছেন তাদের বেশির ভাগের মন্তব্য সুন্দর ছবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে পোস্ট করেছেন সিনেমা দেখে টাকা উসুল করেছেন। সত্যি বলতে যারা এসব সিনেমা দেখেছেন তারা দারুণ প্রশংসা করছেন। তবুও উল্লেখ্যসংখ্যক সাধারণ দর্শক আসছে না এ সিনেমাগুলো দেখতে। এ প্রসঙ্গে প্রদর্শক সমিতির সাবেক সভাপতি ও মধুমিতার কর্ণধার ইফতেখার আহমেদ নওশাদ বলেন, ঢাকার অনেক সিঙ্গেল স্ক্রিনের হল বন্ধ হয়ে গেছে। এরমধ্যেও আমরা সিনেমা প্রদর্শন করছি। গেল কয়েক মাসে ‘মিশন এক্সট্রিম ছাড়া আর কোন সিনেমা লাখ টাকা ক্রস করতে পারেনি। সিনেমার উন্নতির কথা ভেবেই আমরা ‘মৃধা বনাম মৃধা’ ও ‘রাত জাগা ফুল’ সিনেমা দুটি আমাদের হলে মুক্তি দিয়েছি। কিন্তু দুটি সিনেমাই দারুণ হতাশ করেছে। দেশীয় সিনেমার বাইরে কলকাতার একটি সিনেমাতে কিছু দর্শক দেখেছি হলে। সত্যি বলতে সিনেপ্লেক্সের সিনেমা দিয়ে দেশীয় সিঙ্গেল স্ক্রিন টিকিয়ে রাখা সম্ভব না। সিঙ্গেল স্ক্রিনের জন্য অবশ্যই কমার্শিয়াল সিনেমা লাগবে। কারণ এগুলো দেখতে নি¤œ শ্রেণী ও মধ্য বিত্তের দর্শকরা আসেন। বেশি দামের টিকেট কিনে তাদের সিনেমা দেখার মানসিকতা এখনও গড়ে ওঠেনি। সিনেপ্লেক্সের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গেল দুই মাসে দেশীয় সিনেমায় প্রথম কয়েকদিন কিছু দর্শক আসলেও তারপর এটি আর থাকছে না। যদিও সবগুলো সিনেমাই ভাল গল্পের ছিল। যারা দেখেছেন তারাও প্রশংসা করেছেন। কেন সিনেমাগুলো দর্শক ধরে রাখতে পারছে না এ বিষেয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’খ্যাত নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান বলেন, দর্শক পছন্দ করা সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে না। সিনেমার ভাষা নাটকের মতো হলে দর্শক সেটি দেখতে আসবে না। শেষ যে সিনেমাগুলো মুক্তি পেয়েছে এর কয়েকটি আমিও দেখেছি। এছাড়া করোনার কারণে অনেক দিন দর্শক সিনেমা হল থেকে দূরে আছে। ফের সিনেমা হলে ফেরার অভ্যাস করার জন্য দর্শকদের জন্য আধুনিক প্রযুক্তিতে দেশীয় গল্পের সিনেমা নিয়ে আসতে হবে। এদিকে করোনা সংক্রমণ আবারও বাড়াতে হলমালিকরা আশার আলো দেখছেন না বলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে মুক্তির কথা ছিল ‘শান’ সিনেমাটি। হল মালিকরাও সিনেমাটি নিয়ে প্রত্যাশায় ছিলেন। কিন্তু মুক্তির ঘোষণা দিয়েও করোনার কারণে সেটি পিছিয়ে দেয়া হয়।
×