ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রুমেল খান

প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির সমন্বয়ে খুশি তামান্না

প্রকাশিত: ০০:০০, ১২ জানুয়ারি ২০২২

প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির সমন্বয়ে খুশি তামান্না

ছোটবেলায় যখন খেলাধুলা শুরু করেন, তখন সেভাবে পরিবারের কাছ থেকে সমর্থন পাননি। প্রখ্যাত এ্যাথলেট ও এ্যাথলেটিক্স কোচ কিতাব আলী তার নানা। তার উৎসাহেই খেলাধুলার জগতে পা রাখেন। প্রথমে ৪০০ মিটার দৌড়ে খেলতেন। পরে নানার পরামর্শে হার্ডলস খেলা শুরু করেন। এরপর থেকেই সাফল্য পাওয়া শুরু। তারপর এসএ গেমসের ক্যাম্পে ডাক পান। সেখানে কোচ মাহবুবা ইকবাল বেলী তাকে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে শাণিত করে তোলেন। ঢাকার বনানীর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে সদ্যসমাপ্ত জাতীয় এ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় স্বীয় নৈপুণ্যে সমুজ্জ্বল হয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কৃতী এ্যাথলেট তামান্না আক্তার। এই আসরে ২টি স্বর্ণ এবং ১টি রৌপ্যপদক অর্জন করেছেন তিনি। ১০০ মিটার হার্ডলসে ১৪.৭৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে এবং ৪০০ মিটার হার্ডলসে ১ মিনিট ০৬.১৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে স্বর্ণপদক এবং ৪ গুণিতক ১০০ মিটার রিলেতে ৪৯.৪০ সেকেন্ড সময় নিয়ে রৌপ্যপদক লাভ করেন। জাতীয় এ্যাথলেটিকক্সে এবার অন্যরকম ডাবল হ্যাটট্রিক করেছেন তামান্না। জাতীয় ও সামার মিট মিলিয়ে তিনি ১০০ মিটার হার্ডলসে টানা ৬ বার স্বর্ণ জিতলেন। এই ইভেন্টে এটি তার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে চতুর্থ স্বর্ণপদক। বাকি দুটি তিনি জেতেন সামার মিটে। জনকণ্ঠের সঙ্গে আলাপচারিতায় ১৯৯৮ সালের ৫ ডিসেম্বর জন্ম নেয়া সুনামগঞ্জের কান্দিগাঁওয়ের সুদর্শনা তামান্না বলেন, ‘এবারের রেজাল্ট আমার প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির সমন্বয় ঘটিয়েছে বেশ ভালভাবেই। তবে সবচেয়ে বেশি এক্সাইটেড ছিলাম ৪০০ মিটার হার্ডলস ইভেন্ট নিয়ে। কারণ এই ইভেন্টে এই প্রথম অংশ নিয়েছি। এটাতে স্বর্ণ জিতেছি। ১০০ মিটার হার্ডলসেও স্বর্ণপদক ধরে রাখতে পেরে অনেক খুশি। যে টাইমিং করেছি, সেটার আরেকটু উন্নতি ঘটাতে পারলে আশা করি এসএ গেমসে ৪০০ মিটার হার্ডলসে পদক জিততে পারব। তবে এজন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।’ এ্যাথলেটিক্স নিয়ে লক্ষ্য সম্পর্কে ২০১৫ সালে নৌবাহিনীতে জয়েন করা তামান্না বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে আরও স্বর্ণ জিততে চাই। এ্যাথলেট ক্যারিয়ার শেষে কোচিং পেশায় আসতে চাই। ইচ্ছে আছে ভবিষ্যতে জাতীয় দলের কোচ হওয়া।’ জাতীয় এ্যাথলেটিক্সে এ পর্যন্ত ১৭/১৮টি পদক জিতেছেন জ্যামাইকার শেলি পিয়ার্সনকে আদর্শ এ্যাথলেট মানা তামান্না। জাতীয় জুনিয়র এ্যাথলেটিক্সে ২০১৪-১৮ পর্যন্ত জুনিয়র (জাতীয়) পর্যায়ে অংশ নিয়ে ৬টি স্বর্ণপদক অর্জন করেন। তার ইভেন্টগুলো ছিল : ১০০, ২০০ ও ৪০০ মিটার, লং জাম্প, হাই জাম্প ও দুটি রিলে দৌড়। তামান্নারা এক ভাই, এক বোন। ছোট ভাই জয় ইসলাম বিকেএসপি থেকে এবার এসএসসি পাস করেছেন, হকি খেলোয়াড়। বাবা লন্ডনে থাকেন। মা গৃহিণী। এ্যাথলেটিক্স ছাড়াও ফ্লোর হকি এবং হ্যান্ডবল খেলেন তামান্না। হ্যান্ডবলটা খেলেন বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে। আর হকি খেলতেন বিকেএসপির হয়ে। আগামীতে নিজের লক্ষ্য পূরণে কতটা সফল হন তামান্না, সেটা সময়ই বলে দেবে।
×