ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপির সমাবেশ ঠেকাতেই বিধিনিষেধ ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ১২ জানুয়ারি ২০২২

বিএনপির সমাবেশ ঠেকাতেই বিধিনিষেধ ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম করোনায় আক্রান্ত। বেশ ক’দিন ধরে তারা অসুস্থতা বোধ করছিলেন। রবিবার রাহাত আরা বেগমের এবং সোমবার রাতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের করোনা টেস্টের পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। এদিকে বিএনপির দ্বিতীয় প্রধান নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মঙ্গলবার দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, শুধুমাত্র বিএনপির সভা-সমাবেশ ঠেকাতেই সরকারের বিধিনিষেধ কিনা তা নিয়ে জনগণের প্রশ্ন রয়েছে। যেখানে দলের মহাসচিব করোনায় আক্রান্ত সেখানে এই দলেরই আরেক নেতার করোনা নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধের বিপক্ষে কথা বলা স্ববিরোধিতা কিনা এ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তাঁর স্ত্রী রাহাত আরা বেগমের করোনা টেস্টের ফল পজিটিভ আসার পর তারা উত্তরার বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউ ও করোনা বিশেষজ্ঞ ডাঃ রায়হান রাব্বানীর তত্তাবধায়নে তাদের চিকিৎসা চলছে। তারা দু’জনই এখন সুস্থ আছেন। তবে তাদের কিছুটা খুশখুশে কাশি আছে। অন্য কোন উপসর্গ এখনও দেখা যায়নি। দেশবাসীর কাছে তারা দোয়া চেয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ দলটির অসংখ্য নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন প্রায় ৪০০। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াও গতবছর ১০ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান কামাল ইবনে ইউসুফ, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং দলের স্থায়ী কমিটি থেকে অবসর নেয়া লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমানসহ বেশ ক’জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে করোনার কারণে মারা যান দলের ভাইস চেয়ারম্য্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, কেন্দ্রীয় নেতা খুররম খান চৌধুরী, খন্দকার আহাদ আহমেদ, আবদুল আউয়াল খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসানসহ বেশ ক’জন। বিএনপির সভা-সমাবেশ ঠেকাতেই সরকারের বিধিনিষেধ- রিজভী ॥ শুধুমাত্র বিএনপির সভা-সমাবেশ ঠেকাতেই সরকারের বিধিনিষেধ কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ মন্তব্য করেন তিনি। রিজভী বলেন, এ সরকারের বিরুদ্ধে মানুষে জেগে উঠেছে, ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে সভা-সমাবেশে যোগ দিতে শুরু করেছে। এ কারণে সরকার আতঙ্কিত। তাই আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, যতই চক্রান্তের জাল ফেলা হোক না কেন, এই সরকারের পতন ঠেকান যাবে না। মামলা দিয়ে, সাজা দিয়ে ও বিধিনিষেধ দিয়ে জনগণকে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। তারা আন্দোলন করবেই। সরকারের ব্যর্থতায় করোনা বাড়ছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত দুই ডোজ করোনার টিকা দেয়া হয়েছে ৩০ ভাগ মানুষকে। যদি ২ বছর আগে করোনা সংক্রমণের শুরুতেই উদ্যোগ নেয়া হতো তাহলে শতভাগ করোনা টিকা দেয়া সম্ভব হতো। দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই ৬০ ভাগের উপরে টিকা দেয়া সম্পন্ন হয়েছে। সরকার যদি সঠিক ব্যবস্থা নিত, যদি ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে পারত তাহলে করোনা মহামারী বৃদ্ধি পাওয়ার কোন সুযোগ থাকত না। এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সারাদেশের ৪০ জেলায় সমাবেশে কর্মসূচী চলছে। দ্বিতীয় দফার কর্মসূচী শুরু হয়েছে ৮ জানুয়ারি থেকে, যা চলবে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত। সরকারের বিধিনিষেধের মধ্যেও বিএনপির জেলা পর্যায়ের কর্মসূচী এখনও চলমান আছে। এটা চলমান থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা বিলকিস জাহান শিরিন, আবদুস সালাম আজাদ, বেলাল আহমেদ, আকরামুল হাসান প্রমুখ।
×