ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসরণে মত

গেটওয়েতে আটকে থাকা ২১৪ কোটি টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ১১ জানুয়ারি ২০২২

গেটওয়েতে আটকে থাকা ২১৪ কোটি টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত

এম শাহজাহান ॥ ই-কমার্স গ্রাহকদের পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা ২১৪ কোটি টাকা আপাতত ফেরত দেয়া হচ্ছে না। আটকে থাকা টাকা গ্রাহকদের ফেরত প্রদানে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করতে মতামত দিয়েছে আইন ও বিচার বিভাগ। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতে জানানো হয়েছে, আদালতের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে টাকা ফেরত প্রদানের বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। চুক্তি অনুযায়ী গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছাতে না পারা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এক ধরনের অপরাধ। এ কারণে আদালতের নির্দেশনার বাইরে বিকল্প কোন পথ খোলা নেই। এতে করে ভুক্তভোগী ই-কমার্স গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করা এখন অনেকাংশে অনিশ্চিত পড়েছে। তবে গ্রাহকদের অর্থ ফেরত প্রদানে শীঘ্রই উচ্চ আদালতে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মেনেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। গত কয়েক দশকের ইতিহাসে দেশে ই-কমার্স খাতে সবচেয়ে বেশি প্রতারণা হয়েছে। ই-কমার্সের লোভে পড়ে লাখ লাখ গ্রাহক টাকা খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। গ্রাহক ঠকানোয় প্রতারণা, অর্থ পাচার, নিষিদ্ধ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি চালু, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœকরণসহ শত শত অভিযোগের কারণে বেশিরভাগ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। গ্রাহকদের টাকা আত্মসাত ও নানা ধরেেনর অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে ইভ্যালি, ইরেঞ্জ, ধামাকা ও রিংআইডিসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডি জেলে রয়েছেন। অনেকে গা ঢাকা দিয়েছে। এ অবস্থায় গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়টির সমাধান হওয়া দীর্ষ সময়সাপেক্ষ। তবে টাকা ফেরত প্রদানে আদালতের নির্দেশনা মেনে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। এ প্রসঙ্গে ই-কমার্স সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত কমিটির প্রধান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান জনকণ্ঠকে বলেন, পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা গ্রাহকের টাকা ফেরত প্রদানে সরকার আন্তরিক। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চেষ্টা করা হবে, আদালতের মাধ্যমে রায় এনে এসব টাকা যাতে দ্রুত গ্রাহকদের ফেরত দেয়া যায়। তবে, সেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে (কেস টু কেস) হয়তো আলাদা আলাদা ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত অনুযায়ী, শীঘ্রই উচ্চ আদালতে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা নেই সেসব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাবেন। এছাড়া যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন। এ কারণে আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর গ্রাহকের ভাগ্য নির্ধারণ করছে। এসক্রো সার্ভিসে (গেটওয়ে) আছে ২১৪ কোটি টাকা। সেই টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে ইতোমধ্যে জননিরাপত্তা বিভাগ ও সিআইডিকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে মাঝখানে আরও একটি মিটিং হয়েছে। টাকাটা কিভাবে ফেরত দেয়া হবে, সে বিষয়ে একটা মিটিং করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সেখানে সিআইডিসহ বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সবাই উপস্থিত ছিলেন।
×