ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফেডারেশন কাপ ফুটবল

চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী

প্রকাশিত: ২২:২৭, ১০ জানুয়ারি ২০২২

চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী

রুমেল খান ॥ ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল হলো ফাইনালের মতোই। গ্যালারি ভরা দর্শক, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে উপভোগ এক ম্যাচ। রবিবার কমলাপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। শিরোপা জেতার পথে মধুর প্রতিশোধও নিয়েছে আবাহনী। ২০১৯ আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে রহমতগঞ্জের কাছে টাইব্রেকারে ৪-৩ (১-১) গোলে হেরেছিল আবাহনী। সেবার রহমতগঞ্জ প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে কিংসের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে এটা আবাহনীর দ্বিতীয় শিরোপা। গত ডিসেম্বরে স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা কিংসকে হারিয়ে। আর তিন বছর পর ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতল তারা। রবিবার শিরোপা জেতার পর আবাহনীকে ৫০ লাখ টাকা বোনাস দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আবাহনীর ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর ইনচার্জ কাজী নাবিল আহমেদ। স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ২৫ লাখ টাকা বোনাস পেয়েছিল আবাহনী। ফাইনাল শেষে বিজয়ী ও বিজিত দলকে পুরস্কৃত করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। চোটের কারণে আবাহনীর দুই ব্রাজিলিয়ান নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় রাফায়েল অগাস্তো এবং ডরিয়েল্টন গোমেজ ফাইনালে খেলতে পারেননি। প্রথমার্ধে বল নিয়ন্ত্রণে ও আক্রমণ করার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলেও বিপজ্জনক আক্রমণে আবাহনীর চেয়ে এগিয়েছিল রহমতগঞ্জ। বার বার তারা হানা দিয়ে আবাহনীর রক্ষণভাগকে দিশেহারা করে তোলে। তবে গোল আবাহনীই করে। দ্বিতীয়ার্ধে দেখা যায় উল্টো চিত্র। আবাহনী মুহুর্মুহু আক্রমণ শাণায়। তবে সুযোগ পেলে কাউন্টার এ্যাটাক করেছে ‘ডাইলপট্টি’ খ্যাত রহমতগঞ্জও। দু’দলই গোল করার অনেক সুযোগ পেয়েছে, যা থেকে বেশি সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজিমাত করে আবাহনীই। প্রথমার্ধের সংযুক্তি সময়ে (৪৫+১ মিনিটে) গোল করে এগিয়ে যায় আবাহনী। রাকিব হোসেনের পাস পেয়ে ডি-বক্সের মাথা থেকে বা পায়ের চমৎকার গড়ানো-প্লেসিং শটে লক্ষ্যভেদ করেন ২০১৮ সালে ফিফা বিশ্বকাপে কোস্টারিকার হয়ে খেলা ড্যানিয়েল কলিনড্রেস (১-০), যিনি ২০১৯ আসরের ফাইনালে রহমতগঞ্জের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে জিতিয়েছিলেন কিংসকে। ৬৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আবাহনী। বাঁ প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে আক্রমণে যান নুরুল নাইম ফয়সাল। তিনি বাঁ পায়ের যে বিপজ্জনক-উড়ন্ত ক্রসটি বক্সের ভেতরে ফেলেন, তা কোনমতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিস্ট করেন গোলরক্ষক রকিবুল হাসান তুষার। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। বক্সের ভেতরে বল পেয়ে যান রাকিব হোসেন। তিনি জায়গা বের করে বুদ্ধিদীপ্ত বাঁ পায়ের মাপা-গড়ানো প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান। গোললাইনের মাঝে দাঁড়ানো রহমতগঞ্জের আইভরি কোস্টের ডিফেন্ডার তোরে লানচিন অনেক চেষ্টা করেও বল আটকাতে পারেননি (২-০)। ৭০ মিনিটে ব্যবধান কমায় রহমতগঞ্জ। শাহরিয়ার বাপ্পীর থ্রু পানস ধরে বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন ফিলিপ আদজাহ্। তাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন আবাহনীর বদলি ডিফেন্ডার মামুন মিয়া। এদিকে গোলরক্ষক সোহেলও বিপদ বুঝে এগিয়ে এসে আদজাহ্রে পায়ের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে তার কাছ থেকে বল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। আদজাহ্ সোহেলকে কাটিয়ে সামনে-ডানে এগিয়ে যান। নেট তখন ফাঁকা। দেরি না করে ডান পায়ের উঁচু ভলিশটে আবাহনীর জাল কাঁপান আদজাহ্ (১-২)। ফোরি বিটুরাজ বড়ুয়া খেলা শেষের বাঁশি বাজালে শিরোপাজয়ের উল্লাসে মত্ত হয়ে পড়ে মারিও লেমোসের শিষ্যরা। পুরস্কার ॥ প্লেয়ার অব দ্য ফাইনাল : কলিনড্রেস (আবাহনী), সর্বোচ্চ গোলদাতা : ৪টি, ডরিয়েল্টন (আবাহনী) ও ফিলিপ আদজাহ্ (রহমতগঞ্জ), রানার্সআপ : রহমতগঞ্জ (৩ লাখ টাকা, ট্রফি ও মেডেল), চ্যাম্পিয়ন : ঢাকা আবাহনী লিমিটেড (৫ লাখ টাকা, ট্রফি ও মেডেল)।
×