ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্কুল-কলেজ বন্ধ নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ

প্রকাশিত: ২৩:৪১, ৯ জানুয়ারি ২০২২

স্কুল-কলেজ বন্ধ নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ওমিক্রনের প্রভাবে নতুন করে সারাবিশ্বে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। বাংলাদেশেও আশঙ্কাজনক হারে নতুন সংক্রমণ বাড়ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন রোগী শনাক্তের হার বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আজ রবিবার। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করা হবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়েছে। যার কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও মানসিক বিকাশেও সমস্যা হয়েছে। তাই সংক্রমণ বাড়লেও নতুন করে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চায় না সরকার। সরকারও মনে করছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে শিক্ষা ব্যবস্থার বড় ক্ষতি হবে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রমের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তবে ১২ বছর বয়স থেকে টিকাকরণের আওতায় শিক্ষার্থীদের আনা সম্ভব হলেও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের এর আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে তাদের নিয়ে বেশি উদ্বেগ রয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় পরামর্শ কমিটির সঙ্গে বিশেষ বৈঠকের আগেই শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ হউক তা তিনি চান না। টিকা নিয়ে যাতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসে সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শনিবার রাজধানীর ইমপেরিয়াল কলেজের রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডাঃ দীপু মনি এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, নতুন করে করোনা পরিস্থিতি বেড়ে গেলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবারও বন্ধ করে দিলে কতদিনে আবার সচল করা সম্ভব হবে তা অনিশ্চিত। এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন কারিকুলাম হবে দক্ষতানির্ভর। শুধু পরীক্ষানির্ভর ও সনদসর্বস্ব শিক্ষা নয়। শিক্ষা হতে হবে দক্ষতানির্ভর, যা শিখছি তা যেন আমরা প্রয়োগ করতে পারি। শিখলাম পরীক্ষা দিলাম ভুলে গেলামÑ এতে কোন লাভ নেই। আমাদের সমস্যা সমাধান করতে শিখতে হবে। তার সঙ্গে সততা, মানবিকতা ও দেশপ্রেম থাকতে হবে। না হলে অর্জিত শিক্ষার কোন মূল্য থাকবে না। তিনি শিখন ঘাটতি পূরণে নিরাময়মূলক ক্লাস নেয়ার কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেড় বছরে লেখাপড়ায় যে ঘাটতি হয়েছে, সেটি পূরণের জন্য রেমিডিয়াল ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা করছি। কিন্তু আমাদের অনেক সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। কারণ আবার করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। গত দেড় বছর শিক্ষার্থীরা সশরীরে ক্লাস করতে পারেনি। শ্রেণীকক্ষে তাদের পাঠদান করানো যায়নি। অনলাইনে বা টেলিভিশনে করেছে, এতে যে ঘাটতি হয়েছে তাতে শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের মাধ্যমে সে ঘাটতি পূরণ করতে হবে। কিন্তু যেভাবে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই চলছেন অনেকে, তাতে করোনা সংক্রমণ বাড়লে শিক্ষার ক্ষতিটাই বেশি হবে, সেটা মাথায় রেখে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আমরা প্রত্যেকে যেনেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। এটি সবাইকে মানতে হবে। আমি সবার কাছে আবেদন জানাব সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বা অন্য যে কোন ধরনের অনুষ্ঠান হোক আমরা সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। তিনি আরও বলেন, আমাদের সমস্যা সমাধান করতে শিখতে হবে। তার সঙ্গে সততা, মানবিকতা ও দেশপ্রেম থাকতে হবে। না হলে অর্জিত শিক্ষার কোন মূল্য থাকবে না। দারিদ্র্য যেন কোন শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান বক্তব্য রাখেন। আলিয়ার শিক্ষার্থীরা ভবন নির্মাণে বাধা দিচ্ছে ॥ বিশ^বিদ্যালয় রিপোর্টার জানান, রাজধানীর সরকারী আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, সেখানকার শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসা অধিদফতরের ভবন নির্মাণে বাধা দিচ্ছে। এটি মোটেও ঠিক নয়। এখানে অধিদফতরের ভবন নির্মাণ হবে। সে প্রকল্প পাস হয়ে গেছে, এটি সরকারের সিদ্ধান্ত, সেই সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়া উচিত নয়। তাদের ছাত্রাবাস নিয়ে যদি কোন কথা থাকে; যে কোন সময় তারা আমার সঙ্গে কথা বলতে পারে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য আমার দরজা খোলা। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বটতলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী পরবর্তী আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। শনিবার বেলা ১১টায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় রক্তদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়। কর্মসূচী শেষে বিকেলে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রোকেয়া সুলতানা, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব ডাঃ এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডাঃ ইকবাল আর্সলান। ডাঃ দীপু মনি বলেন, ছাত্রলীগের এই ভার্চুয়াল ব্লাড ব্যাংক কাজ করলেই সকল রক্তের প্রয়োজন মেটাতে পারবে। বাংলাদেশে ছাত্রলীগের ৫০ লাখ নেতাকর্মী রক্ত দিলে প্রয়োজন মিটবে। এসময় তিনি ভার্চুয়াল ব্লাড ব্যাংক উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের প্রতি মরণোত্তর কর্নিয়া দান কর্মসূচী গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান। কুয়েটে শিক্ষক মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সকল বিবেচনায় নিয়ে আইনের কাঠামোয় রেখে সুষ্ঠু সুরাহা করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা হয়েছে, আমরা সমাধান করার চেষ্টা করেছি। একবার সমাধানের জন্য ঢুকলে কিন্তু না করে বের হইনি। আমরা সমাধান করেছি। এটারও খুব ভাল একটা সমাধান বের সম্ভব বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
×