ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এবাদত-তাসকিনরাই ভরসা বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ২১:৫১, ৮ জানুয়ারি ২০২২

এবাদত-তাসকিনরাই ভরসা বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সিরিজের প্রথম টেস্ট জয়ের পর ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হার ঠেকানো। অর্থাৎ ড্র করলেই ইতিহাস সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে। ড্র করতে হলে খেলতে হবে ৫ দিন। আর হার-জিত হলে যে কোন সময়েই শেষ হতে পারে ম্যাচটি। এবার হবে ব্যাটারদের আসল পরীক্ষা। কারণ ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে উইকেট থাকবে সবুজ ঘাসে ঢাকা। তাই বরাবরের মতো এবারও এখানে পেস ও বাউন্সে ব্যাটারদের এসিড টেস্টে ফেলবেন পেসাররা। কিউই পেসারদের বিপক্ষে যেমন ভয়টা আছে বাংলাদেশী ব্যাটারদের, তেমনি প্রথম টেস্টে ১৩ উইকেট তুলে নেয়া বাংলাদেশী পেসারদের নিয়েও এখন মাথাব্যথা থাকবে স্বাগতিকদের। উভয় দলই ম্যাচের ফলাফল নিজেদের পক্ষে আনতে নির্ভর করবে পেসারদের সাফল্যের ওপর। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে এবাদত হোসেন চৌধুরী ক্যারিয়ারসেরাই শুধু নয়, মাউন্ট মঙ্গানুই ভেন্যুর সেরা বোলিং পারফর্মেন্স দেখিয়েছেন ৪৬ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে। প্রথম ইনিংসে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ৩টি উইকেট নেন। ভাল বোলিং করেও উইকেট না পাওয়া তাসকিন আহমেদ দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৩ উইকেট। এবার এই পেসত্রয়ীর ওপরই ভরসা করবে টাইগাররা হ্যাগলি ওভালে। মাউন্ট মঙ্গাসুইয়ে প্রথম টেস্ট শুরুর আগে টিভিতে আলোচনায় ধারাভাষ্যে মার্ক রিচার্ডসন, ব্রেন্ডন ম্যাককালামরা বলছিলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে এত কম ঘাসের উইকেট গত কয়েক বছরে দেখিনি।’ খেলা শুরুর পর দেখা যায়, শুধু ঘাসই কম নয়, নিউজিল্যান্ড বিবেচনায় উইকেট বেশ মন্থর। এমন উইকেটে পেয়ে সফরকারী বাংলাদেশ দল ফায়দা নেয় দারুণভাবেই। দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্যের পর দারুণ ব্যাটিং প্রদর্শনীতে জয় তুলে নেয়। ঐতিহাসিক সেই জয়ের পর এখন বাংলাদেশের সিরিজ হাতছাড়া হচ্ছে না তা নিশ্চিত হয়েছে। তবে গৌরব বাড়ানোর মোক্ষম সুযোগ ক্রাইস্টচার্চে ড্র করে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতার। সেক্ষেত্রে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ থাকবে ব্যাটারদের। কারণ ন্যূনতম ড্র করতে হলে হ্যাগলি ওভারে সফরকারী কোন দলের জন্য ৫ দিন খেলা খুবই কঠিন। এখানে বিদেশী দল হিসেবে ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া, ২০১৮ সালে ইংল্যান্ড শুধু পুরো ৫ দিন খেলেছে। অসিরা জিতেছে আর ইংল্যান্ড ড্র করে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কা পঞ্চম দিন মাত্র ২.২ ওভার ব্যাট করে হেরে যায়। সেটি শেষদিন পর্যন্ত গড়িয়েছে শুধু প্রথম দিন বৃষ্টির কারণে মাত্র ১৪ ওভার খেলা হওয়াতে। অর্থাৎ এশিয়ান কোন দলই এখানে ৫ দিন পুরোপুরি খেলতে পারেনি। কারণ এখানকার বাউন্সি ও গতিময় ঘাসের উইকেট। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ফ্ল্যাট উইকেট গড়ে ধরা খেয়েছে কিউইরা। এবার তারা হ্যাগলি ওভালে রাখছে ঘাসে ঢাকা উইকেট। সেখানে তাই এবাদত-তাসকিন ও শরিফুলের সাফল্যের দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। বিশেষ করে এবাদত প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে যেভাবে বোলিং করেছেন তাতে করে তার ওপরই বেশি ভরসা করবে বাংলাদেশ দল। ৪৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে দেশের বাইরে বাংলাদেশী কোন পেসার হিসেবে সেরা বোলিংয়ের নজির গড়েছেন তিনি। ৯ বছর ও ৪৭ টেস্ট পর বাংলাদেশের কোন পেসার ইনিংসে ৫ উইকেট নিতে পেরেছেন। তাই তার কাছে প্রত্যাশা থাকবে অনেক বেশি। প্রতিপক্ষ দলের অভিজ্ঝ ব্যাটার রস টেইলরকেও বোল্ড করেছেন তিনি দ্বিতীয় ইনিংসে। সেই টেইলর ক্রাইস্টচার্চে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামবেন। এবাদত তাকে নিয়ে বলেছেন, ‘আমি তাকে (টেইলরকে) বললাম তুমি এত ভাল মারতে পারো, আমাকে মারছো না কেন? উনি বললেন, ‘ভাই, এই পিচে এমন বোলিং করলে কেউ মারতে পারবে না।’ তেমনটাই আবার আশা করছে বাংলাদেশ তার কাছ থেকে। প্রথম ইনিংসে বাঁহাতি শরিফুল ৩ উইকেট শিকার করেন। সেই ইনিংসে মাত্র ১ উইকেট পাওয়া এবাদত একাই ধসিয়ে দিয়েছেন কিউই ব্যাটিং লাইনের মেরুদন্ড। আর প্রথম ইনিংসে দারুণ বোলিং করেও উইকেটশূন্য তাসকিন নেন ৩ উইকেট। অর্থাৎ এই টেস্টে বাংলাদেশী পেসারদের পারফর্মেন্স ছিল স্বপ্নের মতো। কারণ তারা নিয়েছেন স্বাগতিক প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের ১৩ উইকেট। আর এতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আরেকবার তাই পেসারদের ওপর প্রত্যাশা বাংলাদেশ দলের।
×