ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফেলানী হত্যা, ১১ বছরেও বিচার পায়নি পরিবার

প্রকাশিত: ২১:৪১, ৮ জানুয়ারি ২০২২

ফেলানী হত্যা, ১১ বছরেও বিচার পায়নি পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার ১১ বছরেও ন্যায়বিচার পায়নি তার পরিবার। শুক্রবার সকালে পারিবারিকভাবে ফেলানীর বাড়িতে দোয়া মাহফিল ও কবর জিয়ারত অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ সময় পার হলেও আজও বিচার না হওয়ায় ফেলানীর পরিবার ও গ্রামবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে। তারা জানে না ফেলানী হত্যার বিচার আদৌ হবে কিনা। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবা নুর ইসলামের সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিলেন ফেলানী। এ সময় মই বেয়ে কাঁটাতার পেরোনোর সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হয় ফেলানী। বাবা নুর ইসলাম প্রাণে বেঁচে গেলেও মেয়ে ফেলানীর মরদেহ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে কাঁটাতারে। পরে এ নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতে ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয় নিজ বাহিনীর আদালত। ফেলানীর বাবা-মা রায় প্রত্যাখ্যান করলে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরু করে ভারত। পরের বছর ২ জুলাই অভিযুক্তকে আবারও নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়। এরপর ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের আশায় ভারতের সুপ্রীম কোর্টে যৌথভাবে রিট আবেদন করেন ফেলানীর বাবা ও মানবাধিকার সংগঠন সুরক্ষা মঞ্চ। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পূর্ণাঙ্গ ব্রেঞ্চ রিট আবেদনটি গ্রহণ করলেও একাধিকবার শুনানির তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় এখনও ন্যায়বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার। ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানবাধিকার সংস্থাসহ অনেকের কাছে আমরা গিয়েছি, কিন্তু ১১ বছরেও ন্যায়বিচার পেলাম না। বাবা নুর ইসলাম বলেন, দুই দুই বার কুচবিহারে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের নৃশংসতার বর্ণনা দিয়েছি। তারপরও ন্যায্যবিচার পাইনি। তবে ভারতের সুপ্রীমকোর্টে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা ছাড়িনি। ফেলানীর পিতা নুর ইসলাম পরিবার নিয়ে ভারতে থাকতেন এবং সেখানে ইটভাঁটিতে কাজ করতেন। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর রামখানার কলোনিটারী গ্রামে মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তাই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরতে ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে রওনা হন বাংলাদেশে। ৭ জানুয়ারি এ হত্যাকান্ড ঘটে।
×