ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সুজনের চোখে স্বপ্নের এক জয়

প্রকাশিত: ০১:৪৭, ৬ জানুয়ারি ২০২২

সুজনের চোখে স্বপ্নের এক জয়

জিএম মোস্তফা ॥ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কোন ফরম্যাটেই জয় নেই বাংলাদেশের। অবশেষে বুধবার এলো স্বপ্নের সেই জয়। গৌরবময় এই জয়ের সৌজন্যেই মাউন্ট মাঙ্গানুইর বে ওভালে লেখা হলো নতুন ইতিহাস। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে সব সংস্করণে ৩২ ম্যাচে হারের পর অবিশ্বাস্য এক জয়ের স্বাদ পেল লাল-সবুজের বাংলাদেশ। আর এই জয়কে অবিশ্বাস্য এবং স্বপ্নের মতোই জয় বলে মন্তব্য করেছেন টাইগারদের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘স্বপ্নের মতোই মনে হচ্ছে। খুব ভাল অবস্থায় ছিলাম না আমরা। যদিও ভিন্ন ফরম্যাট, তবু টি২০ বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের সঙ্গেও বাজে ক্রিকেট খেলে এসেছি। সেখান থেকে যে ইউ টার্ন নিয়েছে ছেলেরা, এক কথায় অবিশ্বাস্য।’ বাংলাদেশের ক্রিকেটে এই জয় ছাড়াও স্বর্ণালি কিছু সফলতার গল্প রয়েছে। ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয় যার মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানো, ২০০৫ সালে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়, ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে হারানো, ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের সঙ্গে টেস্ট জয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে জয়ের কৃতিত্ব, শততম টেস্টে লঙ্কানদের বিপক্ষে জয় এবং সর্বশেষ যুবাদের বিশ্বকাপ জয়ের ঘটনাগুলোও দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে তরতাজা। কিন্তু বুধবার মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে টাইগারদের জয়টাকে ১ নম্বরে রাখছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে যার প্রায় ২ যুগের সম্পৃক্ততা তার। সেই পাকিস্তানের সঙ্গে বিশ্বকাপের ম্যাচে জয়ের নায়কও খালেদ মাহমুদ সুজন। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এবার প্রায় পাঁচদিনই দাপুটের সঙ্গে খেলা জয়টাকেই সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে মনে করছেন বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর। এ প্রসঙ্গে খালেদ মাহমুদের সোজা সাপটা উচ্চারণ, ‘এ জয়কে অবশ্যই এক নম্বরে রাখব আমি। সব বিচার-বিবেচনা করেই এ জয়কে এক নম্বরে রাখছি। আরও একটি জয়কে স্মরণ করছি। সেটি হলো যুব দলের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ম্যাচটি। ভারতীয় যুব দলকে হারিয়ে বিশ্বসেরা হয়েছিল আমাদের যুবারা। সেটাও অনেক বড় অর্জন, বিশাল সম্মান ও গর্বের।’ শুধু বাংলাদেশ কেন? নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এশিয়ার প্রায় সব দলগুলোর পারফর্মেন্সই খুব ভাল নয়। এশিয়ার দেশ হিসেবে কিউইদের মাটিতে সেরা সাফল্য রয়েছে কেবল পাকিস্তানের। ৯ হারের বিনিময়ে জয় আছে ১০ ম্যাচে। এছাড়া ১৪টি ম্যাচে ড্র। ১০ হারের বিনিময়ে ভারতের জয় মাত্র ৫টিতে। বাকি ৫ ম্যাচে ড্র। এছাড়া শ্রীলঙ্কা ১১ হারের বিনিময়ে জয় পেয়েছে মাত্র দুটিতে, বাকি ৬টি ড্র। আর ১০ নম্বর টেস্টে প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছে মুমিনুল হকের দল। এই জয়ের পেছনে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক অবশ্য কৃতিত্ব দিচ্ছেন খালেদ মাহমুদ সুজনকেও। কঠিন সময়টাতে দলের মনোবল চাঙ্গা করতে এগিয়ে এসেছেন ‘টিম ডিরেক্টর’ ও সাবেক অধিনায়ক। দলকে গাঁথেন এক সুতায়। ‘অনেক হেরেছি, এবার জিততে এসেছি’, এই মন্ত্রও সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার ভূমিকা রেখেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। এ ব্যাপারে মুমিনুল বলেন, ‘অনুপ্রেরণার কথা বললে, (মাহমুদ) সুজন ভাই অনেক বিরাট বড় একটা ভূমিকা রেখেছেন এখানটায়। আমরা যখন কোয়ারেন্টাইনে ছিলাম তখন সেভাবে অনুশীলনের সুযোগ পাইনি। যখন বের হই, তখন এক সঙ্গে অনুশীলন শুরু করি। তখন দল হিসেবে এক সঙ্গে কাজ করার একটা আবহ তৈরি হয়। সুজন ভাই সেই সময়টায় অনেক বেশি সহায়তা করেছেন। ওই সময়টায় উনি আমাদের খুব বেশি অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করেছেন। মাঠের বাইরে থেকে অনুপ্রেরণা দেয়াটা আমার মনে হয়, খুব বেশি কাজে দিয়েছে। কোভিড মাঝে মধ্যে আশীর্বাদ হয়ে কাজ করে। আমরা ১০ দিন এক সঙ্গে কোয়ারেন্টাইনে ছিলাম। তো সেখান থেকে বের হয়ে আমরা সবাই দল হিসেবে এক সঙ্গে অনুশীলন করতে পেরেছি। ওইটা সবচেয়ে বেশি কাজে দিয়েছে।’
×