ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অবিশ্বাস্য ॥ মুমিনুল

প্রকাশিত: ২৩:২৬, ৬ জানুয়ারি ২০২২

অবিশ্বাস্য ॥ মুমিনুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার পর থেকেই কঠিন সময় পার করছিলেন মুমিনুল হক সৌরভ। তার অধীনে দলগত পারফর্মেন্সে যাচ্ছেতাই অবস্থায় একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল। তবে বরাবরই মুমিনুল কোন সিরিজের আগে ভাল কিছু করার আশাবাদ জানিয়েছেন। এবারও বছরের প্রথম দিন নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্ট খেলতে নামার আগে তিনি অতীতের সবকিছু ভুলে দারুণ কিছু করার প্রত্যয় জানান। সে সময় তিনি বলেন, বারবার খারাপ করতে থাকলেও ভাল ও ইতিবাচক কিছুর আশাবাদ শুনিয়ে যাবেন। তবে এবার আর মুমিনুলের কথা মিথ্যে হয়নি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এ জয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে। কারণ ইংলিশ-অসিদের ঘরের মাঠে নিজেদের মতো উইকেট বানিয়ে হারিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু এবার নিউজিল্যান্ডকে তাদের পরিচিত মাঠে হারানোর ইতিহাস রচিত হয়েছে। এরপরও মুমিনুল জানালেন অবিস্মরণীয় এই জয় ভুলে যেতে চান তিনি। কারণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জে ভাল করার দিকে মনোযোগ তার। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫ টেস্ট খেলে ১২ পরাজয়, ৩ ড্র ঘরের মাটিতে। এর মধ্যে ৯ পরাজয় নিউজিল্যান্ডে গিয়ে। অবশেষে ১৬তম সাক্ষাতে তাদের হারিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম জয় পেয়েছে বাংলাদেশ দল। টাইগাররা এ জয়ে চলমান বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় চক্রে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে পঞ্চম স্থানে বাংলাদেশ। দেশের বাইরে আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ পাঁচে থাকা কোন দলকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে দেয়ার অবিস্মরণীয় কীর্তি। নিউজিল্যান্ডে ২০১১ সালে পাকিস্তানের পর আর কোন এশীয় দেশ গত ২১ টেস্ট খেলে জিততে পারেনি। সবমিলিয়ে টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত কিউইদের লজ্জা দিয়েছে গত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে তলানিতে থাকা বাংলাদেশ। তবু এই অবিস্মরণীয় অর্জন ভুলে থাকতে চান মুমিনুল। তিনি বলেন, ‘আজ আমি এই জয়ের কথা ভুলে যেতে চাই। ক্রাইস্টচার্চের ম্যাচের দিকে তাকাতে হবে আমাদের।’ কারণ এর আগে ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ও ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে জিতলেও পরের টেস্টে বাজেভাবে হেরে সিরিজ ড্র করে বাংলাদেশ। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এমন চিন্তা মুমিনুলের। তবে কিউইদের বিপক্ষে জয়ের পেছনে বোলারদেরই মূলত কৃতিত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা দলীয় প্রচেষ্টা, দলের সবাই এই ম্যাচটি জিততে মরিয়া ছিল। প্রতিটা বিভাগে সবাই অবদান রেখেছে। আমরা এই ম্যাচ জিতেছি বোলারদের কারণে। তারা ঠিক জায়গায় বল করেছে এবং প্রক্রিয়া মানার চেষ্টা করেছে। সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য, টেস্ট দলের একটা ঐতিহ্য তৈরি করতে জয়টা দরকার ছিল। সেদিক থেকে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ চতুর্থ দিনশেষে যখন কিউইরা ৫ উইকেটে ১৪৭ রান নিয়ে ১৭ রানের লিড পেয়েছে, তারপর থেকেই বাংলাদেশ দল উন্মুখ হয়ে ছিল পঞ্চম দিনের অপেক্ষায়। এমনকি ঘুমাতেও পারেননি মঙ্গলবার রাতে। এ নিয়ে মুমিনুল বলেন, ‘আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না, কী অনুভব করছি। এটা এক কথায় অবিশ্বাস্য। সত্যি কথা বলতে, আজ (বুধবার) কী হবে, সেটা ভেবে আমি গতকাল রাতে ঘুমাতে পারিনি। আমরা ফল নিয়ে কিন্তু চিন্তা করিনি। আমাদের ভেতরে ছিল, প্রক্রিয়া অনুযায়ী যেন খেলতে পারি।’
×