ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাবুল তালুকদার

দুর্নীতি রুখতে হবে

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ৬ জানুয়ারি ২০২২

দুর্নীতি রুখতে হবে

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। ভূমিদস্যুদের দখলে দেশের নদ-নদী। নদী ভরাট করে ভূমিদস্যুরা মিল কারখানা ও রাতারাতি বহুতল বিশিষ্ট বিল্ডিং দিয়ে শতকোটি টাকার বাণিজ্য করে পকেট ভরে। এতে নদ নদী নাব্য হারিয়ে ফেলে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউ টিসি, বিআইডব্লিউ টিএ এর দেখাশোনার দায়িত্ব থাকলেও তারা চোখ বুজে ঘুমিয়ে থাকে। দেশের নদ-নদীগুলো কীভাবে রক্ষা করা যায় তা তাদের আমলে নেই, আছে পকেট ভরার চিন্তা। কীভাবে রাতারাতি কোটিপতি হওয়া যায়। প্রধান প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী ওতপেতে থাকে সরকারের বাজেট দেয়া টাকা পয়সা কীভাবে হাতিয়ে নেয়া যায়। এভাবেই চলছে সারা বাংলাদেশে। এই যদি হয় প্রকৌশলীদের চিন্তাচেতনা তাহলে দেশের উন্নয়ন চলে যাবে গর্তের ভেতর। ধ্বংস হয়ে যাবে নদ-নদী। প্রতি বছর নদ-নদীর পেছনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শত হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে থাকেন নদ-নদীর কাজের জন্য। এই সমস্ত টাকা পয়সা সঠিক পথে জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার না করে বাহিরের কতিপয় দালাল চক্রের মাধ্যমে অথবা নিজের আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে যে কোন প্রকারেই হোক এই বরাদ্দকৃত টাকাগুলোর ৮০ শতাংশ টাকা নিজেদের পকেটে চলে যায়। যার কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জনগণের প্রাণ রক্ষাকারী জানমাল রক্ষাকারী নদীর উভয়কূলস্থ যে বেড়িবাঁধগুলো নির্মাণের জন্য সরকারকৃত বিপুল অর্থের বরাদ্দ দেয়া হয় এই বরাদ্দকৃত টাকাগুলো ওই সমস্ত ব্যক্তিরা নিজেদের স্বার্থে আত্মসাৎ করে। যার কারণে প্রতিবছর প্রলয়ঙ্করী ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই সমস্ত বেড়িবাঁধ একটু পানির চাপ লেগেই ভাঙ্গতে শুরু করে। যার ফলে ওই ভাঙ্গা জায়গা দিয়ে প্রলয়ঙ্করী পানির ¯্রােত উপকূল ভর্তি গ্রামে প্রবেশ করে কৃষি ফসলসহ জনগণের ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। অতঃপর এই হত দরিদ্র মানুষেরা নিঃস্ব রিক্ত হয়ে পথে পথে ভিক্ষার জন্য হাত পেতে বেড়ায়। যার কারণে এদের জন্য সরকারকে ক্ষতি পূরণসহ অহেতুক বাড়তি খেসারত দিতে হয়। এর জন্য একমাত্র দায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং এই বোর্ডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। নৌযানগুলোর একশটির ভেতর আশিটির ফিটনেস নেই। স্বল্পক্ষমতার ইঞ্জিন নিয়ে অধিক যাত্রী পরিবহন করে। চালক সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে যার ফলে শেষ পর্যন্ত ইঞ্জিনটিতে আগুন লেগে যায়। আবার কখনও কখনও যাত্রীর চাপে নৌযানটি পানিতে ডুবে যায়। এর প্রথম কারণ নদীপথের সংরক্ষণের দায়িত্বে যারা আছে তাদের অসাবধানতা দুর্নীতি এবং অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের ঘৃণ্য মানসিকতা। এরা অর্থের বিনিময়ে ফিটনেসবিহীন এই নৌযানগুলোকে নদীপথে চলাচলের জন্য অনুমতি দেয়। তারপর দায়ী এই সমস্ত নৌপরিবহনের মালিকরা। এরা ফিটসেনবিহীন নৌযানগুলোকে চলাচলের অনুমতির জন্য কর্র্তৃপক্ষের হাতে মোটা অঙ্কের ঘুষ প্রদান করে। প্রশাসনের আর চুপ করে বসে থাকার সময় নেই, মানুষের মূল্যবান জীবন বাঁচানোর স্বার্থে তাদের দৈনন্দিন বিপদমুক্তভাবে চলাচলের নিমিত্তে একান্তভাবে সুনজরদারিসহ এর বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক হয়ে পড়েছে। একটি জীবন চলে গেলে সরকার এবং পরিবহনের মালিকেরা তাকে আর ফিরিয়ে দিতে পারবে না। এ থেকে পরিত্রাণের একমাত্র পথ হলো বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএসহ পরিবহন সেক্টরের দুর্নীতিবাজ ঘুষখোর অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আইনের আওতায় আনা। তা নাহলে এভাবেই দিনের পর দিন নৌপথে দুর্ঘটনা ঘটতে থাকবে। মোহাম্মদপুর, ঢাকা থেকে
×