ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাপানে রফতানি বেড়েছে ১৩ শতাংশ

প্রকাশিত: ২৩:১৮, ৯ ডিসেম্বর ২০২১

জাপানে রফতানি বেড়েছে ১৩ শতাংশ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে জাপানে রফতানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির কারণে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ৩ হাজার মার্কিন ডলার মাথাপিছু আয় অর্জন করবে বাংলাদেশ। বৃহত্তর চট্টগ্রামের মাতারবাড়ি ও মীরসরাইয়ে বাস্তবায়নাধীন বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে জাপানী বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমীক্ষা পরিচালিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই), জাপান এক্সাটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেটরো) ও জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যৌথ উদ্যোগে চট্টগ্রামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মঙ্গলবার আগ্রাবাদে অবস্থিত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে স্থাপিত হয় ‘সিসিসিআই জাপান ডেস্ক’। জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এ সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে বিভিন্ন প্রকল্প ও অর্থনৈতিক কর্মকা-ের মাধ্যমে। কোভিড -১৯ মহামারী সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি খুবই স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। চলতি বছর জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত গত বছরের একই সময়ের তুলনায় জাপানে বাংলাদেশের রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চট্টগ্রাম চেম্বারের সিসিসিআই জাপান ডেস্ক উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রদূত। চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অন্যতম প্রধান অংশীদার জাপান। এদেশে জাপানী বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেবিসিসিআই ও জেটরো সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরবর্তীতে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। আগামী বছর জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চট্টগ্রামে দূতাবাসের সহযোগিতায় ‘বে অব বেঙ্গল গ্রোথ সামিট’ আয়োজন করা হবে বলে তিনি জানান। চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার মোঃ রুহুল আমিন বলেন, চট্টগ্রামে বন্দর সম্প্রসারণসহ যোগাযোগ, লজিস্টিকস ও অবকাঠামো খাতে জাপান বাংলাদেশে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। তিনি প্রত্যাশা করেন, আগামীতে এ ডেস্কের মাধ্যমে বাংলাদেশে সম্ভাব্য জাপানী বিনিয়োগকারীরা যথাযথ তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে উপকৃত হবেন, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে। চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর এ ডেস্কের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, উভয় দেশের বেসরকারী ও সরকারী খাতের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন, সংশ্লিষ্ট আইনী পরামর্শ ও বাজার সংক্রান্ত তথ্য প্রদানসহ জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সর্বাত্মক সেবা ও সহযোগিতা প্রদান করা হবে। জাইকা বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি হায়াকাওয়া ইওহো বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের কাছে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বাংলাদেশ ও অবশিষ্ট বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ‘এন্ট্রি পয়েন্ট’। জেসিআইএডি’র সভাপতি হিকারি কাওয়াই বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে তিন শতাধিক জাপানী কোম্পানি ব্যবসা পরিচালনা করছে। এই হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে আরও প্রতিষ্ঠান এ দেশে ব্যবসা স্থাপনে আগ্রহী হবে। জেটরোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইওজি আন্দো বলেন, জেটরো জাপান ডেস্কের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন ও প্রসারে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে জাপান ডেস্ক বিজনেস প্রমোশনের একটি হাব হিসেবে পরিণত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার সভাপতি আসিফ এ. চৌধুরী বলেন, জাপানের ব্যবসায়ীদের সংস্কৃতির স্তম্ভ হচ্ছে সেবা। কাজেই এ ডেস্ক থেকে সম্ভাব্য জাপানিজ বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হবে। অনুষ্ঠানে জাপান-বাংলাদেশ চেম্বারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০০৮ সালে স্থাপিত নিউ ভিশন সলিউশন লিমিটেডের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রায় ৯০টি কোম্পানিকে সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। স্থাপিত এই ডেস্কের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশেষ করে চট্টগ্রামের ব্যবসা ও বাণিজ্য বিষয়ক বাজার সমীক্ষা পরিচালনাপূর্বক প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সেবা প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জাপান বাংলাদেশ চেম্বারের উপদেষ্টা সালাহ্উদ্দীন কাসেম খান, ডেস্কের লিগ্যাল কাউন্সিল ব্যারিস্টার মিথি সানজানা, জেটরোর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ইউজি আন্দো, ঢাকায় জাপানিজ কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এ্যাসোসিয়েশন (জেসিআইএডি) সভাপতি হিকারি কাওয়াই, সেক্রেটারি তারিক রাফি ভূঁইয়া, জাপান ডেস্কের লিগ্যাল কাউন্সিলরের প্রতিষ্ঠাতা ও অপারেশনাল পার্টনার ব্যারিস্টার মিথি সানজানা। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালনা পর্ষদ সদস্য একেএম আক্তার হোসেন, মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, অঞ্জন শেখর দাশ, বেনাজির চৌধুরী নিশান, মোঃ ওমর ফারুক, হাসনাত মোঃ আবু ওবাইদা, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন, মোঃ ইফতেখার ফয়সাল, এস. এম. তাহসিন জোনায়েদ, মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম, তানভীর মোস্তফা চৌধুরী ও মোহাম্মদ নাসিরুল আলম ফাহিম, চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, প্রাক্তন পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী ও মাহফুজুল হক শাহ, জাপানের সাবেক অনারারী কনসাল জেনারেল নুরুল ইসলাম, জার্মানির অনারারী কনসাল সাকির ইস্পাহানি, দৈনিক পূর্বকোণের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, দৈনিক আজাদীর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক, বিএসআরএম চেয়ারম্যান আলী হুসেইন আকবর আলী, পেডরোলো চেয়ারম্যান নাদের খান এবং জাপানের দূতাবাস এবং বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা।
×