ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বৈঠক

দ্রুত পুঁজিবাজারে আনা হচ্ছে সরকারী কোম্পানির শেয়ার

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ৮ ডিসেম্বর ২০২১

দ্রুত পুঁজিবাজারে আনা হচ্ছে সরকারী কোম্পানির শেয়ার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারী কোম্পানিগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াবে সরকার। এছাড়া বাজারে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের শেয়ার আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এছাড়া সরকারী সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের শেয়ার যত দ্রুত সম্ভব পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার পুঁজিবাজার উন্নয়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি ফলপ্রসূ ও পুঁজিবাজার উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। গত কয়েক মাস ধরে পুঁজিবাজারে সূচকের ধারাবাহিক পতনের পর সরকারী বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। জানা গেছে, সরকারী ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে বর্তমানে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা বিশ্লেষণ হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর আর্থিক বিবরণীসহ সাম্প্রতিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের শেয়ার বাড়ানোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া বাজার চাঙ্গা করতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল), পাওযার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ, নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি, ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (ইজিসিবি), আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড, বি-আর পাওয়ার জেন লিমিটেড (বিআরপিএল) এবং গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডকে (জিটিসিএল) বাজারে আনার বিষয়ে কাজ শুরু করা হচ্ছে। হয়তো শীঘ্রই এসব কোম্পানির শেয়ার বাজারে আসবে। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নে ইতিবাচক সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে আগামী মাসের মধ্যে রূপালী ব্যাংকের শেয়ার আরও বাড়ানো হবে। সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর। পুঁজিবাজার উন্নয়নে আরও কিছু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা শীঘ্রই গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং শেয়ারবাজার কার্যক্রম সমন্বয় ও তদারকি কমিটির আহ্বায়ক মফিজ উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে মঙ্গলবারের বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি, এনবিআর, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) মনোনীত প্রতিনিধিসহ অর্থ বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের কিছু জানানো হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, পুঁজিবাজার উন্নয়নে ইতিপূর্বে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন অংশীজনদের কাছ থেকে যেসব প্রস্তাব এসেছিল, তার বাস্তবায়ন অগ্রগতি কত দূর এগিয়েছে এবং অসম্পূর্ণ পদক্ষেপগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন কীভাবে হবে এবং তার সমন্বয় ও তদারকিই বা কীভাবে করা যায় তা পর্যালোচনা করা হয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বন্ডে ব্যাংক ও অর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ এক্সপোজার লিমিটের (নির্ধারিত বিনিয়োগ সীমার) বাইরে রাখা না রাখার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আসে কিনা তা জানতে মুখিয়ে রয়েছে বিনিয়োগকারীরা। এই ‘এক্সপোজার লিমেট’ এর ‘গণনা পদ্ধতি’ নির্ধারণের বিষয়টি কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূল্যে বিবেচিত হবে, না ক্রয়মূল্যে হবে- তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
×