ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা-দিল্লী সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেয়ার অঙ্গীকার

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ৮ ডিসেম্বর ২০২১

ঢাকা-দিল্লী সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেয়ার অঙ্গীকার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ এবং ভারত তাদের অমীমাংসিত বিষয়গুলো মীমাংসার পাশাপাশি সংযুক্তি, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার মধ্যে এই আলোচনা হয়। দুই পররাষ্ট্র সচিব তাদের মধ্যকার আলোচনায় দুই দেশের সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেয়ার অঙ্গীকার করেন। এর আগে দুই দিনের সফরে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় আসেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী, তিনি দুপুরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করেন। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন তিনি। সফরের দ্বিতীয় দিন আজ বুধবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। বুধবারই তিনি দিল্লী ফিরে যাবেন। আলোচনা শেষে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আমরা প্রায় ৫০ মিনিট আলোচনা করেছি। ভারতের সঙ্গে আমাদের অমীমাংসিত ও বহুমাত্রিক অনেক বিষয় রয়েছে। সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সামনের দিনে কীভাবে এগিয়ে যাব, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফর করেছেন। এ বছরই ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বাংলাদেশে আসছেন, এটা একটা রেকর্ড। পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে সহযোগিতা, নতুন নতুন প্রযুক্তি সেগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশে আসতে পেরে তিনি খুবই আনন্দিত। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা আরও বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক ভালভাবে যাচ্ছে। দুই দেশের একসঙ্গে উদযাপন বিরল। বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণ ১৯৭১ সালে জীবন উৎসর্গ করেছিল। স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছিল। আপনাদের বিজয় দিবসের অংশ হতে পেরে আমরা গর্বিত। ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে আসছেন। এটা তাঁর প্রথম বাংলাদেশ সফর। গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় এসেছিলেন। সেটি ছিল কোভিডের সময় তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। এতে সম্পর্কের তাৎপর্য প্রতিফলিত। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সম্পর্কের সোনালি অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি। দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রে বড় কোনো বাধা নেই। কীভাবে সামনের দিনগুলোতে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সবুজ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল সহযোগিতা নিয়ে কথা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম যুক্ত। এতে দুই দেশের জনগণের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। সংযুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জানান, ১৯৬৫ সালের আগের ছয়টি সংযুক্তির মধ্যে পাঁচটি চালু হয়েছে, ষষ্ঠটি আগামী বছর শেষ হবে। আখাউড়া-আগরতলা নতুন প্রকল্প আগামী বছর চালু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুব শীঘ্রই দিল্লী সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা চাই তিনি ভারত সফর করুন। গত মার্চে ঢাকা সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এটি এখনও বহাল। দুই দেশের মধ্যে এ সফর সুবিধাজনক কোন সময়ে করা যায়, তা নিয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশেষ করে ওমিক্রনের কারণে উদ্বেগ আছে। তবে যত শীঘ্রই সম্ভব তিনি ভারত সফর করুন, আমরা এটা চাই। যত ডোজ টিকা লাগবে দেবে ভারত ॥ করোনাভাইরাসের যত ডোজ টিকার দরকার বাংলাদেশকে তা ভারত সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং সচিবের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাত করেন। বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, যত অমীমাংসিত সমস্যা আছে সবগুলোরই সমাধান হবে।
×