ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ডাঃ মুন্নি মমতাজ

ব্রেস্ট এবসেস বা ইনফেকশন

প্রকাশিত: ০০:০২, ৭ ডিসেম্বর ২০২১

ব্রেস্ট এবসেস বা ইনফেকশন

এটা স্তন্যদায়ী মায়েদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। অনেক সময় ব্যাকটেরিয়া আঘাতপ্রাপ্ত স্থান বিশেষ করে ক্রাক নিপেল দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে পুজ তৈরি করে। এটি খুব ব্যথাযুক্ত হয়। আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। ব্রেস্ট লাম্প বা ব্রেস্টে চাকা অনুভূত হওয়া মেয়েদের জন্য একটি বড় শঙ্কার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ব্রেস্ট লাম্প মানেই কিন্তু ক্যান্সার নয়। ক্যান্সার ছাড়াও ব্রেস্টে বিভিন্ন কারণে চাকা হতে পারে। ব্রেস্টে চাকা হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে। যা বিস্তারিত আলোকপাত করা হলো- ফাইব্রএডিনসিস কি সাধারণত ২২-২৩ বছর বয়সে হয়ে থাকে। এর কারণে মাসিকের আগে বুকে চাকা চাকা এবং ব্যথা অনুভব হয়, যা মাসিক হওয়ার পর কমে যায়। মাসিকের সময় যে হরমোন নিঃসরিত হয় তার কারণে ব্রেস্টের টিস্যুতে কিছু পরিবর্তন হয়, ফলে এই ধরনের অনুভূতি হয়। ফাইব্রএডিনোমা কি এটি একটি বিনাইন লাম্প। ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সে বেশি হয়। সাধারণত হঠাৎ করে বুকে এই চাকা ধরা পরে যা সহজেই নড়াচড়া করে এবং ব্যথাহীন হয়ে থাকে। এজন্য এ ধরনের চাকা কে ব্রেস্ট মাউস বলা হয়। সাইজ ছোট হলে আপনা আপনি মিলিয়ে যেতে পারে, তবে বড় হলে অপারেশন করে অপসারণ করতে হয়। ব্রেস্ট সিস্ট আছে? সিস্ট হচ্ছে পানি ভর্তি টিউমার। এগুলো যে কোন বয়সে হতে পারে, তবে নারীদের মেনপোজের আগে বেশি হয়। সিস্টগুলো মসৃণ ও গোলাকার হয়ে থাকে। এর চিকিৎসা হচ্ছে নিডেলের মাধ্যমে পানি অপসারণ করা। ব্রেস্ট এবসেস বা ইনফেকশন কি? এটা স্তন্যদায়ী মায়েদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। অনেক সময় ব্যাকটেরিয়া আঘাতপ্রাপ্ত স্থান বিশেষ করে ক্রাক নিপেল দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে পুজ তৈরি করে। এটি খুব ব্যথাযুক্ত হয়। চিকিৎসা হিসেবে ব্যথার ওষুধ, এন্টিবায়োটিক, গরম কমম্প্রেশন দেয়া হয়। পুজ বা এবসেস বড় থাকলে সার্জারির মাধ্যমে ড্রেইন করে নিয়মিত ড্রেসিং করার দরকার হয়। ফ্যাট নেক্রসিস কান কারনে ব্রেস্ট আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্রেস্টের ফ্যাটি টিস্যু নেক্রসিস হয়ে চাকা তৈরি করে। এগুলো সাধারণত ধীরে ধীরে অপসারিত হয়, কিছু ক্ষেত্রে সার্জারি করার দরকার হয়। লাইপোমা কি এটা ফ্যাটি টিস্যুর টিউমার, যা ক্যান্সার নয়। সাইজ বড় হলে সার্জারি করা অপসারণ করা লাগে। ব্রেস্ট ক্যান্সার ব্রেস্টে চাকার একটি কারণ হচ্ছে ক্যান্সার। অন্যান্য চাকার সঙ্গে এর পার্থক্য হলো এটি সহজে নড়াচড়া করানো যায় না, উপরিভাগ অমসৃণ ও সাধারণত ব্যথাহীন হয়ে থাকে। কিভাবে ব্রেস্টের চাকা বুঝতে পারবেন? ১, স্তন পরীক্ষা করুন : সেলফ এক্সামিনেশন এর মাধ্যমে নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করে দেখা যায়। প্রতি মাসে মাসিকের পর আপনি ঘরে বসেই আপনি এ পরীক্ষা করতে পারেন। কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন? যে কোন চাকা অনুভব হলে অবশ্যই ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে এর ধরন নির্ণয় করতে হবে, বিশেষ করে চাকাটি যদি মাসিক হওয়ার পরও মিলিয়ে না যায়, আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে অথবা ব্যথা থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চামড়ায় কোন পরিবর্তন? ব্রেস্টের চামড়ায় কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করলে যেমন, কুঁচকানো ভাব, লোমকূপের ছিদ্র বড় হয়ে যাওয়া। নিপেল ভেতরের দিকে ঢুকে গেলে অথবা এ থেকে কোন অস্বাভাবিক ডিসচার্জ বা রস বের হলে। কি কি পরীক্ষার দরকার হতে পারে? চাকার কারণ নির্ণয়ের জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার হয়, যেমন আল্ট্রাসনোগ্রাম, এফএনএসি, বায়োপসি, ম্যামোগ্রাফি ইত্যাদি। ক্যান্সার প্রতিরোধের কিছু উপায় যাদের ফ্যামিলিতে ব্রেস্ট ক্যান্সারের হিস্ট্রি আছে তাদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। এছাড়া সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ওজন নিয়ন্ত্রণ, হরমোনাল পিল ৩-৫ বছরের অধিক গ্রহণ না করা এবং শিশুকে সঠিকভাবে বুকের দুধ পান করালে ব্রেস্ট ক্যান্সারের প্রতিরোধোক হিসেবে কাজ করে। এসব বিষয়ে সচেতনার বিকল্প নেই। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। লেখক ও পরামর্শক জেনারেল, ব্রেস্ট, প্লাস্টিক ও কসমেটিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক, তায়রুন্নেসা মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতাল। চেম্বার : মেডিনোভা মেডিক্যাল সার্ভিসেস লি. মালিবাগ শাখা, হোসাফ টাওয়ার, ৬/৯, আউটার সার্কুলার রোড, মালিবাগ মোড়, ঢাকা। প্রয়োজনে : ০১৭৯০-১১৮৮৫৫
×