ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে

প্রকাশিত: ২৩:১৮, ৭ ডিসেম্বর ২০২১

বিএনপি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুঁজি করে বিএনপি রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি ক্রমাগত মনগড়া বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে, যা তাদের নেতাদের কাছেই একদিন জবাবদিহি করতে হবে। সোমবার রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ সফলভাবে পালনের লক্ষ্যে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও সকল কাউন্সিলর এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ‘আবোল তাবোল বকছেন’। দলটির নেতারা বক্তব্য দেয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের সীমা লঙ্ঘন করছেন। কখন যে কী বলছেন, তার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছেন না। ফখরুল সাহেবও ইদানীং আবোল তাবোল বক্তব্য রাখছেন। তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের দিবাস্বপ্ন দেখছে। এ স্বপ্ন একদিন দুঃস্বপ্নের নামান্তর হবে। ‘বেগম জিয়া না থাকলে আওয়ামী লীগ থাকবে না’-বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে তিনি হয়ত বলতে চেয়েছিলেন, খালেদা জিয়া না থাকলে বিএনপি থাকবে না। হয়ত খেই হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। খালেদা জিয়া না থাকলে আওয়ামী লীগ কেন থাকবে না? তিনি বলেন, খালেদা জিয়া না থাকলে বিএনপি না থাকার প্রশ্ন থাকতে পারে। আওয়ামী লীগ জনগণের মাঝ থেকে বেড়ে ওঠা রাজনৈতিক দল। যতদিন বাংলার ভুখ- থাকবে, লাল সবুজের পতাকা থাকবে ততদিন আওয়ামী লীগ এই বাংলার মাটিতে থাকবে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে অতি রাজনীতির জন্য বিএনপি’র নেতাদেরই একদিন দলের ভেতরে জবাবদিহি করতে হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম জিয়ার চিকিৎসা বিএনপির অতি রাজনীতির শিকার বলে দেশের জনগণ মনে করে। তাদের এত বাঘা বাঘা আইনজীবী তাঁর মামলা নিয়ে দীর্ঘ কালক্ষেপণ করা, তাদের অতি রাজনীতিরই ফল। ‘খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে’-মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির লোকজন, তাঁর গৃহপরিচারীকারা, তাঁদের চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার আশেপাশে থাকে। আওয়ামী লীগের লোকজন কীভাবে স্লো পয়জনিং করবে? এটা হাস্যকর ব্যাপার। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে অতি রাজনীতির জন্য একদিন বিএনপির নেতাদের তাদের দলের ভেতরে জবাবদিহি করতে হবে। ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবসের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই দিন এরশাদের নেতৃত্বাধীন স্বৈরশাসনের পতন ঘটে। স্বৈরাচারের পতন হলেও এখনও দেশে গণতন্ত্রের শত্রুরা, স্বাধীনতার শত্রুরা তৎপর। দেশের উন্নয়ন, স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে এদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তারা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়, সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। নেতাকর্মীদের আরও সুসংগঠিত থাকতে হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ সফলভাবে পালনের লক্ষ্যে ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একযোগে সারা জাতিকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। এ ছাড়াও দলের অন্যান্য কর্মসূচীর কথা তুলে ধরে তিনি জানান, ১৬ ডিসেম্বর সকালে সাভার ও বঙ্গবন্ধু ভবনে আওয়ামী লীগসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মী শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। ১৭ ডিসেম্বর সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে দেশী-বিদেশী অতিথিদের নিয়ে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ১৮ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটায় শিখা চিরন্তন থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা করবে আওয়ামী লীগ। ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল, এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
×