ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্যারাডাইস ও পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি

৪৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ৭ ডিসেম্বর ২০২১

৪৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অর্থপাচারকারী ৪৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৯ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন আকারে হাইকোর্টকে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সময় আদালত বলেছেন, দেশের অর্থপাচার বন্ধে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। আমরা কেউ চাই না এত রক্ত দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশে দুর্নীতি হোক। যেভাবে অর্থপাচার হচ্ছে, আমাদের তো মাঝে মাঝে ঘুম হয় না। আমরা কেউ বসে থাকতে পারি না। কাউকে না কাউকে কাজ করতে হবে। অর্থপাচারকারী হিসেবে প্যারাডাইস ও পানামা পেপার্সে যেসব বাংলাদেশীর নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে বিএফআইইউ ও সিআইডি কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৯ জানুয়ারি প্রতিবেদন আকারে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ৪৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা দাখিলের পর শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ আদেশ প্রদান করেছেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম। দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। কর ফাঁকি দিয়ে নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়া, আইন অমান্য করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার ও অবৈধ আয়ে বৈধ ক্ষমতার মালিক হওয়া নিয়ে ২০১৬ সালের এপ্রিলে পানামা পেপারস নামে দুর্নীতির সংবাদ আসে বিশ্ব গণমাধ্যমে। বিশ্বের সাবেক ও বর্তমান শতাধিক রাষ্ট্রনায়ক ও রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, খেলোয়াড়, অভিনেতা, শিল্পী অনেকের নাম ছিল এ তালিকায়। ২০১৭ সালের ৫ নবেম্বর প্রকাশ হয় একই ধরনের আরেকটি তালিকা, যা পরিচিতি পায় প্যারাডাইস পেপারস নামে। এখনও এই পেপারে থাকা নানা নাম প্রকাশ হচ্ছে। এই দুই পেপারসেই বাংলাদেশের কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে। এর আগে গত রবিবার একই বেঞ্চে অর্থপাচারে জড়িত ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশের এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম বহুল আলোচিত পানামা ও প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারিতে এসেছিল। এ সময় আদালত বলেন, আমাদের দেশে দুর্নীতিবিরোধী কোন সংগঠন নেই। ভারতে আছে, তারা মানববন্ধন ও আন্দোলন করেন। আমরা কেউই চাই না, এত রক্ত দিয়ে জীবন দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশে দুর্নীতি হোক। এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রতিবেদন তৈরি করা হয় বলে জানান দুদকের আইনজীবী। গত রবিবার প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হলে শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য রাখেন আদালত। পানামা পেপারস বিষয়ে ১৪ নাম : তালিকায় ১৪ জনের মধ্যে রয়েছেন- বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী, সেতু কর্পোরেশনের পরিচালক উম্মে রুবানা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সিডব্লিউএন (এ) আজমত মঈন, বনানীর সালমা হক, এস এম জোবায়দুল হক, বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার সৈয়দ সিরাজুল হক, ধানম-ির দিলীপ কুমার মোদি ও শরীফ জহির, গুলশানের তারিক ইকরামুল হক, ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা, পরিচালক খন্দকার মঈনুল আহসান শামীম, পরিচালক আহমেদ ইসলাইল হোসেন ও পরিচালক আখতার মাহমুদ। প্যারাডাইস পেপারসে ২৯ নামের মধ্যে প্রথম পর্বের ১০ জন হলেন- মাল্টিমোড লিমিটেডের আবদুল আউয়াল মিন্টু, নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, তাবিথ আউয়াল, তাফসির আউয়াল, তাজওয়ার মোঃ আউয়াল, নিউইয়র্কের তাইরন পিআইএর মোগল ফরিদা ওয়াই, যুক্তরাষ্ট্রের শহিদ উল্লাহ, বনানীর চৌধুরী ফয়সাল, বারিধারার আহমাদ সামির ও মহাখালীর ব্রোমার এ্যান্ড পার্টনারস এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড। দ্বিতীয় পর্বের ১৯ জন হলেন- ভেনাস ওভারসিস কোম্পানির মুসা বিন শমসের, বারিধারার ডাইনামিক এনার্জির ফজলে এলাহী, ইন্ট্রিপিড গ্রুপের কে এইচ আসাদুল ইসলাম, খালেদা শিপিং কোম্পানির জুলফিকার আহমেদ, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের তাজুল ইসলাম তাজুল, বেঙ্গল শিপিং লাইনসের মোহাম্মদ মালেক, সাউদার্ন আইস শিপিং কোম্পানির শাহনাজ হুদা রাজ্জাক, ওসান আইস শিপিং কোম্পানির ইমরান রহমান, শামস শিপিং লিমিটেডের মোহাম্মদ এ আউয়াল, উত্তরার এরিক জনসন এ্যান্দ্রেস উইলসন, ইন্ট্রিডিপ গ্রুপের ফারহান ইয়াকুবুর রহমান, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের তাজুল ইসলাম, পদ্মা টেক্সটাইলের আমানুল্লাহ চাগলা, নিউটেকনোলজি ইনভেস্টমেন্টের মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান, মাল্টার মোহাম্মদ রেজাউল হক, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ কামাল ভূঁইয়া, তুহিন-সুমন, সেলকন শিপিং কোম্পানির মাহতাবা রহমান, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ফারুক পালওয়ান ও গ্লোবাল এডুকেশন সিস্টেমের মাহমুদ হোসাইন।
×