ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে

প্রকাশিত: ২১:৪০, ৬ ডিসেম্বর ২০২১

বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের চলমান অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বাজেট বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তা প্রয়োজন বলে মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও গতিশীলতা আনয়নের পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এজন্য বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। রবিবার রাজধানী ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ও বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মি.হার্টউইগ শ্যেফার নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের মাঝে একটি দ্বিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা শেষে অর্থমন্ত্রী দেশের চলমান অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, অগ্রাধিকার প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তা প্রয়োজন। অন্যদিকে, মি.হার্টউইগ বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেছেন, বিশ্বব্যাংক সব সময় বাংলাদেশের পাশে আছে। আগামীতেও বাংলাদেশে তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এজন্য তিনি বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন ওই বৈঠকে। সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা সীমিত পরিসরে বৈঠকটি দ্রুত সম্পন্ন করেন। সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী ভাইস প্রেসিডেন্ট মি.হার্টউইগ শ্যেফারকে বাংলাদেশ সফরের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অর্থমন্ত্রী। সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির গতিধারা ব্যাখ্যা করে তুলে ধরেন। তিনি জানান, দেশের রফতানি আয় ২৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫-৪৬ বিলিয়ন ডলার, ঋণ-জিডিপির অনুপাত এখনও ৪০ শতাংশের নিচে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি বিশ্বের অন্য সকল দেশের মতো বাংলাদেশে বাড়লেও এখনও ৬ শতাংশের নিচে রয়েছে। এছাড়া রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে প্রায় ১৭ শতাংশ, খেলাপী ঋণ ৮.১ শতাংশে নেমে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম কোয়ার্টারে ঋণস্থিতি বেড়েছে প্রায় ৯.৫ শতাংশ, ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসের সাময়িক হিসাবে নিট প্রফিট করেছে। ব্যাংকের ঋণের সুদের হার ৭.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ভিত যথেষ্ট মজবুত রয়েছে এবং করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে এমন অর্থনৈতিক সক্ষমতা ধরে রাখা বিরল। তিনি বিবিএসের অতি সাম্প্রতিক তথ্য তুলে ধরে জানান, বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৩৮ বছরের মাথায় ১০০ বিলিয়ন ডলার জিডিপির মাইল ফলক স্পর্শ করেছিল। আর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির অব্যবহিত পূর্বে বাংলাদেশ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ও সাহসী নেতৃত্বে মাত্র ১২ বছরের মাথায় তা ৪ গুণ বেড়ে ৪১১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেছে। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে অর্থনীতি যে কোভিড-১৯কে মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এর জন্য সবচেয়ে বড় কৃতিত্বের অধিকারী দেশের সাধারণ মানুষ, যারা অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের হার্টউইগ শ্যেফার কোভিড-১৯ থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ভাল করছে এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
×