ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসটি দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

বাউফল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসটি দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী ॥ বাউফল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসটি দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এ অফিসে সরকারী কোন বিধান মানা হয়না। ইচ্ছমত দলিল রেজিস্ট্রি ফি আদায় করা হয়। দানপত্র বা হেবা দলিল রেজিষ্ট্রি করতেও অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয়। সাব-রেজিস্ট্রার, অফিস সহকারী ও মোহরার আদায়কৃত টাকা ভাগবাটোরা করে নেন। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিধান অনুযায়ি দলিল রেজিস্ট্রি করতে স্টাম্প ফি ১ লাখ টাকায় ১হাজার ৫শ, রেজিস্ট্রেশন ফি ১ হাজার, ইফি ১শ, এনফি ২শ৪০, স্থানীয় কর ৩ হাজার টাকাসহ উৎসহ কর পৌরসভার বাইরে ১ লাখে ১ হাজার টাকা, ও পৌরসভার মধ্যে ১ লাখে ২ হাজার টাকা ও এনএন ফি ৩শ৬০ হলেও দ্বিগুন বা তার বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে। সন্দেহভাজন দলিল রেজিস্ট্রি করতে জমির মোট মূল্যের অর্ধেক টাকা দিতে হয়। হেবা দলিল রেষ্ট্রি করতে সরকার নির্ধারিত এ ফি ১শ টাকা, ই ফি ১শ টাকা, এন ফি ২শ৪০ টাকা,এনএন ফি ৩শ৬০ নেয়া কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা। অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও আমমোক্তার দলিলে সরকার নির্ধারিত মোট ৫শ৪০ টাকা নেয়া কথা থাকলেও ইচ্ছেমত টাকা আদায় করা হচ্ছে। দলিলের সই মোহর কপি পাতা প্রতি জেএ ১৫টাকা করে জেপি ১৬ টাকা, জিজি ২৪ টাকা করে মোট নকলের উপর ১হাজার ২শ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও নেয়া হয় ১হাজার ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা । এ ছাড়াও একটি দলিলের নকল কপিতে সাবরেজিস্ট্রার নেন ২শ৫০ টাকা করে। এ ছাড়াও কবলা দলিলে ১ লাখ টাকা থেকে ৩লাখ পর্যন্ত প্রতি লাখে ১হাজার ৫শ টাকা করে মোট ৪হাজার ৫শ টাকা এবং ৩ লাখ টাকার উপরে প্রতি ১ লাখে ১হাজার টাকা করে নেয়া হয়। এর ফলে দলিল দাতাও গ্রহিতা উভয়ই আর্থিক ক্ষতিসহ হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। সাবরেজিষ্ট্রার হাফিজা হাকিম রুমা সপ্তাহে তিন দিন অফিস করেন। রবিবার ও সোমবার কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেননা। ওই সময় তিনি ঢাকা পরিবারের সাথে সময় কাটান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, দলিল রেজিস্ট্রির সময় অফিস সহকারী শিউলি বেগম, মোহরার বাবুল হোসেন, রাবেয়া বেগম ও আবুল বশারের মাধ্যমে সাবরেজিস্ট্রার এই অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের অধিকাংশ কর্মচারীরা নিয়মানুযায়ি অফিসের কাজ করেননা। তারা নকল নবীশ দিয়ে অফিসের কাজ করান । অথচ নকল নবীশরা সরকারী লোক নয়। রবিবার সকাল ১০টার দিকে সরেজমিন উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে সাবরেজিস্ট্রারকে পাওয়া যায়নি। অফিস সূত্রে জানা গেছে তিনি ঢাকা রয়েছেন। এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার হাফিজা হাকিম রুমা রুমার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে জেলা সাবরেজিষ্ট্রার মহাসিন আলমের সাথে তার মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি বলেন,‘ এ সব অভিযোগের বিষয়ে আমি অবহিত নই। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তিনি অতিরিক্তি ফি নেয়ার বিষয়ে বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত ফি নেয়া হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
×