ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনের পর নূরুল হুদার শহীদ হওয়ার খবর পায় পরিবার

প্রকাশিত: ০২:০০, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

স্বাধীনের পর নূরুল হুদার শহীদ হওয়ার খবর পায় পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ১৯৭০ সালে সরকারী বৃত্তি নিয়ে এমফিল করার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন মেধাবী নুরুল হুদা। একাত্তরের প্রথমার্ধ ছিল তার উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মধ্যপর্যায়। কিন্তু ঠিক ওইসময় দেশে শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধের আন্দোলন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে তখন তিনি দেশে ফিরে আসাকেই সুবিবেচনার কাজ বলে মনে করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে শুধু দেশের প্রয়োজনে লন্ডনে উচ্চশিক্ষার সুযোগ বিসর্জন দিয়ে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ১৯৭১ সালের ১৫ জুলাই পাক সেনারা তাকে (নুরুল হুদা) বরিশাল থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর তার আর কোন খোঁজ মেলেনি। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে সংগঠকের ভূমিকা পালন করায় পাক সেনারা অপহরণের পর হত্যা করেছিল বরিশাল বিএম কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বুদ্ধিজীবী এসএম নুরুল হুদাকে। তার পরিবার আজও জানেন না নুরুল হুদার লাশ কোথায় দাফন কিংবা ফেলা হয়েছে। জানা গেছে, বরিশাল বিএম কলেজের ইউটিসি ইউনিট প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা ইন্টারমিডিয়েট হোস্টেলে তাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করেন। নুরুল হুদা এ প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গঠনে সহায়তা করে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের একজন সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ২৬ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী বরিশাল দখল করে। পরে পাক সেনারা ওই হোস্টেলে একটি ক্যাম্প স্থাপন করতে চাইলেও তিনি কৌশলে তা প্রত্যাখ্যান করেন। এতে পাক সেনারা বিরাগভাজন হয়। দেশ স্বাধীনের পর বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের তৎকালীন সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ আমিনুল ইসলাম আমাদের জানিয়েছিলেন, মেডিক্যাল কলেজের বিপরীতদিকে ওয়াপদায় ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বরিশাল সদর দফতর ও ক্যাম্প। একাত্তরের ১৬ জুলাই ওই ক্যাম্পে সেনাদের চিকিৎসার জন্য তাকে নেয়া হয়েছিল। সেখানে তিনি কয়েকটি লাশ দেখতে পেয়েছেন। যা আগের রাতে হত্যা করা হয়। লাশগুলোর মধ্যে নুরুল হুদার লাশও দেখতে পেয়েছেন।
×