ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জয়ের স্বপ্ন পূরণ

প্রকাশিত: ০০:৫২, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

জয়ের স্বপ্ন পূরণ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথমে পঞ্চগড়ের শরিফুল ইসলাম, তারপর চাঁদপুরের শামীম হোসেন পাটোয়ারি। এবার চাঁদপুরের তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়। প্রথম দুইজনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে স্বল্প পরিসরে। আর জয়ের হলো আরও বড় ও মর্যাদার মঞ্চ টেস্টে। যুব বিশ^কাপজয়ী দলের এ তিন সদস্যই এখন জাতীয় দলের খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছেন দেড় বছরের মধ্যে। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে ৯৯তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হয়েছে ডানহাতি টপঅর্ডার ২১ বছর ২১ দিন বয়সী জয়ের। সত্য হয়েছে তার স্বপ্ন। এক ঝাঁক বাঁহাতিতে ভরপুর বাংলাদেশের টপঅর্ডারে একমাত্র ডানহাতি হিসেবে যেমন এগিয়ে ছিলেন তেমনি চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোয়াডে ডাক পাওয়ার পর থেকেই অনুশীলনে যেভাবে তাকে অনুশীলনে বাড়তি যতœ নেয়া হয়েছে তাতেই ভাগ্যের শিকে ছিঁড়েছে জয়ের। তাকে টেস্ট ক্যাপ পরিয়েছেন তারই ‘আইডল’ সাকিব আল হাসান। জয় পেয়েছেন ৭১ নম্বর জার্সি। বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য ওপেনার তামিম ইকবাল দীর্ঘদিন ইনজুরি সমস্যায় খেলতে পারছেন না। তারপর থেকেই টেস্ট ক্রিকেটে ওপেনিং জুটি নিয়ে সমস্যায় আছে বাংলাদেশ। সাইফ হাসান, সাদমান ইসলাম সর্বশেষ দুই টেস্টে ওপেনিং করেছেন। তবে সাইফ টাইফয়েড আক্রান্ত হয়ে ছিটকে যাওয়ার পর জয়ের নামটাই চলে আসে সামনে। কারণ, এই মুহূর্তে টপঅর্ডারে একমাত্র ডানহাতি তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে সাধারণত ওয়ানডাউন ব্যাটার হলেও এবার হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওপেনার হিসেবেই যাত্রা শুরু হবে তার। চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোয়াডে ঠাঁই পেয়ে প্রথমবার জাতীয় দলে ডাক পান, অভিষেকের গুঞ্জনও জোরালোভাবে শোনা গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত নতুন ও অনভিজ্ঞ জয়ের পরিবর্তে সাইফই সুযোগ পান। অবশেষে ভাগ্যের শিকে ছিঁড়েছে জয়ের। গত বছর যুব বিশ^কাপজয়ী দলের অন্যতম গর্বিত সদস্য ছিলেন জয়। নিউজিল্যান্ড যুবাদের বিপক্ষে সেমিফাইনালে জয়ের সেঞ্চুরিতেই ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশের যুবারা। সেই দলের বাঁহাতি পেসার শরিফুল সবার আগে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়ান টি২০ দিয়ে। তিন ফরমেটেই অবশ্য পরে খেলেছেন। তারপরে যুব বিশ^কাপ দলের অলরাউন্ডার শামীমের টি২০ অভিষেক হয় বাংলাদেশের জার্সিতে। এবার সেই দলের জয় টেস্টে অভিষেক ক্যাপ পেয়েছেন। ছোটবেলা থেকে টেপ টেনিসে ক্রিকেট খেলতেন এবং খেলার জন্য পাগল ছিলেন জয়। কিন্তু এলাকার বড় ভাইয়েরা তখন ব্যাটিং করতে দিত না। শুধু ফিল্ডিং করে বিষন্ন মনে বাড়ি ফেরার সময়ে জিদ কাজ করতো একদিন ভাল ব্যাটার হয়ে ওঠার। যুব বিশ^কাপ জিতে তা হয়েছেন আগেই, এবার জাতীয় দলে অভিষেক হওয়ার পর যেন জিদটাই পূরণ হলো জয়ের। ভারতের সাবেক মিডলঅর্ডার রাহুল দ্রাবিড়কে তার ধীরস্থির আর দৃঢ়তাপূর্ণ ব্যাটিংয়ের জন্য বলা হতো- ‘দ্য ওয়াল’। তাকে এবং দেশে সাকিবকে দারুণ পছন্দ জয়ের। তিনি টেস্ট দলে ডাক পাওয়ার পর জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ টিমে হতে চান দ্য ওয়াল। আর সাকিবের আক্রমণাত্মক মনোভাবের জন্য তাকেও আবার পছন্দ। তেমন মনোভাবও রাখতে চান। সেই প্রিয় সাকিবের কাছ থেকেই পেয়েছেন তিনি ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্ট ক্যাপ। তিনি দলে ডাক পাওয়ার পর বলেছিলেন, ‘সবারই স্বপ্ন থাকে টেস্ট স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়ার। জাতীয় লীগে কয়েকটি ভাল ইনিংস খেলেছি। আত্মবিশ্বাস এখন ভাল আছে। সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা নেই। সুযোগ পেলে নিজের স্বাভাবিক ব্যাটিং করার চেষ্টা করব।’
×