ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীতে শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যম কর্মী নিহত

প্রকাশিত: ২৩:৩০, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

রাজধানীতে শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যম কর্মী নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে লরির চাপায় এক শিক্ষার্থী ও কলেজগেট এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় এক সংবাদকর্মী নিহত হয়েছেন। তারা হলেন- গ্রীন ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান লিমন (২২) ও দৈনিক সংবাদের সম্পাদনা সহকারী এমদাদ হোসেন (৬০)। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে পৃথক দুর্ঘটনা দুটি ঘটে। দুর্ঘটনার সময় তারা মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। নিহত শিক্ষার্থী লিমনের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট মোঃ মোজাম্মেল হক জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার দমদমা পশ্চিম গ্রামে। তিনি থাকেন চট্টগ্রামে। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে ছেলের লাশ দেখতে পান। দুই ছেলে, এক মেয়ের মধ্যে লিমন ছিল মেজ। লিমনের খালা মিতা চৌধুরী বলেন, লিমন শেওড়াপাড়ার গ্রীন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিল। উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর কামারপাড়ায় থেকে পড়াশোনা করত। শুক্রবার ইউনিভার্সিটি বন্ধ থাকায় জিগাতলায় আমার বাসায় ছিল। তার মা অসুস্থ থাকায় গ্রাম থেকে ঢাকায় আসছিলেন। রাতে জিগাতলা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে উত্তরায় যাচ্ছিল তার মাকে আনতে। রাতেই পুলিশের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ পাই। ছেলের মৃত্যুর খবর না দিয়েই লিমনের মাকে মাঝ রাস্তা থেকে বাড়িতে চলে যেতে বলা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে লাশ দাফন করা হবে। বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আসাদুজ্জামান শেখ জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিমানবন্দর কাউলা পদ্মওয়েল আউটগোয়িং রাস্তায় একটি লরি পেছন থেকে ওই যুবককে ধাক্কা দেয়। এতে বাইক থেকে পড়ে গেলে লরির চাকা তার মাথার ওপর দিয়ে উঠে যায়। এ সময় তার মাথায় থাকা হেলমেটটিও গুঁড়িয়ে যায়। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিলে রাত ৩টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনার পর তার কাছে থাকা মোবাইলফোনের মাধ্যমে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পরিচয় জানা যায়। লরিটি আটক করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গণমাধ্যম কর্মী ॥ এদিকে, শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মিরপুর রোডের কলেজ গেটে মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের সামনে ট্রাকচাপায় এমদাদ হোসেন নামে এক গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি দৈনিক সংবাদের সম্পাদনা সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনায় ট্রাকের চালক ও ট্রাকটি শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত আড়াইটার দিকে একটি মোটরসাইকেলকে দ্রুতগতির একটি ট্রাক চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা মোহাম্মদপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সংবাদকর্মীর ছোট ভাই সেলিম জানান, রাতে ছোট বোনকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করে ডেমরার শারুলিয়ার বাসায় ফিরছিলেন বড় ভাই এমদাদ। পথে মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের সামনে এলে একটি ট্রাক ভাইকে মোটরসাইকেলসহ চাপা দেয়। পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, আমার ভাই আর নেই। আমার ভাই দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক সংবাদে সম্পাদনা সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। তার ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। ঘাতক ট্রাকটি কেউ আটক করতে পারেনি। উল্লেখ্য, গত ২৪ নবেম্বর রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নাঈম হাসান নামে নটর ডেম কলেজের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এর ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই পান্থপথ মোড়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লাবাহী গাড়ির চাপায় গণমাধ্যমকর্মী মোঃ আহসান কবির খান নিহত হন। এরপর গত ২৯ নবেম্বর রামপুরায় দুই বাসের রেষারেষিতে প্রাণ যায় এসএসসির ফলপ্রত্যাশী মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয়ের। এরই মধ্যে একদিনে আরও দুজনের প্রাণ ঝরল।
×