ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সীতাকুন্ডে ৮ স্লুইচ গেটই দীর্ঘদিন অকেজো

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ৪ ডিসেম্বর ২০২১

সীতাকুন্ডে ৮ স্লুইচ গেটই দীর্ঘদিন অকেজো

সংবাদদাতা, সীতাকুন্ড ॥ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ এলাকায় তৈরি করা ৮টি স্ল্যুইস গেট। দীর্ঘদিন অকেজো থাকায় এ সব গেট উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষকদের কোন কাজে আসছে না। স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপজেলার কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, মুরাদপুর, বাড়বকুন্ড, সৈয়দপুর, বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের জলাবদ্ধতা নিরসনে নির্মিত স্ল্যুইস গেটগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এতে করে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে এখানকার অধিকাংশ ধানক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। ফলে এ সব এলাকায় নোনা পানির প্রভাবে একদিকে জমিতে ফলন কমে গেছে, অন্যদিকে প্রতি বর্ষা মৌসুমে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। মুরাদপুর ইউনিয়নের গোপ্তাখালী গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, গত বছর জলাবদ্ধতার কারণে তার বীজতলার সব চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বাধ্য হয়ে তিনি চড়া দামে বীজ কিনে দ্বিতীয়বারের মতো ধানের চারা রোপণ করেন। একই এলাকার কৃষক দিদারুল আলম বলেন, বর্ষার আগে যদি স্ল্যুইস গেটগুলো সংস্কার করা না হয়, তাহলে বৃষ্টি ও বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া গত বছর আমন ক্ষেত পানিতে ডুবে থাকায় ধানের ভাল ফলন হয়নি। এ বছরও এই স্ল্যুইস গেটগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া না হলে অনেক কৃষকের পরিবারকে না খেয়ে থাকতে হবে। জানা গেছে, সাগরের জোয়ারের পানি যাতে গেটগুলো অতিক্রম করে খাল দিয়ে লোকালয়ে আসতে না পারে, সে জন্য প্রত্যেকটি খালের মুখে জোয়ার নিয়ন্ত্রক স্থাপন করার কথা ছিল। তবে কোনটিতে এ সব স্থাপন করা হয়নি। লোহা চোরদের টার্গেটে পড়ে রয়েছে প্রতিটি স্ল্যুইস গেটের মুখ। অনেক স্ল্যুইস গেটের নিচের অংশ মাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। কুমিরা ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন স্ল্যুইস গেটগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছে কৃষকেরা। এগুলো সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ড উদাসীন মনোভাব দেখাচ্ছে। এ কারণে প্রতিবছর স্থানীয় কৃষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘স্ল্যুইস গেটগুলো সংস্কারে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। এই মৌসুমে বিকল স্ল্যুইস গেটগুলোর কাজ করা হবে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।’ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকোশলী এসএম তারেক বলেন, ‘উপজেলার আটটি স্ল্যুইস গেট সংস্কারে যে পরিমাণ বরাদ্ধ প্রয়োজন, তা আমাদের নেই। তবে অকেজো এ সব স্ল্যুইস গেট সংস্কার এবং নতুন স্ল্যুইস গেট নির্মাণের জন্য বরাদ্ধ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে।
×