ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধায় হাইব্রিড মরিচ উৎপাদনে চরাঞ্চলের আশার আলো

প্রকাশিত: ১৮:৪৩, ৩ ডিসেম্বর ২০২১

গাইবান্ধায় হাইব্রিড মরিচ উৎপাদনে চরাঞ্চলের আশার আলো

সংবাদদাতা, গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধার ফুলছড়িতে চরের সবচেয়ে লাভজনক ফসল মরিচ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মরিচ উৎপাদন করে এখানকার কৃষকরা বেশ লাভবান হয়েছেন। চরের উৎপাদিত মরিচ যাচ্ছে ঢাকা, রংপুর, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে মরিচ চলে যাচ্ছে বিভিন্ন কো¤পানিতে। দেশে এ অঞ্চলের মরিচের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত ফুলছড়ি ইউনিয়নের গাবগাছি গ্রামের কৃষক নুরুজ্জামান এ বছর ছয় বিঘা জমিতে বগুড়ার দেশি জাতের লম্বা মরিচ লাগিয়েছেন। তার ওই জমিতে পরিমাণমতো গোবর ও সার ব্যবহার করার ফলে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি বলেন, মরিচ চাষ করতে প্রায় এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। ওই ছয় বিঘা জমি থেকে কাঁচামরিচ উৎপাদন হবে প্রায় ৯০ থেকে ১০০ মণ। বর্তমান বাজার এক মণ কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা দরে। আবার ওই মরিচই যদি শুকানো যায়, তাহলে ১৫ থেকে ১৮ মণ শুকনো মরিচ হবে। পুরোনো এক মণ শুকনো মরিচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রায় ছয় হাজার টাকা। সে হিসাব অনুযায়ী দাম হচ্ছে পাঁচ লাখ ৪০ হাজার টাকা।গাইবান্ধার সবচেয়ে বড় মরিচের হাট ফুলছড়ি। প্রতি হাটে প্রায় ১৩০ থেকে ১৪০ মণ কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে বলে জানান হাটের ইজারাদার।চরাঞ্চলের কৃষকদের মরিচের ঘাটতি পূরণে গাইবান্ধার স্থানীয় আমদানি ও রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আরিফ ট্রেডার্স নিজস্ব অর্থায়নে উন্নত প্রযুক্তির হাইব্রিড মরিচ উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়। চরের উর্বর মাটিতে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নে মরিচ চাষের জন্য ৮০ বিঘা জমি লিজ গ্রহণ করা হয়। যমুনার জেগে ওঠা চরের জমিতে মরিচ চাষের প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিয়েছেন তারা। ৮০ বিঘা বিশাল এলাকাজুড়ে চাষ করা হয় হাইব্রিড জাতের মরিচ। উর্বর মাটির কারণে চরের জমিতে মরিচের ফলন ভালো হয়। ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় প্রায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে এবার মরিচের চাষ করা হয়েছে। ভাদ্র মাসের শেষে এবং আশ্বিন মাসের প্রথম সপ্তাহে মরিচ চাষের উপযুক্ত সময়। পৌষ-মাঘ মাসেই মরিচ বিক্রি করতে পারে কৃষকরা। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, তারা সব সময় কৃষকদের কাছে গিয়ে মরিচ চাষের বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কৃষকরা সার ও কীটনাশক ব্যবহার করায় এবার মরিচের বা¤পার ফলন হয়েছে। ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিন্টু মিয়া জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চলতি মৌসুমে ফুলছড়ি উপজেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা মরিচের আবাদ করেছেন।
×