ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় বাসগৃহ ভাঙচুর করে জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ১৭:৫৪, ৩ ডিসেম্বর ২০২১

নওগাঁয় বাসগৃহ ভাঙচুর করে জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ নওগাঁয় একটি পরিবারের দীর্ঘ দিনের বাসগৃহ ভেঙে বিবাদমান জমি জবর দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। বাড়ির লোকজনকে ঘরে আটকে রেখে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় বাসগৃহে ভাঙচুর চালানো হয়। শুক্রবার দুপুরে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই পরিবার। ওই পরিবারের কর্ত্রী রেহেনা পারভীন নামে এক নারী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় ওই নারীর ছেলে এ এইচ এম রাশেদ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে রেহেনা পারভীন বলেন, তাঁর স্বামী নওগাঁ সদর উপজেলা প্রাইমারী শিক্ষক সমিতির কাছ থেকে ১৯৯০ সালে নওগাঁ পৌরসভার পার-নওগাঁ ধোপাপাড়া মহল্লার একটি একতলা বাড়িসহ তিন শতক জমি ক্রয় করে। পরবর্তীতে পৌরসভার অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ১৯৯১ সালে ওই একতলা বাসার ওপর দুইতলা বাসা নির্মাণ করে তাঁরা বসবাস করে আসছেন। তাঁদের বসতবাড়ির উত্তর পাশে ১৯৬৯ সাল থেকে ১০ শতক জমি ক্রয় করেন প্রতিবেশি মোকছেদ আলী। বর্তমানে ওই সম্পত্তি মোকছেদ আলীর ছেলে মাসুদ করিম আলমগীর ভোগদখল করছেন। পরবর্তীতে আর এস জরিপে ভুলবশত তাঁদের স্বত্ত্বদখলীয় তিন শতক জমির মধ্যে ০১৫৭ সহ. সম্পত্তি মোকছেদ আলীর ১০ শতাংশ জমির খতিয়ানে অনুপ্রবেশ করে। এর ফলে আরএস জরিপের নকশা অনুযায়ী জমির মালিকানা নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় তা সংশোধনের জন্য তাঁর স্বামী ২০১৮ সালে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। আইন অনুযায়ী জমি-জমার বিরোধ নিয়ে আদালতে কোনো মামলা চলমান থাকলে মামলার সকল পক্ষকে স্ব স্ব অবস্থানে থাকতে হয়। কিন্তু প্রতিপক্ষের লোকজন আইন আদালতকে তোয়াক্কা না করে গত ১৮ নবেম্বর বাসায় লোকজন বসবাসরত অবস্থায় বাসগৃহ ভাঙচুর করে এবং তাঁদেরকে বাসগৃহ থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করে। ভাঙচুর চালানোর সময় বাসার নিচতলায় ও দোতলায় লোকজন ছিল। প্রতিপক্ষের লোকজন বাড়ির লোকজনকে ভেতরে আটকে রেখে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি আটকিয়ে বাড়ির নিচতলায় ভাঙচুর চালায়। এতে বড় ধরণের প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারতো। রেহেনা পারভীনের ছেলে এ এইচ এম রাশেদ বলেন, ‘বিবদমান কোনো জায়গার দখল নিতে চাইলে আদালতের নির্দেশ থাকতে হয়। অথচ ওই জমি নিয়ে মামলা এখনও চলমান রয়েছে। এ ছাড়া কোনো পক্ষ আদালতের নির্দেশ পেলেও সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বিরোধ জমি দখলে নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে তাঁরা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের বাসগৃহে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। এখন তাহলে আমরা কোথায় গেলে প্রতিকার পাব?’ এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, বসতবাড়ির ওই জায়গা জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। উভয়পক্ষকে বিষয়টি আদালত কিংবা পৌর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমাধান করে নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তবে জমি নিয়ে ফৌজদারি কোনো অপরাধ সংঘটন হলে অবশ্যই সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×