ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাব-এডিটরস কাউন্সিলের অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী

একটি মহল শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ফায়দা লুটতে চায়

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ৩ ডিসেম্বর ২০২১

একটি মহল শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ফায়দা লুটতে চায়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, একটি মহল শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। একইসঙ্গে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজপথ ত্যাগ করে নিজেদের ক্লাসে ফিরে যেতে আহ্বান জানান। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল-ডিএসইসি মেধাবৃত্তি ২০২১ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ সকল কথা বলেন। ডিএসইসি সভাপতি মামুন ফরাজীর সভাপতিত্বে সংসদ সদস্য ইঞ্জিঃ মোঃ মোজাফফর হোসেন, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, সাম্প্রতিক দেশকালের সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন পলাশ, কে এস বি গ্রুপ চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ এ হোসাইন দীপু বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সন্তানেরা নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করছে, আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। নিরাপদ সড়ক আমাদের প্রয়োজন, সরকারও এ বিষয়ে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে, শিক্ষার্থীদের জন্যে ইতোমধ্যেই হাফভাড়া করে দিয়েছে। বেসরকারী মালিক সমিতি ঢাকায় হাফভাড়া করেছে, চট্টগ্রামের জন্য আলোচনা করছে। আশা করব আমাদের সন্তানেরা এখন ক্লাসে ফিরে যাবে। করোনার কারণে অনেক ক্ষতি হয়েছে, এখন ক্লাসে ফিরে যাবার সময়। কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে রাজনীতি করা শুরু হয়েছে, তাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অনেকে রাজনীতি ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে এবং রামপুরার ঘটনাকে সেই অপচেষ্টার অংশ বলেই অনেকে মতপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু পক্ষ আছে পরগাছার মতো। তারা অপরের ওপর ভর করে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। এই পরগাছারা সক্রিয় হয়ে গেছে। ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তারা তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। সুতরাং এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমি অভিভাবকদের অনুরোধ জানাব এ ব্যাপারে আপনারাও সতর্ক থাকবেন। সন্তানেরা যাতে ক্লাসে ফিরে যায়, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলেছেন যে, খালেদা জিয়াকে বিদেশ না পাঠালে সরকারকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে ফেলা হবে। তারা তো আমাদের সাড়ে বারো বছর আগে থেকে টেনে হিঁচড়ে নামাতে চাচ্ছেন এবং সেটি করতে গিয়ে রশি ছিঁড়ে তারাই পড়ে গেছেন। আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ জানাব, আরও টান দিলে আপনারা আরও পড়ে যাবেন। সুতরাং সেই চেষ্টা করে কোন লাভ নেই। বেগম জিয়ার যাতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পান চিকিৎসা পান সেজন্য বিএনপি বা বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার যেভাবে চাইবে সেভাবেই দেশের অভ্যন্তরে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা করতে বদ্ধপরিকর। বেগম জিয়া ইতিপূর্বেও অসুস্থ হয়েছিলেন এবং দেশের মধ্যে চিকিৎসা নিয়েই তিনি ভাল হয়েছেন। এবারও আশা করি আমাদের মেধাবী ডাক্তারদের সুচিকিৎসায় বেগম জিয়া সহসাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন। মন্ত্রী এ সময় মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়ার জন্য ডিএসইসিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আমাদের এই সন্তানেরা আজকে যেমন মেধার স্বাক্ষর রেখেছে ভবিষ্যতে তারা মেধার সঙ্গে মূল্যবোধ, দেশাত্মবোধ, মমত্ববোধের সমন্বয় ঘটিয়ে এমন আলোকিত মানুষ হবে যারা দেশ, সমাজকে পথ দেখাবে। ‘বাংলাদেশ হারার জাতি নয়, বীরের জাতি, জয়ের জাতি, গৌরব ও অহংকারের জাতি’ উল্লেখ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, এই দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিতে মেধার স্বীকৃতি অপরিহার্য। দেশ, সমাজ ও পরিবারের আমরা মেধাচর্চার পাশে কতটুকু দাঁড়াতে পারছি তা ভাবতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকল পেশার জন্যই মেধার স্বীকৃতি জরুরী। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা মেধার প্রতিযোগিতায় টিকতে পারলেই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে সক্ষম হব। এটকোর সঙ্গে তথ্যমন্ত্রীর বৈঠক ॥ দেশের বেসরকারী টিভি চ্যানেল স্বত্বাধিকারীদের সংগঠন এ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-এটকোর প্রতিনিধিবৃন্দ বৃহস্পতিবার দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সচিবালয়ে তার দফতরে এক বৈঠকে মিলিত হন। এটকোর সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সহ-সভাপতি আরিফ হাসানসহ এ্যাসোসিয়েশন পরিচালকবৃন্দের মধ্যে আহমেদ জোবায়ের, আব্দুল হক, কাজী জাহেদুল হাসান, আশফাক উদ্দীন এবং সদস্য নাসির উদ্দীন বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এটকো নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অত্যন্ত হৃদ্যতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এটকোর পক্ষ থেকে কয়েকটি বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশে যে সমস্ত মোবাইল ফোন কোম্পানি আছে তারা লাইসেন্স না নিয়েই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করছে, কনটেন্ট বানাচ্ছে, অনলাইনে প্রচার করছে এবং সেখান থেকে উপার্জন করছে, যেটি তাদের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ। টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বিটিআরসি এবং মোবাইল অপারেটরদের নিয়ে আমরা বিষয়টা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। তারা যদি নিয়মবহির্ভূতভাবে এটি করে থাকেন, সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মন্ত্রী আরও জানান, আরেকটি বিষয়, আইপিটিভি রেজিস্ট্রেশন দেয়ার প্রয়োজন আছে কিনা, এটকোর পক্ষ থেকে সে প্রশ্ন তারা তুলেছেন। আইপিটিভি পৃথিবীর বাস্তবতা। কিন্তু ব্যাঙের ছাতার মতো আইপিটিভি সমীচীন নয় বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। আমরা ইতোমধ্যেই ১৪টি আইপিটিভিকে রেজিস্ট্রেশন দেয়ার অনুমতি দিয়েছি। আইপিটিভি সংক্রান্ত নীতিমালা মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে, সেখানে নীতিমালায় বলা আছে আইপিটিভি কোনভাবেই সংবাদ প্রচার করতে পারবে না, ক্যাবলের মাধ্যমে প্রচার করতে পারবে না। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অত্যন্ত যতœসহকারে আইপিটিভির ব্যাপারে অগ্রসর হতে চাই, যথেচ্ছভাবে নয়।
×