ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

নাচ গান কবিতায় বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ২ ডিসেম্বর ২০২১

নাচ গান কবিতায় বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সেই অর্থে তখনও জেগে ওঠেনি শহর ঢাকা। পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠলেও তখনও ছড়ায়নি কিরণ। হালকা শীতমাখা হেমন্তের সেই সকালে শিল্পের আশ্রয়ে উচ্চারিত হলো বাঙালীর বীরত্বগাথার কীর্তিকথা। কবিতার পঙ্্ক্তিমালায় প্রকাশিত হলো স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা। গানের সুরে ব্যক্ত হলো বিজয়ের বারতা। নাচের মুদ্রায় উদ্ভাসিত হলো ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বদেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। আর এমন বর্ণিল আয়োজনে সম্মাননা জানানো হয় দেশের নানা প্রান্তের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের প্রথম দিনটি এভাবেই উদ্যাপিত হলো শিল্পিত পথরেখায়। বুধবার সকালে শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত আঙিনায় অনুষ্ঠিত হয় ‘বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে পদক্ষেপ বাংলাদেশ। নৃত্যদল নৃত্যাক্ষের নাচের আশ্রয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। ‘আমি বিজয় দেখেছিলাম ডিসেম্বরে’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ কয়েকটি গানের সুরে পরিবেশিত হয় সমবেত নৃত্য। এরপর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষকে সঙ্গী করে লাল, সবুজ, সাদাসহ শত বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন হয়। আয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাগম হওয়া ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদার। আমন্ত্রিত মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা জি কে বাবুল। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুন নিসা। সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বাদল চৌধুরী। সাংস্কৃতিক পর্বে ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেবো রে’ ও ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ শিরোনামের সঙ্গীত পরিবেশন করেন আরিফ রহমান। স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল গেয়ে শোনান ‘ও দরদী নাইয়ারে তুমি টুঙ্গিপাড়া যাও’। এছাড়া একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শান্তা সরকার, মারুফ হোসেন, ঐশ্বর্য্য বসাক, শ্রাবণী গুহ রায় ও সোমা দাস। দলীয় পরিবেশনায় সমস্বরের শিল্পীরা গেয়ে শোনায়- সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তে তুমি/ও আমার বাংলাদেশ তুমি প্রিয় জন্মভূমি...। এছাড়াও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র, মন্দিরা সাংস্কৃতিক পাঠশালা, স্বপ্ন বিকাশ কলা কেন্দ্র ও সপ্তকলি আসরের শিল্পীরা। একাত্তরের রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দীপ্ত করা এম আর আখতার মুকুলের চরমপত্র থেকে পাঠ করেন সৈয়দ শহীদুল ইসলাম নাজু ও তামান্না সারোয়ার নীপা। একক কণ্ঠে আবৃত্তি পরিবেশন করেন বাচিকশিল্পী নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলী। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করেন স্বল্পকল্প, স্বরব্যঞ্জন ও চারুকণ্ঠ আবৃত্তি সংসদের শিল্পীরা। সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যাক্ষ, স্পন্দন, ও স্বপ্ন বিকাশ কলা কেন্দ্রের নৃত্যশিল্পীরা। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শেষে বের করা হয় বর্ণিল বিজয় শোভাযাত্রা।
×