ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংসারে চাই সমঝোতা

প্রকাশিত: ২১:১৫, ২ ডিসেম্বর ২০২১

সংসারে চাই সমঝোতা

বহুদিন ধরেই একটা প্রবাদ শুনে আসছি। যেটা অনেকেই জানেন তারপরও আবার স্মরণ করছি, ‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে, গুণবান পতি যদি থাকে তার সনে।’ একটি সংসারের শ্রীবৃদ্ধির জন্য একজন স্ত্রীর ভূমিকা যেমন আছে তেমন স্বামীরও আছে। একটি সংসারে স্বামী আর স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালবাসা, আর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে সেই সংসারের সন্তান মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবান হয়। সংসারে শ্রদ্ধাবান ছেলে-মেয়ে না এলে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা যাবে। বিশৃঙ্খল সমাজে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হবে। মানুষের মধ্যে হানাহানি সৃষ্টি হবে। কেউ কাউকে শ্রদ্ধা করবে না। এতকিছু জানার পরও অনেকে আবেগতাড়িত হয়ে অথবা বিবিধ সমস্যার কারণে বিবাহবিচ্ছেদের মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ডিভোর্স বলুন অথবা তালাক বলুন কোনটাই আমাদের জন্য সুখকর হতে পারে না। এই বিচ্ছেদের সঙ্গে শুধু দুজন মানুষ না, দুটা পরিবারের সবাই জড়িত। নিজেদের যে সন্তান আছে সেই নিষ্পাপ সন্তানগুলোর প্রতি মারাত্মক অবহেলা হয় বিবাহবিচ্ছেদের মাধ্যমে। বিয়ের মাধ্যমে নতুন একটি সংসারের যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু সংসার ভাঙনের এই প্রবণতা টিভি সিরিয়ালের মতো দিন দিন কেবলই বাড়ছে। সংসার সাজানোর জন্য ধৈর্য ও পারস্পরিক বোঝাপড়া খুব প্রয়োজন। একবাক্যে বলা যায়- বিবাহবিচ্ছেদ কখনও মঙ্গলজনক নয়। বিচ্ছেদ কখনই সুখকর হয় না। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরী। দুজন কিছুটা সচেতন ও আগ্রহী হলে বিবাহবিচ্ছেদ আটকানো যেতে পারে। তাই সবার উচিত একটি সুখী, সুন্দর পরিবার গড়ে তোলা। অনেক বিচ্ছেদের ফলে তাদের সন্তানরা স্নেহ, ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পরিবারের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা, পারস্পরিক মর্যাদা থাকা প্রয়োজন। বিবাহবিচ্ছেদ নয় বরং স্বামী-স্ত্রীর গুণে সংসার উষ্ণ থাকুক আজীবন এমনটাই চাওয়া। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বর্তমানে জনসংখ্যার ক্ষেত্রে প্রতি হাজারে ১০.৮ শতাংশ নারী এবং ১.৫ শতাংশ পুরুষ বিবাহবিচ্ছেদ করছেন। এতে দেখা যায়, নারীরা বেশি বিচ্ছেদের ঝুঁকিতে রয়েছে। গ্রামাঞ্চালে বিচ্ছেদের হার প্রতি হাজারে ১.৩ শতাংশ এবং শহরে ০.৮ শতাংশ। মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়ে গেছে। আগের যুগের নারী আর বর্তমান যুগের নারীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ব্যবধান। তখনকার দিনে সব কর্তৃত্ব ছিল পুরুষের হাতে। নারীরা চুপ থেকে সব মেনে নিত। কিন্তু বর্তমানে নারীরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে শিখেছে। পাশাপাশি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদও করছে। স্বামী অথবা পরিবার কর্তৃক শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলছে। যার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সংসার পরিচালনার জন্য স্বামী এবং স্ত্রী দুজনকেই একসঙ্গে হাতে হাত রেখে চলতে হয়। শুধু আবেগ নয়, প্রয়োজন পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, দায়িত্ববোধ ও বিশ্বাস। মাঝে মধ্যে সংসারের জন্য হলেও ত্যাগ স্বীকার করুন। পূর্ব নলুয়া, চট্টগ্রাম থেকে
×