ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এমপিও’র দাবিতে অনার্স শিক্ষকদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটে অবস্থান

প্রকাশিত: ২১:২৯, ৩০ নভেম্বর ২০২১

এমপিও’র দাবিতে অনার্স শিক্ষকদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটে অবস্থান

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ এমপিওভুক্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন কলেজের নন-এমপিও শিক্ষকরা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত গাজীপুরের বোর্ডবাজারস্থিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের উদ্যোগে এ কর্মসূচী পালিত হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ অবস্থান কর্মসূচী অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল হতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত দেশের বিভিন্ন ডিগ্রী কলেজের নন-এমপিও অনার্স মাস্টার্সের শিক্ষক শিক্ষিকাগণ গাজীপুরের বোর্ডবাজারস্থিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এসে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের উদ্যোগে তারা সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন। এসময় তারা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। আন্দোলনরত শিক্ষকরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত দেশের বিভিন্ন ডিগ্রী কলেজে কর্মরত সাড়ে ৫ হাজার নন-এমপিও অনার্স-মাস্টার্সের শিক্ষককে এমপিওভুক্তির দাবী জানান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তারা বিশ^বিদ্যালয়ের গেইটে অবস্থান করছিলেন। এসময় তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচী অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা কামাল জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সারা দেশের বিভিন্ন কলেজে অনার্স-মাস্টার্সের নন-এমপিও প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষক রয়েছেন। বেসরকারি কলেজসমূহে বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত ওই শিক্ষকদেরকে জনবলে অন্তর্ভূক্তি না থাকার অজুহাতে দীর্ঘ ২৯ বছর থেকে এমপিওভুক্তির বাইরে রাখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ বেতন দেয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ কলেজ কর্তৃপক্ষ তা দিচ্ছে না। অথচ একই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়ে সদ্য জাতীয়করণকৃত কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকগণ ক্যাডার/নন-ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন, ডিগ্রী ৩য় শিক্ষকগণ জনবলে না থাকার পরেও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে মাস্টাসের্র সমমান বা কামিল শ্রেণির শিক্ষকগণও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অথচ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকগণও এনটিআরসিএ সনদধারী হয়েও জনবল ও এমপিও নীতিমালায় অন্তর্ভূক্ত হতে পারছেন না, যা চরম বৈষম্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী। ফেডারেশনের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ বলেন, দীর্ঘ ২৯ বছর থেকে পেশাগত দাবি আদায়ের জন্য অনেক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার পরেও অদ্যবধি আমরা সরকারি বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের মাধ্যমে শিক্ষা সেক্টরে অনেক বৈষম্য কমেছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় উচ্চশিক্ষাদানে নিয়োজিত সারাদেশের মাত্র সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষক এখনো এমপিওভুক্তির বাইরে রয়েছেন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনননেত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনার মাধ্যমে প্রচলিত জনবল কাঠামো সংশোধন করে এমপিওভুক্তি চাই, বেঁচে থাকার সুযোগ চাই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান জানান, এ শিক্ষকদের এ আন্দোলন সম্পূর্ন অযৌক্তিক। কারণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত বেসরকারী অনার্স ক্লাসের শিক্ষক নিয়োগ প্রদানকালে শর্তই থাকে যে নিয়োগকৃত এসব শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রচলিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রদান করবে। তারপরও বেতন-ভাতা? এমপিওভুক্তির জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানে এসে আন্দোলন করা অযৌক্তিক। তারপরও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছেন। জিএমপি’র গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, আন্দোলনরত শিক্ষকরা সন্ধ্যার পর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটে অবস্থান করছিলেন। তারা শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচি অব্যহত রাখার ঘোষণা দেন।
×