স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন পদে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে মাত্র একজন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বাকী ৬টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা (আওয়ামীলীগের ৫জন ও বিএনপি’র ১জন বিদ্রোহী ও বহিষ্কৃত) বিজয়ী হন। এছাড়াও একটি পৌরসভার নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিএনপি নেতা) মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
গাজীপুর জেলা নির্বাচন ও রিটানিং কর্মকর্তা ইস্তাফিজুল হক আকন্দ জানান, রবিবার (২৮ নবেম্বর) তৃতীয় ধাপে কালিয়াকৈরের একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে একমাত্র ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহ আলম নির্বাচিত হয়েছেন। বাকী সবক’টিতেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হন।
এদের মধ্যে কালিয়াকৈর পৌরসভায় মেয়র পদে স্বতন্ত্রপ্রার্থী পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান (মোবাইল ফোন) নির্বাচিত হন। দীর্ঘ ১১ বছর পর অনুষ্ঠিত এ পৌর সভার নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাসেলকে ৬ হাজার ৪৫২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে তিনি ফের মেয়র পদে নির্বাচিত হন।
এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদের নির্বাচনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী সোলাইমান মিন্টু (আনারস) সূত্রাপুর ইউনিয়নে নির্বাচিত হন। আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কুত স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুজ্জামান সেতু (মোটর সাইকলে) চাপাইর ইউনিয়নে, মধ্যপাড়া ইউনিয়নে সিরাজুল ইসলাম (ঘোড়া), ঢালজোড়া ইউনিয়নে ইসাম উদ্দিন (মোটর সাইকেল), বোয়ালী ইউনিয়নে আফজাল হোসেন খান (মোটর সাইকলে), আটাবহ ইউনিয়নে সাখাওয়াত হোসেন শাকিল মোল্লা (অটো রিকশা) নির্বাচিত হয়েছেন।
কালিয়াকৈরের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের ভরাডুবির ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক নেতাকর্মীরা জানান, দল থেকে যাদেরকে প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তারা দলের ভিতরে এবং বাহিরে কম জনপ্রিয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এছাড়াও দলের স্থানীয় কোন্দল না মেটানোয় এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। এতে দলের ইমেজ নষ্ট হয়েছে। দল যদি তৃণমূলের কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মতামত নিয়ে ক্লীন ইমেজের ব্যাক্তিদের মনোনয়ন দিতো তাহলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের এমন ভরাডুবি হতো না। স্থানীয়ভাবে দলীয় কোন্দল মেটাতে না পারলে আগামীতে যে কোন নির্বাচনে দলকে আরো বড় মাশুল দিতে হবে বলে মনে করেন তারা।