সরকারী কাস্টডিতে নেই খালেদা, তিনি মুক্ত

সংসদ রিপোর্টার ॥ ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সরকারের কাস্টডিতে রয়েছে’ সংসদে বিএনপির এমন দাবি সরাসরি নাকচ করে দিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এ দাবি সঠিক নয়। খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিত করে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তিনি দুটো শর্তে সম্পূর্ণ মুক্ত। উনি আমাদের কাস্টডিতে নেই। উনি সরকারের কাস্টডিতে নেই। মুক্ত বলেই তিনি মুক্তভাবে বাসায় থাকতে পারছেন। মুক্ত আছেন বলেই তিনি মুক্তভাবে চিকিৎসা নিতে পারছেন। আর খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিত করে মুক্তি দিতে ৪০১ ধারায় একটি আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় সেটি পুনরায় পুনর্বিবেচনার কোন সুযোগ নেই। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আইন মন্ত্রণালয়ের আনা দুটি পৃথক বিল পাসের প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিরোধী দলের বক্তব্যের জবাবে আইনমন্ত্রী আরও জানান, বিচারক নিয়োগ ও নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি আইন করার প্রস্তাব আগামী দুটি অধিবেশনের মধ্যেই সংসদে তোলার চেষ্টা করব। বিচারক নিয়োগ আইন এবং নির্বাচন কমিশন গঠন আইন- দুটোরই খসড়া করা হচ্ছে। এর আগে বিলটির ওপর আলোচনাকালে বিএনপির এমপিরা অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়ার বাসাকে সাবজেল বানিয়ে সেখানে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়ার বাসাকে সাবজেল বানানোর দাবি অস্বীকার করে আইনমন্ত্রী বলেন, উনারা (বিএনপি) কেবল বলেন সাবজেল বানিয়ে রাখা হয়েছে। উনার (খালেদা জিয়া) বাসাটাকে কোন জেলই বানানো হয়নি। উনাদের (বিএনপির) তথ্যেই এতই বিভ্রাট তা বুঝতে পারি না। খালেদা জিয়ার প্রতি যদি তাদের এতই ভালবাসা থাকে তাহলে তো তথ্যটি জেনে এখানে কথা বলতে পারেন। এত সুপারফিসিয়ালি কথা বলেন কেন? আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক নেত্রী হওয়ার কারণে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় দন্ডাদেশ স্থগিত করে তাঁকে (বেগম জিয়াকে) ৬ মাস করে মুক্তি দিয়েছেন। খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ মুক্ত। সেখানে দুটো শর্ত যুক্ত ছিল, সেটা এখনও আছে। মুক্ত বলেই তিনি মুক্তভাবে বাসায় থাকতে পারছেন। মুক্ত আছেন বলেই তিনি মুক্তভাবে চিকিৎসা নিতে পারছেন। আনিসুল হক বলেন, ৪০১ ধারায় যাকে মুক্তি দেয়া হবে, তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না- এমন কোন কথা নেই। কিন্তু কথা আছে শর্তযুক্ত অথবা শর্তমুক্ত। মুক্তির শর্তে আমরা সেখানে বলেছি উনি বিদেশ যেতে পারবেন না, বাংলাদেশে থেকে চিকিৎসা নেবেন। উনি অবশ্যই মুক্ত। উনি আমাদের কাস্টডিতে নেই। উনি সরকারের কাস্টডিতে নেই। উনি এখানকার যেখানে ইচ্ছা সেখানেই চিকিৎসা নিতে পারেন এবং সেটা তিনি নিচ্ছেন। আইনমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য প্রেরণের দাবি প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপির আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার সময়ও আমি বলেছি, একটা বিষয় সিদ্ধান্ত হলে সেখানে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না। এটা চাইলে উনাকে অর্জিনাল পজিশনে যেতে হবে। তারপর নতুন সিদ্ধান্ত হয়ত নেয়া যাবে। ৪০১ ধারার বিষয়ে বিএনপি থেকে যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে, আমার তার সঙ্গ দ্বিমত আছে। আমি আমার অবস্থান থেকে নড়ব না। বিচারক ও ইসি গঠনে নতুন আইন ॥ বিল পাসের সময় বিরোধী দলের দু’জন সংসদ সদস্যের দাবির জবাবে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি আইন করার প্রস্তাব আগামী দুটি অধিবেশনের মধ্যেই সংসদে তোলার ব্যাপারে আশার কথা শুনিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, বিচারক নিয়োগ আইন এবং নির্বাচন কমিশন গঠন আইন- দুটোরই খসড়া করা হচ্ছে।