ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

মুনীর চৌধুরী সম্মাননা পেলেন সারা যাকের, তারিক আনাম

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২৮ নভেম্বর ২০২১

মুনীর চৌধুরী সম্মাননা পেলেন সারা যাকের, তারিক আনাম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের নাট্যচর্চায় আধুনিক চেতনা সঞ্চারী অগ্রণী পুরুষ মুনীর চৌধুরী। অন্যদিকে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের নবনাট্য আন্দোলনের এক অংশীজন মোহাম্মদ জাকারিয়া। নাট্যদল থিয়েটার প্রবর্তিত তাদের নামাঙ্কিত সম্মাননা ও স্মৃতিপদক প্রদান করা হলো শনিবার। মাঝে মহামারীজনিত স্থবিরতার কারণে একসঙ্গে দুই বছরের পদক প্রদান করা হলো। সেই সুবাদে এবার প্রদান করা হলো ২০২০ ও ২০২১ সালের মুনীর চৌধুরী সম্মাননা ও মোহাম্মদ জাকারিয়া স্মৃতিপদক। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২০২০ সালের মুনীর চৌধুরী সম্মননা প্রদান করা হয়েছে অভিনেতা-নির্দেশক ও সংগঠক সারা যাকেরকে। আর মোহাম্মদ জাকারিয়া স্মৃতিপদক প্রদান হয়েছে দিনাজপুরের কৃতী নাট্যকার, নির্দেশক ও প্রশিক্ষক সম্বিত সাহাকে। ২০২১ সালের মুনীর চৌধুরী সম্মননা পেয়েছেন অভিনেতা, নির্দেশক ও নাট্য সংগঠক তারিক আনাম খানকে। একই বছরের জাকারিয়া স্মৃতিপদক প্রদান হয়েছে সময়ের আলোচিত মঞ্চাভিনেত্রী জ্যোতি সিনহাকে। মুনীর চৌধুরী সম্মননা হিসেবে স্মারকের পাশাপাশি দুই পদকপ্রাপ্তকে প্রদান করা হয় পঞ্চাশ হাজার টাকা। মোহাম্মদ জাকারিয়া স্মৃতিপদকপ্রাপ্ত দুই শিল্পীকে পদকের পাশাপাশি প্রদান করা হয় পঁচিশ হাজার টাকা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। সভাপতিত্ব করেন থিয়েটার সভাপতি ফেরদৌসী মজুমদার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ এ সারওয়ার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন থিয়েটারের পরিচালক (সাংগঠনিক) রামেন্দ্র মজুমদার। মুনীর চৌধুরী সম্মাননাপ্রাপ্তদের মানপত্র পাঠ করেন তানজুম আরা পল্লী। জাকারিয়া স্মৃতিপদক প্রাপ্তদের মানপত্র পাঠ করেন ত্রপা মজুমদার। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এই পর্বে যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রসঙ্গত, করোনা মহামারীর কারণে গত বছর এই পুরস্কার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এ বছর একসঙ্গে ২০২০ ও ২০২১ সালের পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হলো। আইজিসিসির আয়োজনে জাদুঘরে নজরুল সন্ধ্যা ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, বাঙালীর যাপিত জীবনের পরতে পরতে মিশে আছেন তিনি। সংগ্রামে-সঙ্কটে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে তার সৃষ্টির ঐশ্বর্য। গান কবিতায় প্রকাশ করেছেন সাম্যের সমাজের আকাক্সক্ষা। ধর্মের ভেদরেখা পেরিয়ে ছড়িয়েছেন মানবতার বারতা। সেই দ্রোহ, প্রেম ও সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্মরণ করা হলো শনিবার সন্ধ্যায়। গানের সুরে সুরে নিবেদিত হলো জাতীয় কবির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। সঙ্গে ছিল নজরুলের মূল্যায়নধর্মী আলো ও প্রবন্ধ পাঠ। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে নজরুল সন্ধ্যা শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইজিসিসি)। সুর ও কথনে সজ্জিত এ আয়োজনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রিয়া গোপ। নজরুলের কীর্তির মূল্যায়নধর্মী আলোচনা করেন নজরুল গবেষক এএফএম হায়াতুল্লাহ। ‘শ্রাবণ রাতের প্রেমিক : নজরুল’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি শিহাব শাহরিয়ার। স্বাগত বক্তব্য দেন আইজিসিসির পরিচালক ড. নীপা চৌধুরী। দেড় ঘণ্টা ব্যপ্তির আয়োজনে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে ছিল গানের পরিবেশনা। প্রিয়াংকা গোপের চর্চিত কণ্ঠের পরিবেশনায় সিক্ত হয় শ্রোতার হৃদয়। শুরুতেই এই শিল্পী গেয়ে শোনানÑ এ কি সুরে তুমি গান শোনালে ভিনদেশী পাখি...। তার পরিবেশিত অন্য গানগুলোর শিরোনাম ছিলÑ ‘কেন আনো ফুলডোর’, ‘কেন কাঁদে পরাণ’, ‘খোলো খোলো খোলো গো দুয়ার’, ‘নাচের নেশার ঘোর’ ও ‘সই ভালো করে বিনোদ বেণী বাঁধিয়া দে’। নজরুলের সৃষ্টিশীল জীবনের মূল্যায়নধর্মী আলোচনায় বক্তারা বলেন, কবি নির্বাক ছিলেন প্রায় ৩৪ বছর। মূলত তিনি সৃষ্টিশীল ছিলেন মাত্র ২১ বছর। সেই স্বল্প সময়েই আপন সৃষ্টির ঐশ্বর্যে তিনি নিজস্ব ভৌগোলিক সীমানা পেরিয়ে পৌঁছেছিলেন বিশ্ব ভূগোলে। কাজী নজরুল তার লেখনী দিয়ে, উচ্চারণ দিয়ে, কণ্ঠস্বর দিয়ে, চেতনা দিয়ে, প্রেম-ভালবাসা দিয়ে জয় করে গেছেন বাংলা ও বিশ্বকে। ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরি, আর হাতে রণ তুর্য’Ñএই উচ্চারণ দিয়েই তিনি নিজেকে জানান দিয়েছিলেনÑ প্রেম এবং দ্রোহ একই সঙ্গে হাঁটছে তার ভেতরে।
×