ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রুপালি পর্দার সোনালি দিন

প্রকাশিত: ২১:২৮, ২৮ নভেম্বর ২০২১

রুপালি পর্দার সোনালি দিন

সিনেমা জগতকে বলা হয় রুপালি পর্দা। সাদাকালো সিনেমার যুগে পর্দার রং রুপালিই ছিল। এখন পর্দা হয়ে উঠেছে মাল্টি কালার। তবুও সিনেমা জগত রুপালি পর্দাই থেকে গেছে। বাংলাদেশে গত শতাব্দীর ৭০-৮০-৯০ দশক ছিল রুপালি পর্দার সোনালি দিন। মধ্যবিত্তের প্রধান বিনোদন ছিল সিনেমা। সপ্তাহান্তে ছুটির দিনগুলোতে সিনেমা হলে থাকত উপচেপড়া ভিড়। অগ্রিম টিকেট কেনা হতো দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে। ভাল সিনেমাগুলোর জন্য অনেক সময় কালোবাজার থেকে টিকেট কিনতে হতো। হলগুলোর সামনে শোনা যেত কালোবাজারিদের ডাকাডাকি ‘ডিসি-রিয়ার স্টল-স্টল’। সিনেমা দেখার জন্য মধ্যবিত্তের ছিল আলাদা বাজেট। মাসের খরচ বাঁচিয়ে তৈরি হতো এই বাজেট। ঈদ কিংবা পূজা-পার্বণে এই বাজেট বাড়ানো হতো। পরিবার পরিজন নিয়ে দল বেঁধে সিনেমা দেখার আনন্দই ছিল আলাদা। ছোটবেলায় গ্রামের স্কুলে লেখাপড়ার সময় সিনেমা দেখার সুযোগ ছিল খুবই সীমিত। ঢাকায় বেড়াতে এলে আত্মীয়স্বজনরা নিয়ে যেতেন সিনেমা হলে। ঢাকায় বেড়ানোর এটি ছিল অন্যতম আকর্ষণ। গ্রামে বসে রেডিওতে ‘প্রমো’ শুনতে শুনতে প্রায় প্রতিটি সিনেমার সঙ্গেই পরিচয় ঘটে যেত। গানগুলো মুখস্থ হয়ে যেত রেডিওর ‘গানের ডালি,’ ‘দুর্বার’ কিংবা অনুরোধের আসর শুনে। মাঝে মধ্যে এসব পরিচিত সিনেমা দেখার সুযোগ হতো। অনেক সিনেমা না দেখেও থেকে যেত পরিচিত সিনেমার তালিকায়। শহরে বেড়াতে এলে একদিনে একাধিক সিনেমা দেখে না দেখার তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা হতো। একবার ঢাকায় এসে পুরান ঢাকায় বোনের বাসার কাছে ‘মানসী’ হলে গিয়েছিলাম জাভেদ-ববিতা অভিনীত ‘নিশান’ সিনেমা দেখতে। ঘিঞ্জি এলাকায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণহীন পুরনো এই হলেও টিকেট নেই। শেষ পর্যন্ত রাতের শো’তে কালোবাজারির কাছ থেকে পাঁচ টাকার টিকেট আট টাকায় কিনতে হয়েছে। তখন জুলাই-আগস্ট মাসের প্রচ- গরম। সবাই মিলে সিনেমা দেখে গরমে ঘেমে জামা কাপড় ভিজিয়ে হল থেকে বের হয়েছি, তবুও কত আনন্দ। তেমনি ভাবে ‘আগুন’ সিনেমা দেখে ভিলেন বাবরকে নায়ক রাজ্জাকের পিটুনিতে হাততালি দিয়েছি। ‘নয়নমণি’ সিনেমায় টেলি সামাদের অভিনয়ে হেসেছি মন খুলে। ‘ছুটির ঘণ্টা’ সিনেমায় শিশু অভিনেতা মাস্টার সুমনের মর্মস্পর্শী অভিনয়ে কেঁদে বুক ভাসিয়েছি। সেই দিন এখন শুধুই অতীত। সেই সময় জেলা শহরগুলোতে দু’একটা সিনেমা হল ছিল। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় জেলা শহরে গিয়ে সিনামা দেখা হয়ে উঠত না। ক্রমশ শহর ছাড়িয়ে সিনেমা হল তৈরি শুরু হয় থানা পর্যায়ে। এক হিসাব মতে তখন সিনেমা হলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল দেড় হাজারের কাছাকাছি। বাড়তে থাকে দর্শক। তখন ঢাকায় না এসেও মাঝে মধ্যে সিনেমা দেখার সুযোগ হতো। এজন্য অবশ্য পাড়ি দিতে হতো হেঁটে দীর্ঘ পথ। লেখাপড়ার জন্য ঢাকায় স্থায়ী হওয়ার পর সিনেমা দেখা হতো অনেকটা নিয়মিত। বিশেষ করে সপ্তাহান্তে একদিন কিংবা ভাল কোন সিনেমা মুক্তি পেলে সপ্তাহের মাঝামাঝি। হাত খরচ থেকে টাকা বাঁচিয়ে টিকেট পাওয়া সাপেক্ষে ঢুকে যেতাম মধুমিতা, অভিসার কিংবা গুলিস্তান হলে। এখন আর সেইদিন নেই। ব্যস্ততম জীবনে সিনেমা দেখার সময় কম। সময় হলেও সুযোগ নেই। একের পর এক উঠে যাচ্ছে সিনেমা হল। নির্মিত হয় না সপরিবারে দেখার মতো কোন ছবি। কালে-ভদ্রে ভাল সিনেমা যাও হয়, অনভ্যাসে আর সিনেমামুখী হওয়া হয় না। রাজধানীতে অধিকাংশ সিনেমা হলই উঠে গেছে। যে-কয়েকটা চালু রয়েছে তাতেও নেই দর্শকের ভিড়। কালোবাজারিদের ‘ডিসি-রিয়ার স্টল-স্টল’ ডাকাডাকি থেমে গেছে অনেক বছর আগে। কেন এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে? কি কারণে এক সময়ের রমরমা সিনেমা শিল্প ধ্বংস হয়ে গেল? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে কথা বলেছি বেশ কয়েকজন সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ ব্যক্তির সঙ্গে। জানতে চেয়েছি উত্তরণের পথ নিয়ে। বিদগ্ধজনদের মতে, সিনেমা শিল্প ধ্বংস শুরু হয় নব্বই দশকের শেষ দিকে। স্বাধীনতার পর তিনটা দশক রমরমা থাকার পরও এই শিল্পে ধস নামতে শুরু করে মূলত যথাযথ পরিচর্যার অভাবে। রুপালি পর্দার মূল আকর্ষণ তারকা শিল্পী। এরপর সিনেমার গল্প, নির্মাণ শৈলী, সঙ্গীত ইত্যাদি। নায়ক রাজ্জাকের পর এই শিল্পে জন্ম হয় আলমগীর, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, ওয়াসিম, ফারুক, ইলিয়াস কাঞ্চন, মান্না, সালমান শাহর মতো তারকা নায়কদের। আরও পরে এই তালিকায় যুক্ত হয় রিয়াজ এবং সর্বশেষ শাকিব খান। একই সঙ্গে সুচন্দা-সুজাতার পথ ধরে আসেন কবরী, শাবানা, ববিতা, সুচরিতা, অঞ্জু, অঞ্জনা, মৌসুমীর মতো তারকা নায়িকা। পরে আসেন শাবনুর, পূর্ণিমা কিংবা হাল আমলের অপু-ফারিয়া-জয়া-পরী মণিরা। তারকাদের টানে দর্শকরা হলমুখো হতো। এখনও যেমন শাকিব খানের জন্যই দর্শক ছুটে যায় সিনেমা হলে। শিল্পীর তালিকা পর্যালোচনা করলে তারকা সৃষ্টির সঙ্কট খুব স্পষ্টই বুঝা যায়। একই সঙ্গে পূরণ হয়নি পরিচালক, স্ক্রিপ্ট রাইটার কিংবা কলা কুশলীদের শূন্য স্থানগুলো। বিশেষজ্ঞদের মতে দেশে প্রতিভাবান শিল্পী কুশলী নেই তা নয়। যথাযথ মূল্যায়ন এবং পরিচর্যার অভাবে এসব শূন্যস্থান পূরণ হয়নি। বাজার খারাপ থাকায় প্রতিভাবান র্শিল্পী বা কলাকুশলীরা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। কেউ কেউ অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সিনেমা হলে দর্শক কমতে থাকার আরও একটি কারণ অশ্লীলতা। কিছু প্রদর্শক অতি মুনাফার লোভে হলে সেন্সরবিহীন ছবি প্রদর্শন করেছেন। সিনেমা শিল্পের ভাষায় এর নাম ‘কাটপিস’। এমন ঘটনায় সপরিবারে ছবি দেখতে যাওয়া দর্শকদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। একবার এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে দ্বিতীয়বার তারা পরিবার পরিজন নিয়ে হলমুখো হন না। কাটপিসের প্রদর্শন মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে সিনেমাবিমুখ করার অন্যতম একটি কারণ। সিনেমার রমরমা যুগেও কোন কোন নির্মাতা নকল সিনেমা তৈরি করেছেন। নকল সিনেমা দিয়ে দর্শক ধরে রাখার নজির বিশ্বের কোথাও নেই। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার যুগে প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে প্রথমে ভিসিআর, ভিসিপি, সিডি, কেবল টিভি এবং সর্বশেষ এ্যাপসভিত্তিক প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে। এসব প্রতিযোগিতার জন্য যতটুকু প্রস্তুতি প্রয়োজন ছিল তা নিতে পারেনি ঢাকাই সিনেমা শিল্প। চিত্রনায়ক, প্রযোজক ও পরিচালক সোহেল রানা ওরফে মাসুদ পারভেজের কাছে প্রশ্ন ছিল কি কারণে সিনেমা থেকে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কিভাবে ফিরবে দর্শক? তিনি বলেন, ‘আগে টিভি চ্যানেল ছিল মাত্র একটি। এখন চ্যানেল হয়েছে অন্তত তিরিশটি। এত টিভি চ্যানেলে প্রতিদিন সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে। দর্শকরা হলে না গিয়ে ক্রমশ টিভিমুখী হয়ে পড়েছেন। এছাড়া সিনেমা হলের বাইরেও বিনোদনের নতুন নতুন অনেক মাধ্যম এসেছে। এ কারণে দর্শক ভাগ হয়ে গেছে। আগে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সিনেমা দেখার একটা সুন্দর পরিবেশ ছিল। এখন সেই পরিবেশ এবং নিরাপত্তা নেই। সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। প্রদর্শনের পদ্ধতি হচ্ছে এনালগ। দর্শকরা সিনেমা দেখে আনন্দ পায় না। সিনেমা শিল্পের মূল জায়গা হচ্ছে এফডিসি। ওখানে যাদের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হচ্ছে তাদের সিনেমা সম্পর্কে কোন ধারণা থাকে না। এ কারণে এই শিল্পের জন্য বাস্তবমুখী কোন কার্যক্রমও পরিচালিত হয় না। সিনেমায় লগ্নিকারকদের ৯০ শতাংশই এই শিল্পের বাইরের। তারা ভালবেসে নয়, নিজস্ব প্রয়োজনে সিনেমায় লগ্নি করছেন। ভাল সিনেমা তৈরি হচ্ছে না এই কারণে। সিনেমা হলে দর্শক ফেরাতে হলে এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ কথা হয় রাজধানীর জনপ্রিয় মধুমিতা সিনেমা হলের স্বত্বাধিকারী ইফতেখার উদ্দিন নওশাদের সঙ্গে। সিনেমা শিল্প ধ্বংসে ওপরে উল্লিখিত কিছু কারণের সঙ্গে তিনিও একমত। তিনি বলেন, একটা সময় ছিল বড় বড় প্রডাকশন হাউস প্রতিনিয়ত সিনেমা তৈরি করত। প্রতি সপ্তাহে মুক্তি পেত একাধিক ছবি। সারাদেশে প্রায় দেড় হাজার সিনেমা হল থেকে তারা অগ্রিম যা পেত তাই দিয়ে সিনেমার খরচ অনেকটা উঠে আসত। সপ্তাহজুড়ে হাউসফুল থাকলেও আমরা হল থেকে ভাল ছবি নামিয়ে দিতে বাধ্য হতাম। আরও একটি ছবি থাকত মুক্তির অপেক্ষায়। মন্দার কারণে বড় প্রডাকশন হাউস ছবি তৈরি কমিয়ে দিয়েছে। অধিকাংশ হল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লগ্নির অর্থ ফেরত আসছে না। একই সঙ্গে যেসব হল এখনও টিকে আছে তারা অর্থের অভাবে ধুঁকছে। যে কোন সময় এগুলোও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, সিনেমা শিল্প বাঁচানোর জন্য সরকার স্বল্পসুদের ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি মনে করি এটি স্থায়ী সমাধান নয়, সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে মাত্র। সিনেমা শিল্প টিকাতে হলে আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে প্রথম হচ্ছে বিদেশী সিনেমা উন্মুুক্ত করে দেয়া। বর্তমানে সাপটা চুক্তি অনুযায়ী একটি সিনেমা রফতানির শর্তে একটি সিনেমা আমদানি করা যায়। রফতানি করার মতো মানসম্মত সিনেমা এখন বাংলাদেশে তৈরি হয় খুব কম। ফলে ছবি আমদানি-রফতানির প্রক্রিয়াটি একপ্রকার বন্ধই রয়েছে। এছাড়া নানা শর্তে বন্ধ হয়ে গেছে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সিনেমা। শিল্পের স্বার্থে এসব শর্ত শিথিল করতে হবে। বিদেশী সিনেমা কিংবা দেশে তৈরি ভাল সিনেমা পাওয়া গেলে হলগুলো সচল হবে। ভাল ব্যবসা হলে নতুন হলও নির্মিত হবে। দেশী বিনিয়োগকারীরা লগ্নির অর্থ ফেরত পাওয়ার ভরসা পেলে বিনিয়োগ করবেন নতুন সিনেমায়। সরকারও উদ্যোগ নিতে পারে। ১০/১২ নির্মাতার একটি প্যানেল তৈরি করে অর্থের জোগান দিয়ে ভাল বাণিজ্যিক ছবি নির্মাণ করা যেতে পারে। ছবিগুলো ব্যবসা সফল হলে লগ্নিকৃত অর্থ যেমন ফেরত আসবে, তেমনি প্রণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে সিনেমা শিল্পে। বিদেশী সিনেমার কাছে দেশী সিনেমা বাণিজ্যিকভাবে মার খাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাল সিনেমা কখনও বিদেশী সিনেমার কাছে মার খায় না। সিনেমা হল চালু হলে দেশেই ভাল সিনেমা তৈরি হবে। মূল কথা হচ্ছে আগে শিল্প বাঁচাতে হবে। শিল্প বাঁচলেই প্রতিযোগিতার সুযোগ তৈরি হবে। শিল্প না বাঁচলে তো দেশী সিনেমা তৈরির সুযোগই থাকবে না। এক সময় বাংলাদেশে প্রায় দেড় হাজার সিনেমা হল ছিল। এখন সচল রয়েছে মাত্র ৬৬টি। বর্তমান অবস্থা আর কিছুদিন চললে সকল হলই বন্ধ হয়ে যাবে। ইতি ঘটবে বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পের। এই দুর্দিনেও নিয়মিত সিনেমা তৈরি করছে প্রডাকশন হাউস ‘জাজ মাল্টিমিডিয়া’। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলিমউল্লাহ খোকন বলেন, সিনেমা শিল্প বাঁচাতে হলে ভাল ছবির নির্মাণের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বছরে এক-দুটি ভাল ছবি দিয়ে পুরো ইন্ডাস্ট্রি চলবে না। ভাল সিনেমা তৈরির জন্য যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা সহজ করে দিতে হবে। অন্তত আগামী ৫ বছর ভারত-বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে সিনেমা নির্মাণের শর্ত শিথিল করতে হবে। সিনেমা শিল্পে লগ্নিকারকদের সরকারী সহযোগিতা বাড়াতে হবে। ইফতেখার উদ্দিন নওশাদের কথার সূত্র ধরে বলা যায়, বিদেশী সিনেমা আমদানি অবাধ হলে দেশী সিনেমা মার খাবে এই চিন্তা সঠিক নয়। ডিজিটাল যুগে তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহ এখন দুনিয়াজুড়ে। এত মিডিয়ার মধ্যে সিনেমা মাধ্যমে আলাদা করে দেশী সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই যুক্তিও ধোপে টিকে না। পশ্চিম বাংলায় হিন্দী সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই ভাল বাংলা সিনেমা তৈরি হচ্ছে। স্বাধীনতার আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানেও উর্দু-হিন্দী সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে অনেক ভাল বাংলা সিনেমা তৈরি হয়েছে এবং বাজার পেয়েছে। সিনেমা শিল্প বাঁচাতে এখনও চালু হল বাঁচানোর পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাওয়া হলগুলো চালু করতে হবে। হল হচ্ছে সিনেমা শিল্পের বাজার। এই বাজার না থাকলে পণ্য উৎপাদন করে বিক্রি হবে কোথায়। এখনও সময় ফুরিয়ে যায়নি। চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রযোজক, পরিবেশক, প্রদর্শক, পরিচালক, শিল্পী, কলাকুশলীসহ সকলকে এক টেবিলে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সমন্বিত সিদ্ধান্তই বাঁচাতে পারে মৃতপ্রায় আমাদের সিনেমা শিল্প। সঠিক সিদ্ধান্তে আবারও দর্শকের ভিড়ে মুখরিত হতে পারে আমাদের দেশের সিনেমা হলগুলো। লেখক : ডেপুটি এডিটর, জনকণ্ঠ
×