স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মুগদায় একটি বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে আগুনে স্ত্রী ও ছেলের পর এবার স্বামী সুধাংশু বৌদ্ধও (৩৬) না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছে। এখন শুধু এই পরিবারের সুধাংশুর শাশুড়ি শেফালী (৫৫) একজনই জীবিত আছে। তিনিও জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে।
শেখ হাসিনা বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন জানান, শনিবার ভোর ৫টার দিকে ইনস্টিটিউটের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, সুধাংশু শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। এখন ২৫ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে তার শাশুড়ি সেফালি রানি বাড়ৈ চিকিৎসাধীন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এর আগে সোমবার রাত ২টার দিকে সুধাংশু’র স্ত্রী প্রিয়াংকা রানী (৩২) ও রাত ১০টার দিকে তাদের ছেলে অরুপ বৌদ্ধ (৫) মারা যায়। শিশু অরুপের ৬৭ শতাংশ ও প্রিয়াংকার ৭২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সোমবার সকালে দক্ষিণ মুগদা মাতব্বরগলির ৩৭ নম্বর পাঁচতলা বাড়ির নিচতলায় গ্যাস লিকেজ থেকে আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়।
তাদেরকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। নিহতের প্রিয়াংকার বড় ভাই পলাশ বাড়ৈ জানান, তার বোন পরিবারসহ গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার ভেদেরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে থাকেন।
বোন জামাইয়ের পেট ব্যথার চিকিৎসার কারণে গত ২১ নবেম্বর পরিবার নিয়ে ঢাকায় আসেন। মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে চলছিল তার। তিনি জানান, পরেরদিন ২২ নবেম্বর সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রিয়াংকা পানি গরম করতে রান্না ঘরে যায়।
গ্যাসের চুলা চালু করে দিয়াশলাই জ্বালাতে রান্না ঘরে বিকট শব্দ হয়। এতে বাসায় থাকা একই পরিবারের ৪ জনই দগ্ধ হন। আজ (শনিবার) ভোরে বোন জামাই সুধাংশু হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) মারা যায়। এর আগে এ ঘটনায় আমার বোন ও ভাগ্নে মারা যায়।
মুগদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহিম খলিল জানান, গত ২২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দক্ষিণ মুগদা মাতব্বরগলির ৩৭ নম্বর পাঁচতলা বাড়ির নিচতলায় গ্যাস লিকেজ থেকে আগুনে বাসার অধিকাংশ জিনিসই পুড়ে গেছে। জানালার গ্লাসও ভেঙে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, চালু করে রাখা গ্যাসের চুলা থেকে রান্না ঘরে গ্যাস জমে ছিল।
দিয়াশলাই জ্বালাতেই সেই গ্যাস বিস্ফোরণ হয়েছে। পরে দগ্ধ সুধাংশু (৩৫), তার স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা রানী (৩২), ছেলে অরূপ (৫) ও শাশুড়ি শেফালীকে (৫৫) উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থা ওই পরিবারের তিনজনই মারা যায়।
এখন ওই পরিবারের মধ্যে জীবিত আছেন কেবল সুধাংশুর শাশুড়ি শেফালী। তার অবস্থাও ভালো নয়।