ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শরণখোলায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পে স্কুল ভবনের টাকা ফেরৎ যাচ্ছে

প্রকাশিত: ২২:০৫, ২৬ নভেম্বর ২০২১

শরণখোলায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পে স্কুল ভবনের টাকা ফেরৎ যাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটের শরণখোলায় একটি বিদ্যালয়ের ভবন নির্মানের প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দকৃত আড়াই কোটি টাকা ফেরৎ যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে উপজেলা সদরে শরণখোলা আইডিয়াল ইনিষ্টিটিউট নামের উদিয়মান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির চারতলা ভবন নির্মানের কাজ এখন অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। জানা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় এ জনপদের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য ২০১২ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম মামুনুজ্জামান শরণখোলা আইডিয়াল ইনিষ্টিটিউট নামের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়নসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয় শ্রেষ্ঠত্বের গৌরব অর্জন করে চলছে। একারনে প্রধানমন্ত্রী সদয় হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনটির নামে ৯০ শতক খাস জমি দীর্ঘমেয়াদী বন্দবস্ত দেন। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠনটিতে বর্তমানে প্লে থেকে দশম শ্রেনি পর্যন্ত পাঁচ শাতধিক শিক্ষার্থী লেখা-পড়া করছে। শ্রেনিকক্ষে শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলন না হওয়ায় বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তর থেকে প্রথমে একতলা ভবন নির্মানের জন্য ৮৫ লাখ টাকার দরপত্র সম্পন্ন করে ২০২০ সালের ৯ মার্চ মের্সাস বেতাগা ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পয়। এরপর বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডঃ আমিরুল আলম মিলন ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর ভবন নির্মানের ভিত্তিপ্রস্ত স্থাপন করেন। এরপর পুনঃরায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার জন্য দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ আসে। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভবন নির্মানের জায়গার একটি অংশে অবধৈ ভাবে তিনটি পরিবার দখল নিয়ে থাকায় কাজ শুরু করতে পারছে না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। উপজেলা প্রশাসন থেকে ওই পরিবার তিনটিকে অন্যত্র মুজিববর্ষের ঘর দিতে চাইলেও তারা একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে প্রতিষ্ঠানটির জমি ছাড়তে রাজি নয়। ফলে দেড় বছরের মধ্যেও ঠিকাদার কাজ শুরু করতে না পাড়ায় বরাদ্দকৃত টাকা ফেরৎ যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। শরণখোলা আইডিয়াল ইনিষ্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোঃ উচমান গনি জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তর থেকে অবিলম্বে ভবন নির্মানের জায়গা খালি কতরে না পরলে বরাদ্দকৃত সব টাকা ফেরৎ যাবে বলে জানানো হয়। এতে হতাশ হয়ে তিনি বলেন ভবনটি না হলে শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ায় ব্যপক সমস্যার সৃষ্টি হবে। এ ব্যপারে বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাফিজ আক্তার জানান, দেড় বছর হয়ে গেলেও ঠিকাদার জায়গা না পেয়ে কাজ শুরু করতে পারেনি। এরইমধ্যে কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এখন বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরৎ পাঠাতে হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাতুনে জান্নাত বলেন, এক বছর ধরে ওই ভূমিহীন তিনটি পরিবারকে উপজেলা প্রশাসন থেকে মুজিববর্ষের ঘর দেয়ার কথা বলা হলেও তারা যায়নি। কি কারনে যায়নি না তা বুঝে আসছে না। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আর্থিক সহযোগীতায় উপজেলা চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দিন শান্ত, রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আজমল হোসেন মুক্তার সহযোগীতায় পুনঃরায় তাদের পুনর্বাসনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও শরণখোলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, শরনখোলা আইডিয়াল ইনিষ্টিটিউটের পরিচালনা কমিটির সদস্য এম সাইফুল ইসলাম খোকন, বাবুল দাস, আমিনুল ইসলাম সাগর, শরনখোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইসমাইল হোসেন লিটন বলেন, উদিয়মান এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এখন শরণখোলাবাসীর আশার আলো জালিয়েছে। কিন্তু একটি কুচক্রীমহল প্রতিষ্ঠানটির ক্ষতি করতে নেপথ্যে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
×