ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরবরাহ বাড়ায় আরও কমেছে সবজির দাম

চালের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আটা-ময়দা

প্রকাশিত: ২০:০১, ২৬ নভেম্বর ২০২১

চালের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আটা-ময়দা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চালের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আরেক খাদ্যপণ্য আটা-ময়দা। দাম বেড়ে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি প্যাকেট আটা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। আর খোলা আটা কিনতে ভোক্তাকে ব্যয় করতে হচ্ছে ৩৬-৩৮ টাকা। প্রতিকেজি ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫৫ টাকায়। গত কয়েক বছরের মধ্যে এই দাম সর্বোচ্চ। টিসিবির তথ্যমতে, এক বছরে আটার দাম বেড়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ এবং ময়দার ক্ষেত্রে হার ২১ ভাগ। সরবরাহ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে শীতের শাক-সবজির দাম। সরু চালের দাম বাড়লেও স্থিতিশীল রয়েছে মোটা ও মাঝারি মানের চালের দাম। সামান্য কমেছে পেঁয়াজ ও ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। বেড়েছে মসুর ডালের দাম। এছাড়া ভোজ্যতেল ও চিনি বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। বাজারে ইলিশ ও দেশী মাছের সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি। গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট, রায়ের বাজার সিটি করপোরেশন মার্কেট ও মিরপুর-১ সিটি করপোরেশন থেকে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া সরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবি সূত্রেও নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে, প্যাকেট আটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খোলাটিও। ঢাকার বাজারগুলোতে খুচরা পর্যায়ে খোলা আটা তেমন নেই। এ কারণে নগরবাসীর মধ্যে যারা স্বল্প আয় করেন তাদেরও বাধ্য হয়ে প্যাকেট আটা কিনতে হয়। দেশের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যপণ্য গম বা আটা। এ কারণে প্রতিবছর সরকার চাল আমদানির পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ গম আমদানি করে থাকে। এ বছর সরকারী গুদামে গমের মজুদ ভাল থাকার পরও আটার দাম বাড়ছে। ধীরে ধীরে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে আটার দাম। বিশেষ করে ভোগ্যপণ্যের বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ মেঘনা, বসুন্ধরা, সিটি গ্রুপ ও টিকে গ্রুপসহ আর কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেট আটা বাজারজাতকরণ করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ছে আটা- ময়দার বাজার। রাজধানী ঢাকায় খোলা আটা তেমন একটা দেখা যায় না। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেট আটায় বাজার ভর্তি। ময়দার ক্ষেত্রে একই অবস্থা বিরাজ করছে। অথচ মোটা চালের চেয়ে এখন বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আটা। ময়দা বিক্রি হচ্ছে সরু চালে দামে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ের কারণে প্রতিনিয়ত মানুষের খাদ্যভাসের পরিবর্তন হচ্ছে। চিকিৎসকরা ভাতের পরিবর্তে রুটি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। এ কারণে গত কয়েক দশক ধরে দেশে আটার চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা মাথায় রেখে যোগান বাড়লেও শুধু সিন্ডিকেটের কারণে অস্থির হয়ে পড়ছে আটার বাজার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আটার দাম নিয়ন্ত্রণে জরুরি ভিত্তিতে সরকারের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। এদিকে, বাজারে প্রতিকেজি মোটা চাল মানভেদে ৪৪-৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আটা কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ৩৮-৪৫ টাকা। আটার সঙ্গে বাড়ছে ময়দার দাম। প্রতিকেজি প্যাকেট ময়দা সর্বোচ্চ দামে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। নিত্যপণ্যের বাজারে দাম কমে প্রতিকেজি পেঁয়াজ জাত ও মানভেদে ৪০-৬০, প্রতিহালী ফার্মের মুরগির ডিম ৩৩-৩৫, প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৪০-১৫০ টাকা এবং দাম বেড়ে মসুর ডাল ১০৫-১২০ টাকায়, সরু চাল মানভেদে ৫৮-৭০ বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া সরবরাহ বাড়ায় বাজারে কমতে শুরু করেছে শীতের সবজির দাম। কিছুদিন আগেও ৬০-৭০ টাকার নিচে কোনো সবজি না পাওয়া গেলেও বর্তমান বাজারে সে দাম কমতে শুরু করায় ভোক্তাদের স্বস্তি ফিরেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের বাজারে বড় সাইজের একটি ফুলকপি ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়। এর পাশাপাশি লাউ, শিম, শালগম, মূলা ও কাঁচা মরিচের দাম কমেছে।
×