ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকোর্টের রায়

মুক্তিযোদ্ধা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কোটার বিধান বাতিল

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ২৬ নভেম্বর ২০২১

মুক্তিযোদ্ধা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কোটার বিধান বাতিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কোটার বিধান বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। এদিকে দুর্নীতি মামলায় সাত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। অন্যদিকে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বরখাস্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপীল বিভাগ। বৃহস্পতিবার আপীল বিভাগ ও হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশগুলো প্রদান করেছেন। প্রত্যেক উপজেলায় গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়নি এমন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটভুক্তির জন্য বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় ভাতাভোগী সাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যার ১০ শতাংশের বেশি তালিকাভুক্ত করা যাবে না-এমন বিধান বেআইনী ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেছেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু। তৌফিক ইনাম টিপু বলেন, প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা শুধু বেআইনীই নয় অসাংবিধানিকও। কারণ প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১০ শতাংশের কম বা বেশিও হতে পারে। একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাকেও তালিকার বাইরে রাখা যেমন বেআইনী, একইভাবে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা নয় এমন একজনকেও তালিকাভুক্ত করা বেআইনী। ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল জাতীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রে বলা হয় যে, প্রত্যেক উপজেলায় গেজেটে অন্তভ্র্ক্তু হয়নি এমন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটভুক্তির জন্য বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় ভাতাভোগী সাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যার ১০ শতাংশের বেশি তালিকাভুক্ত করা যাবে না। এ্যাডভোকেট তৌফিক ইনাম টিপু বলেন, ২০১৭ সালে উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ‘ক’ তালিকা প্রস্তুত করা হয় এবং ওই তালিকাতে রিট আবেদনকারীরা তালিকাভুক্ত হন। কিন্তু ১০ শতাংশ কোটার সিদ্ধান্তটির ফলে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার অনেকেই বাদ পড়ে যান। সে কারণে ওই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উপজেলার ‘ক’ তালিকাভুক্ত প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধারা হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন। সাত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার আগাম জামিন হাইকোর্টে ॥ দুর্নীতি মামলায় সাত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। জামিন পাওয়া সাত কর্মকর্তা হলেন- ড. স্বপন কুমার রায়, ড. শিরীন আক্তার জাহান, ড. মোঃ শাহরিয়ার বাশার, ড. মালা খান, ড. মোহাম্মদ নাজিম জামান, ড. তুষার উদ্দিন ও ড. দীপা ইসলাম। বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। দুদকের আইনজীবী খোরশেদ আলম জনকণ্ঠকে বলেন , জামিনপ্রাপ্তরা আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশের বাইরে যেতে পারবে না। অন্যদিকে আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, বীমা প্রিমিয়ামের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন, এক্সিম ব্যাংক, বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের ৩৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি মামলার চাজশীট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। বগুড়ার পৌর মেয়র জাহাঙ্গীরের পদ আপীলে বহাল ॥ বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বরখাস্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপীল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে পৌর মেয়র মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোঃ রুহুল কুদ্দুস কাজল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরী। এর আগে ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পৌর-১ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন সই করা এক প্রজ্ঞাপনে পৌর মেয়র জাহাঙ্গীরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
×