ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রূপগঞ্জে নির্মাণ শ্রমিক সাব্বিরকে একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের জন্য হত্যা করে ঘাতকরা

প্রকাশিত: ১৯:০১, ২৫ নভেম্বর ২০২১

রূপগঞ্জে নির্মাণ শ্রমিক সাব্বিরকে একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের জন্য হত্যা করে ঘাতকরা

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল ১৩ নম্বর সেক্টরে নির্মানাধীন পুলিশ টাওয়ারের ৭ম তলায় নির্মাণ শ্রমিক মোঃ সাব্বির আহমেদ (১৭)কে একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের জন্য হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত তিন আসামীকে পূর্বাচল ১৩ নম্বর সেক্টর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১১। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাবের কাছে এ হত্যাকান্ডের বর্ণনা দেয়। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে র‍্যাব-১১’র উপ-পরিচালক স্কোয়াড্রন লীডার একেএম মুনিরুল আলম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানান। বুধবার তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকরা হলো- মোঃ আশরাফুল ইসলাম, আনিসুর রহমান ও মিজানুর রহমান। নিহত মোঃ সাব্বির আহমেদ কুড়িগ্রামের কচাকাটা থানার অষ্টআশিচর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাব জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত তিন আসামী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মোঃ সাব্বির আহমেদকে হত্যা করে। গ্রেফতারকৃত তিন হত্যাকারী ও নিহত মোঃ সাব্বির আহমেদসহ কুড়িগ্রাম জেলার ১৫ জনের একটি দল দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে আসছিল। চলতি বছরের ২০ নবেম্বর পুলিশ টাওয়ারের নির্মাণাধীন ভবনে তাদের কাজ শেষ হয় এবং পরদিন ২১ নবেম্বর মজুরী গ্রহণ পূর্বক তাদের যার যার মত করে বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। নিহত সাব্বির আহমেদ একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ব্যবহার করত। গ্রেফতারকৃত আসামীদের দেয়া ভাষ্যমতে উক্ত মোবাইল ফোনটি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে গত ২০ নবেম্বর তাদের নির্মাণ কাজ শেষে সন্ধ্যার পর আশরাফুল, আনিস ও মিজানসহ তিনজনে মিলে শ্রমিক সাব্বিরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরে পারস্পারিক যোগসাজসে তারা হত্যায় ব্যবহৃত লোহার ছোট রড ও জিআই তার জোগাড় করে ফাঁস বানায়। এরপর রাত ৮ ঘটিকার দিকে অভিযুক্ত আশরাফুল শ্রমিক সাব্বিরকে মোবাইল ফোনে কল করে ডেকে ৭ম তলায় নিয়ে যায় এবং অপর দুই হত্যাকারী আনিস ও মিজান তাদের পিছুপিছু ৭ম তলায় যায়। এরপর কথোপকথনের এক পর্যায়ে অতর্কিত ভাবে তারা সাব্বিরকে হামলা করে এবং একজন সাব্বিরের গলায় থাকা গাঁমছা দিয়ে মুখ, নাক ও চোখ বেঁধে ফেলে, একজন পরিধেয় শার্ট দিয়ে হাত বেঁধে ফেলে এবং অপর জন লোহার রড ও জিআই তার দিয়ে বানানো ফাঁস গলায় পেঁছিয়ে শ^াসরোধ করে সাব্বিরের মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তারা লাশটি টেনে একই তলার অন্য একটি কক্ষে নিয়ে প্লেইন শীট দিয়ে ঢেঁকে রাখে। ঘটনার পরের দিন সাব্বিরকে তার সহকর্মী শ্রমিকরা দেখতে না পেয়ে সবাই মিলে খোঁজাখোজি শুরু করে এবং দুপুর আনুমানিক দেড়টায় উক্ত নির্মাণাধীন ভবনের ৭ম তলায় সাব্বিরের লাশ খুঁজে পায়। এ ঘঁনার পরদিন ২২ নবেম্বর একই স্থানে নির্মাণ শ্রমিক ও নিহতের মামা মোঃ মহেমুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উল্লে¬খিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহসহ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন ও ঘটনায় জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র‍্যাব-১১’র একটি গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত শুরু করেন। পরে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
×