ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাঈমা আক্তার

টাকা ফেরতের পথ কি?

প্রকাশিত: ২১:২৪, ২৫ নভেম্বর ২০২১

টাকা ফেরতের পথ কি?

সম্প্রতি ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর অনলাইন কেনাকাটায় আস্থা সঙ্কটে ভুগতে শুরু“করেছেন সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি ইভ্যালিসহ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠে। বিশেষ অফারের নামে পণ্যের জন্য আগাম অর্থ নিয়েও নির্ধারিত সময় পেরুনোর পরও পণ্য ডেলিভারি করেনি বেশ কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। গ্রাহককে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা পাচার ও অন্যত্র স্থানান্তর করারও অভিযোগ রয়েছে এ খাতের অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রযুক্তির বিকাশের কারণে ই-কমার্সের মাধ্যমে কেনাকাটার জনপ্রিয়তা বিশ্বজুড়েই দিন দিন বাড়ছে। করোনাকালীন চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ থাকায় সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকায় এক ধরনের আমূল পরিবর্তন এসেছে। এ সময়টাতে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই ই-কমার্সমুখী হয়েছে। অনলাইন নির্ভরতা বাড়ায় বেশ কিছু ভাল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। ই-কমার্স এখন ৩০ হাজার কোটি টাকার ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। হাজার হাজার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও ফেসবুক ভিত্তিক ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লাখ লাখ মানুষের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনলাইনে পণ্যের অর্ডার ও ডেলিভারি সিস্টেমে অনেক প্রচলিত-অপ্রচলিত ও নিত্যনতুন পণ্যের বিপণন বেড়ে চলেছে, তখন এসব প্রতারক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কারণে ই-কমার্স মাধ্যমের প্রতি সাধারণ গ্রাহকদের আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে। ইতোমধ্যে এসব প্রতারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান দেখা গেলেও লোপাট হওয়া অর্থ ফেরত না পাওয়ায় প্রতারিত হাজার হাজার মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখালেও এর সেবার মান ও নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় বিধিব্যবস্থা না থাকায় প্রতারণা থামছে না। ইন্টারনেটের গতি এবং সেবার মান নিয়ে দেশের সব ইন্টারনেট গ্রাহকই সংশ্লিষ্ট অপারেটর কোম্পানির দ্বারা প্রতারিত হয়ে আসছে। চুক্তি অনুসারে ইন্টারনেটের গতি ও সেবার মান নিশ্চিত করার পাশাপাশি ই-কমার্স ও অনলাইন পরিসেবায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ই-কমার্সের নামে প্রতারকদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা এবং ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন ও নজরদারির কার্যকর উদ্যোগও নিতে হবে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের অনলাইন বিজনেসকে সমৃদ্ধ করতে হবে। ই-কমার্সের ওপর মানুষের আস্থা সৃষ্টি করতে হবে। যে সকল অসাধু ব্যবসায়ী ব্যবসার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ই-কমার্সকে প্রতারণামুক্ত রাখতে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। কারণ করোনার এই ক্রান্তিকালে চাকরিহারা মানুষ ও তরুণ প্রজন্মের জন্য ই-কমার্স হতে পারে সম্ভাবনাময় একটি বড় কর্মসংস্থান। যার মাধ্যম নিত্যনতুন সৃষ্টিশীল তরুণ উদ্যোক্তা উদ্ভব হবে। বিশ্বায়নের এই যুগে তারাই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বহুদূর। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা থেকে
×