ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ছাদে ফুলের বাগান

প্রকাশিত: ২১:৪০, ২২ নভেম্বর ২০২১

ছাদে ফুলের বাগান

বিশ্বজুড়ে চলছে প্রকৃতি বাঁচানোর আলোচনা-পর্যালোচনা। প্রযুক্তির দুরন্ত অভিগামিতায় প্রকৃতি নির্মল সম্ভারকে হারিয়ে ফেলছে। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে মানব সমাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। শিল্প বিকাশের পরম সন্ধিক্ষণে বিপরীত প্রতিক্রিয়ায় ধরিত্রী তার স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য থেকে ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছে। প্রকৃতিকে তার স্বাভাবিক যাত্রায় এগিয়ে নিতে বিশ্বের বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলো উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় প্রযুক্তির ক্ষতিকারক উপাদানের অবসানের উপরও জোর দিয়ে যাচ্ছে। আবার বলা হচ্ছে শুধু রাষ্ট্র নয় সব মানুষের সমান অংশীদারিত্বে নৈঃসর্গ তার যথার্থ অবয়বে ফিরে আসবে। গ্রীন হাউস প্রতিক্রিয়ায় কার্বন নিঃসরণ কমাতে প্রত্যেকের এগিয়ে আসা বাঞ্ছনীয়। আধুনিক শিল্পোন্নত যুগে বহুতল ভবনের অনবদ্য নির্মাণ যেমন তার শোভা বর্ধন করে-ৈ পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতিক্রিয়াও কম নয়। ফলে সচেতন মানুষরা নিজের গৃহের আঙিনায় কিংবা ছাদের উন্মুক্ত আলয়ে প্রকৃতির সহায়ক কিছু ফলমূলও ফুলের সৌরভ উপহার দিয়ে যাচ্ছেন। নিজের তৈরি চমৎকার ভবনটি সুস্থ ও নির্মল আবহ ভরিয়ে তুলতে ছাদ বাগান এখন নিয়মিত জীবনের অনবদ্য অনুষঙ্গ। ধানমন্ডির কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা সুমনা ও সাদউল্লাহ হাজরা বিরু দম্পতি নিজেদের অনিন্দ্য সুন্দর চমৎকার গৃহটি সাজিয়েছেন পুষ্পের সুশোভিত গন্ধের অনাবিল সম্ভারে। শুধু যে আপন আনন্দে ফুলের গন্ধে বিভোর হওয়া নয় বরং চারপাশের পরিবেশ শুদ্ধতাও সচেতনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নিজের হাতে ফুলের চারা রোপণ থেকে সার্বিক পরিচর্যা সুগৃহিণী সুমনাই করছেন। আর স্বামীও পাশে থাকেন ফুলের আনন্দ ও সৌন্দর্র্যের যত্ন আর পরিসেবা দিতে। ছাদবাগানের নির্মল ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে প্রাণভরে শ্বাস নিতে পারার পরিতৃিপ্ত আলাদা, শিল্প বিকাশের যান্ত্রিকতায় দমবন্ধ করার অসহনীয় পরিবেশ থেকে এক প্রকার মুক্তিই বলা যায়। সবাই যদি আমরা নিজের ছোট্ট বসতবাড়িটি সবুজের সমারোহে মুগ্ধতার আবেশ তৈরি করি সেখানে নিজেদের যত্ন আত্তিও হয়ে যায়। পরিবেশ দূষণের চরম বিপন্নতায় যখন হাঁপিয়ে যাওয়ার উপক্রম সেখানে ছোট্ট গৃহকোণটি যদি অন্যরকম আবেশে শরীর ও মনকে প্রফুল্ল করে দেয় সেটাও এমন বিপর্যয়ে অপরূপ মাধুর্য। দেশী-বিদেশী ফুলের সম্ভারে সাজানো গোছানো সুমনার নিজের হাতে তৈরি করা বাগানটি যেন তার অনন্য সুখ ও শান্তি। আপন আনন্দে মনের মাধুরি মিশিয়ে তিল তিল করে গড়ে ওঠা বাগানটি তার বিনোদনেরও ভিন্ন মাত্রা। গোলাপ, দেশী ও চাইনিজ বেলি, গাঁদা, হাসনা হেনার অকৃত্রিম সৌরভের অনাবিল বিমুগ্ধতা। গোলাপেরও হরেক রকম বৈশিষ্ট্যে কাঠ, সাদা, গোলাপীর যে বাহারি রঙের সারি সার গাছ সেটাও মোহনীয় আবেগাচ্ছন্ন অনুভব। রূপ, রস, রং আর গন্ধের অফুরান প্রাচুর্যের যে সমারোহ সেটা শরীর মনকে প্রফুল্ল রাখতে নির্ণায়ক শক্তি। যেখানে প্রকৃতিকে বিভিন্ন অপকর্মে হুমকির মুখে দাঁড় করানো হচ্ছে সেখানে তাকে সুরক্ষা দিতে এমন দর্শনীয় ছাদ বাগান সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়াটাও জরুরী। কারণ নৈঃসর্গের স্বাভাবিক দানের ব্যত্যয় ঘটালে সে প্রতিশোধ নিতে ছাড়ে না। তার কোলের সন্তানরা তেমন বিপর্যয় থেকে তাকে বাঁচিয়ে দিক সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। যাপিত জীবন প্রতিবেদক
×