ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয়ী হিসেবে “ওপেনরিফ্যাক্টরি” পেল ১ লক্ষ ইউএস ডলারের অনুদান

শেষ হল স্টার্টআপদের নিয়ে বৃহৎ আয়োজন বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট(বিগ) ২০২১

প্রকাশিত: ১৮:৩৫, ৩০ অক্টোবর ২০২১

শেষ হল স্টার্টআপদের নিয়ে বৃহৎ আয়োজন বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট(বিগ) ২০২১

অনলাইন রিপোর্টার ॥ তরুণ উদ্যোক্তা অর্থাৎ স্টার্টআপদের অনুপ্রাণিত করতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীনে “উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প (iDEA)” আয়োজন করে “বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ) ২০২১”। এই আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য হল তরুণ উদ্যোক্তা অর্থাৎ স্টার্টআপদের উদ্ভাবনী ধারণাকে উৎসাহিত করে দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। আন্তর্জাতিক এই আয়োজনে ১৪২টি দেশে ক্যাম্পেইন শেষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫৭টি দেশ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে ৭ হাজারের অধিক স্টার্টআপ ও উদ্ভাবক এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করে। মুজিববর্ষে স্টার্টআপদের জন্য আইসিটি বিভাগের সবচেয়ে বড় উপহার হিসেবে সেরাদের সেরা একটি স্টার্টআপ “ওপেনরিফ্যাক্টরি” ওয়ান বিগ উইনার ২০২১ হিসেবে পেল ১ লক্ষ ইউএস ডলার অনুদান। এছাড়া, দেশিয় স্টার্টআপদের নিয়ে অনুষ্ঠিত রিয়েলিটি শো এর থেকে নির্বাচিত ২৬ টি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সেরা ১০ টি স্টার্টআপ অর্থাৎ দেশি-বিদেশি নির্বাচিত মোট ৩৬ টি স্টার্টআপের প্রত্যেকেই পাচ্ছে ১০ লক্ষ টাকা করে মোট ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার অনুদান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে এই বিশেষ আয়োজনের গ্র্যান্ড ফিনালে রাজধানী ঢাকার আগারগাঁও এ অবস্থিত বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মাল্টিপারপাস অডিটরিয়ামে শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১ সকালে অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় তিন ঘণ্টার জমকালো একটি অ্যাওয়ার্ড বিতরনী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় “বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ) ২০২১” এর এবারের আসর। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এফসিএ, এমপি এবং সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ আব্দুল মান্নান, পিএএ । অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক ও যু্গ্মসচিব মো: আব্দুর রাকিব। অনলাইনে যুক্ত হয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, তরুণ উদ্ভাবকদের সহায়তায় চলতি বাজেটে সরকার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। আজকের তরুণ উদ্ভাবকরাই দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, অর্থ কোনো সমস্যা নয়। সমস্যাকে সম্ভবনা হিসেবে রূাপান্তরিত করেই আমরা সঠিক দিক নির্দেশনায় এগিয়ে যাবো। অর্থমন্ত্রী বলেন যে, বাংলাদেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম এর যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২৫০০ টির বেশি স্টার্টআপ কাজ করছে এবং আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। দেশে বর্তমানে ৪০ টিরও বেশি এক্সেলেরেটর এবং ইনকিউবেটর প্রোগ্রাম তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান দেশে প্রচুর বিনিয়োগ নিয়ে এসেছে যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।” তিনি আরো বলেন, স্টার্টআপদের মাধ্যমে ১৫ লক্ষের বেশি মানুষের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান এর সুযোগ তৈরি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই তারুণ্যের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যেই একটি উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে আবির্ভূত হবে বলে তিনি আশাব্যাক্ত করেন। সবশেষে তিনি বলেন, “বিগ ২০২১” আয়োজন হল এমন একটি উদ্যোগ যা স্টার্টআপ সংস্কৃতি গঠন ও উন্নয়নের বর্তমান সরকারের অঙ্গীকারের একটি সুস্পষ্ট প্রতিফলন। সভাপতির বক্তব্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক বলেন, ইনোভেশন ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার মাধ্যমে উদ্ভাবনী জাতি গঠন করার লক্ষ্যে অল্পদিনের মধ্যেই একটি স্টার্টআপ পলিসি প্রণয়ন করা হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আইসিটি খাতের বিভিন্ন নীতি- সহায়তার ফলে বর্তমানে আইসিটি খাতের রপ্তানি আয় ১বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে এ খাতে রপ্তানি আয় ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা এবং ৩০ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা কাজ করছি। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অন্তর্ভূক্তমূলক উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ৩২ অবস্থানে। এভাবেই ৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। এজন্য উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ অনুযায়ী নিজস্ব প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জিত হবে। ইতোমধ্যেই দেশে ২৫০০ উদ্ভাবক তৈরি হয়েছে। তাদের ক্ষমতায়নের জন্য আইসিটি বিভাগ থেকে সার্বিক সহায়তা করা হবে। সবশেষে, প্রতি বছরই “বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ) ২০২১” প্রতিযোগিতা হবে বলে ঘোষণা দেন পলক।
×