ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আজ উইন্ডিজ

প্রকাশিত: ০০:১২, ২৯ অক্টোবর ২০২১

বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আজ উইন্ডিজ

মোঃ মামুন রশীদ ॥ শারজাতে খেলার অভিজ্ঞতা মাত্র ৪ দিন আগেই হয়েছে। এখানে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে এবার টি২০ বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভ পর্ব শুরু করে বাংলাদেশ দল। সেখানেই আজ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় মাঠে গড়াবে। একমাত্র দল হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুইবার টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছে এবং সর্বশেষ আসরের চ্যাম্পিয়ন তারা। কিন্তু চলতি আসরে টানা দুই হারে বিপর্যস্ত ক্যারিবীয় দল এবার ঘুরে দাঁড়াতে উন্মুখ। বাংলাদেশকে হারিয়েই নিজেদের ফিরে পেতে চায় তারা। উইন্ডিজের মতো বাংলাদেশেরও তাই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে জয়ের বিকল্প নেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের কিছু ভুলে হেরে হতাশাগ্রস্ত বাংলাদেশ প্রথমবার টি২০ ক্রিকেটের সেরা দল ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়ে বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়ে বিপর্যস্ত। সেই পরিস্থিতি পাল্টাতে মরিয়া বাংলাদেশ ফিরে আনতে চায় ইতিহাস। ২০০৭ সালে হওয়া প্রথম টি২০ বিশ্বকাপ আসরেই উইন্ডিজকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপেও হেরেছে ক্যারিবীয়রা। এ দুই ইতিহাসকে পুনরুজ্জীবিত করে আজ জিততে চায় বাংলাদেশ। চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশের অভিযানটা প্রায় একই রকমের। বাংলাদেশ দল যদিও প্রাথমিক রাউন্ড পেরিয়ে এসেছে সুপার টুয়েলভে। কিন্তু বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সরাসরিই এই পর্বে আছে উইন্ডিজরা। কিন্তু দু’দলই আইসিসির অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ দুটিতে হেরেছে। বাংলাদেশ দল প্রস্তুতি ম্যাচে হারে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের কাছে। আর ক্যারিবীয়রা হারে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কাছে। এরপর সুপার টুয়েলভ পর্বে গত আসরের ফাইনালে যে প্রতিপক্ষ সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৫৫ রানে গুটিয়ে গিয়ে ৬ উইকেটে পরাস্ত হয়। দ্বিতীয় ম্যাচেও নিজেদের ফিরে পায়নি তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে বেশ বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মধ্যেই আছে তারা। অথচ টি২০ ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম দুই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল ও কাইরন পোলার্ড এবং টি২০ ইতিহাসের অন্যতম সেরা দুই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো ও আন্দ্রে রাসেল আছেন এই দলে। এছাড়াও মারদাঙ্গা ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃত এভিন লুইস ও নিকোলাস পুরান ছাড়াও আছেন শিমরন হেটমায়ারের মতো ভাল ব্যাটার। কিন্তু তারা কেউ ফর্মে নেই। এই ব্যাটিং লাইনআপের মধ্যে যদি দুয়েকজন আজ জ্বলে ওঠেন তা বাংলাদেশী বোলারদের জন্য দুর্গতি বয়ে আনবে। ক্যারিবীয় বোলিং লাইন অতটা আহামরি নয়, তবে অভিজ্ঞ পেসার জেসন হোল্ডার শেষ মুহূর্তে দলে যোগ হওয়াতে এই বিভাগেও এসেছে ভারসাম্য। ওবেড ম্যাককয়ের ইনজুরিতে রিজার্ভ থেকে দলে এসেছেন হোল্ডার। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের মতোই ফর্মহীন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। যারা রান পেয়েছেন তাদের মধ্যে ধারাবাহিকতা যেমন নেই, তেমনি ঘাটতি রয়েছে দ্রæতগতিতে রান তোলার ক্ষেত্রে। এখন পর্যন্ত ঝড়ো ইনিংস বলতে প্রথম রাউন্ডে দুর্বলতর পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে মাহমুদুল্লাহর ২৭ বলে ফিফটি ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে ৩৭ বলে ৫৭ রানের ইনিংস দুটি। এছাড়া অধিকাংশ ইনিংসই ধীরগতির। ওপেনার নাইম শেখ ৪ ম্যাচে দুই অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন যার স্ট্রাইক রেট ঝড়ো নয়। যদিও দলের যে ব্যাটিং পারফর্মেন্স সেদিক বিবেচনায় এ বিশ্বকাপে তার দুটি ইনিংসই সবচেয়ে কার্যকর ছিল। মাহমুদুল্লাহ একটি কার্যকর ফিফটি পেয়েছেন, নিয়মিত কিছু রানও করেছেন। তবে সেসব তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। বোলিংয়ে অন্যতম ভরসা মুস্তাফিজুর রহমানের এখন পর্যন্ত ধারালো পারফর্মেন্স দেখা যায়নি। স্পিনাররা সেভাবে দাপট দেখাতে পারেননি গত দুই ম্যাচে। আজ কিছু পরিবর্তন অবশ্য আসতে পারে বাংলাদেশের একাদশে। সেটি বোলিংয়েও এবং ব্যাটিং লাইনেও। শারজাতে আগের ম্যাচটি খেলার কারণে অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর পাশাপাশি ইতিহাস থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন মাহমুদুল্লাহরা। বিশ্বকাপে দুইবার সাক্ষাত হয়েছে। ২০০৭ সালের প্রথম বিশ্বকাপে প্রথম দেখাতেই উইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারিয়ে হৈচৈ ফেলে দেয় বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত টি২০ বিশ্বকাপে সেটিই টেস্ট খেলুড়ে কোন দলের (আফগানিস্তান হেরেছে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার আগে) বিপক্ষে একমাত্র জয় বাংলাদেশের। তবে ২০১৪ সালে নিজেদের মাঠে হওয়া বিশ্বকাপে ক্যারিবীয়দের কাছে ৭৩ রানের বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। তবে এখন অনুপ্রেরণা হয়ে আসছে সেই জোহানেসবার্গের স্মৃতিটাই। তাছাড়া শারজাতে ৪০ ওয়ানডে খেললেও এখন পর্যন্ত কোন টি২০ ম্যাচ খেলেনি ক্যারিবীয়রা। দু’দলের মধ্যে টি২০ লড়াইয়ে বেশ হাড্ডাহাড্ডি পরিসংখ্যান রয়েছে। ১২ সাক্ষাতে বাংলাদেশ ৫টি আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬টি জয় পেয়েছে। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। এবার বাংলাদেশের সমতা আনার পালা এবং বিশ্বকাপ মঞ্চে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ।
×