ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে উচ্চকিত হলো সাম্যের বাণী

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ২৯ অক্টোবর ২০২১

ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে উচ্চকিত হলো সাম্যের বাণী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাম্প্রদায়িকতার ভয়াল ছোবলে যখন আক্রান্ত সমাজ ও রাষ্ট্র তখন সহজাতভাবেই জেগে ওঠে সংস্কৃতি। সেই জাগরিত সংস্কৃতির স্রোতধারায় উচ্চারিত হলো সম্প্রীতির বারতা। গাওয়া হলো মানবতা ও মনুষ্যত্বের জয়গান। ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে উচ্চকিত হলো সাম্যের বাণী। ধর্মের নামে মানুষে মানুষে বিভাজনের বিপরীতে শোনা গেল মানবিক চেতনার প্রতিধ্বনি। প্রকাশিত হলো অসুরের বিরুদ্ধে সুরাশ্রিত অভয় বাণী। দ্রোহ, প্রেম ও সাম্যের কবি কাজী নজরুলের সৃষ্টির নির্যাসে সজ্জিত ছিল সে আয়োজন। নাচ-গান, কবিতা ও কথনকে সঙ্গী করে ‘দাও শৌর্য, দাও ধৈর্য’ শীর্ষক সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ নজরুল সঙ্গীত সংস্থা। বৃহস্পতিবার রাতে সংগঠনের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল সম্প্রচারিত হয় প্রতিবাদী এই সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। অস্থির সময়ে ধর্মের ভেদরেখা পেরিয়ে শান্তির সমাজ বিনির্মাণের প্রত্যাশায় ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডাঃ সারওয়ার আলীর কথনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মাননাপ্রাপ্তির প্রেক্ষিতে কাজী নজরুল ইসলাম সওগাত শীর্ষক যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন সেটি থেকে পাঠ করেন বাচিকশিল্পী শিমুল মুস্তাফা। এরপর নজরুলের বাণী ও সুরকে সঙ্গী করে সঙ্গীত পরিবেশন করেন খায়রুল আনাম শাকিল। ধর্মীয় উন্মাদনায় পথভ্রষ্টকে সমঅধিকারের বার্তা দিয়ে গেয়ে শোনান- তোমার বাণীরে করিনি গ্রহণ ক্ষমা করো হজরত/ভুলিয়া গিয়াছি তব আদর্শ, তোমার দেখানো পথ...। সৌহার্দ্যরে প্রকাশে মাহমুদুল হাসান পরিবেশন করেন- মোরা একই বৃন্তে দুটি কসুমু হিন্দু-মুসলমান/মুসলিম তার নয়নমণি, হিন্দু তাহার প্রাণ...। সনজিদা বীথিকা পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিল ‘এসেছি তব দ্বারে ভক্তি-শূন্য প্রাণে/করুণাময় প্রভু কর হে পূর্ণ দানে’। করিম হাসান খান পরিবেশন করেন ‘তরুণ প্রেমিক প্রণয় বেদন’। কল্পনা আনাম শুনিয়েছেন- ভাইয়ের দোরে ভাই কেঁদে যায় টেনে নে না তোর কোলে/মুছিয়ে দে তার নয়নেরই জল সে যে আপন মায়ের ছেলে...। নাহিয়ান দুরদানা শুচির কণ্ঠে গীত হয়- আমার হাতে কালি মুখে কালি/আমার কালিমাখা মুখ দেখে মা/পাড়ার লোকে হাসে খালি...। এরপর নজরুল সঙ্গীতের আশ্রয়ে নৃত্য পরিবেশন করেন সামিনা হোসাইন প্রেমা। নৃত্যের নান্দনিকতা শেষে ‘হিন্দু মুসলমান দুটি ভাই’ শিরোনামের গান গেয়েছেন বিজন মিস্ত্রি। অর্পিতা দে শুনিয়েছেন ‘যার মেয়ে ঘরে ফিরল না আজ’ শীর্ষক সঙ্গীত। সুমন মজুমদারের কণ্ঠে শ্রোতারা শুনেছে ‘জাগো অরুণ ভৈরব জাগো হে শিবÑধ্যানী’। অলকানন্দা সুবৃতার কণ্ঠে গীত হয় ‘মাগো চিন্ময়ী রূপ ধরে’। আজামু শফিউল্লাহ প্রত্যয় শুনিয়েছেন ‘আয় মরুর পরের হাওয়া নিয়ে যারে মদীনায়’। যারিন তাসনিম রাফা গেয়েছেন ‘ওগো অন্তর্যামী’। প্রকৃত ধার্মিকের সন্ধানে রেজাউল করিমের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় ‘আল্লাহতে যার পূর্ণ ইমান কোথা সে মুসলমান’। সুপ্তিকা মণ্ডল পরিবেশন করেন ‘নিপীড়িতা পৃথিবী’। দেবাশীষ ব্যাপারী গেয়েছেন ‘গঙ্গা সিন্ধু নর্মদা’। স্বর্ণা নাগ শুনিয়েছেন ‘তুমি যতই দহনা’। পরিতোষ মণ্ডল পরিবেশন করেন ‘ওমা দনুজ-দলনী মহাশক্তি’। তানভীর আহমেদ পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিল ‘স্বদেশ আমার জানি না তোমার’। সব শেষে সুমনা বিশ্বাস পাঠ করেন ‘সাম্যবাদী’ শিরোনামের কবিতা।
×