ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শীতে করোনা যেন ফের মাথাচাড়া দিতে না পারে সতর্ক থাকুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:১২, ২৯ অক্টোবর ২০২১

শীতে করোনা যেন ফের মাথাচাড়া দিতে না পারে সতর্ক থাকুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ শীতের আগমনে দেশে আবারও করোনাভাইরাস যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার এবং মাস্ক ব্যবহারের আহŸান পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যখনই আবার শীতকাল আসছে, পৃথিবীর সব দেশেই কিন্তু করোনাভাইরাস দেখা দিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড বা ইউরোপের দেশগুলোতে এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাজেই বাংলাদেশের সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আমি অনুরোধ করছি।’ বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে শীত মৌসুমের আগে তার ত্রাণ গুদামের জন্য বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক (বিএবি) থেকে দুস্থদের জন্য ২৬ লাখ ৪৫ হাজার কম্বল গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এমন অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ৩৭টি বেসরকারী ব্যাংকের কাছ থেকে এই কম্বল গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। মুখ্য সচিব প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের জন্য ১০ লাখ টাকার চেকও গ্রহণ করেন। বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বিভিন্ন ব্যাংক চেয়ারম্যানদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শীতকাল আসলেই একটু ঠাণ্ডা লাগে, সর্দি-কাশি হয়। আর এটা হলেই এই করোনাভাইরাসটা আমাদের সাইনাসে গিয়ে বাসা বানাতে পারে। কাজেই সেইদিকে সবাইকে একটু সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে মাস্ক পড়তে হবে এবং খাদ্য তালিকায় ‘ভিটামিন সি’ যাতে একটু বেশি থাকে এবং যাতে ঠাণ্ডা না লাগে সেদিকে নজর দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় মৌসুমি ফলমূল, শাকসবজি এবং তরিতরকারি বেশি করে খাবার পরামর্শ দিয়ে বলেন, টিকা দেয়ার পরে কারও করোনা হলে তার হয়ত ক্ষতির পরিমাণটা বেশি হবে না, তবে তার থেকে ছড়াতে পারে, তাই মাস্কটা ব্যবহার করতেই হবে। তিনি এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সবাইকে সতর্ক করার বিষয়ে প্রচার-প্রচারণাটা দরকার। একটু সতর্ক হলে এই করোনাভাইরাস আর বাংলাদেশের মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। সরকার প্রধান শেখ হাসিনা এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সমগ্র দেশের জনগণের উদ্দেশে বলেন, করোনাভাইরাসকে আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। টিকা সংগ্রহ করে সারাদেশে টিকাদান অব্যাহত রয়েছে এবং আজকেও (বৃহস্পতিবার) সারাদেশে ৮০ লাখ টিকাদানের কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, ছাত্র সমাজ এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার প্রস্তুতি তার সরকারের রয়েছে। কেউ বাদ যাবে না। নীতিমালা অনুযায়ী যারা টিকা পাবার যোগ্য বাংলাদেশের সব মানুষই টিকা পাবে এবং আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় নাগাদ আমরা সকল মানুষকেই টিকা দিতে সক্ষম হবো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে আসলেও তার সরকার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশে কোনকিছু যাতে স্থবির না হয় এবং সচল থাকে। সেদিক থেকে আমি মনে করি বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে। মানুষের দুঃসময়ে সবসময় বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন ব্যাংক সব সময় এগিয়ে আসেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাদের এবারেও শীতার্ত জনগণের সহায়তায় এগিয়ে আসায় ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই বড় কথা। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন কাজেই এই দেশ উন্নত সমৃদ্ধ হোক, দারিদ্র্য মুক্ত হোক এবং তৃণমূলের মানুষটির পর্যন্ত যাতে ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন, যত বেশি মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে তত বেশি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। নতুন বাজার সৃষ্টি হবে এবং আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াবো এবং বিশ্ব দরবারে আমাদের একটা অবস্থান আমরা করে নেব। কারণ আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি, কাজেই সব সময় মাথা উঁচু করেই আমরা চলব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পরেই বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারী খাতে উন্মুক্ত করে দেন, যাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী খাতও আরও শক্তিশালী হয় এবং তারা দেশের মানুষের সেবা করতে পারে এবং দেশের মানুষের আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। তার এই পদক্ষেপ দেশের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে যথেষ্ট ভ‚মিকা রেখে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
×